রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের অবস্থান উৎসাহব্যঞ্জক: রবার্ট ডিকসন
পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে থাকবে জানিয়ে সে দেশের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন বলেছেন, পত্রপত্রিকায় যা পড়েছি এ ইস্যুতে এখন পর্যন্ত চীনের অবস্থান উৎসাহব্যঞ্জক। তবে নিরাপত্তা পরিষদে চীনের ভূমিকা ইতিবাচক হলে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সহজ হবে। তিনি বলেন, এ সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা ফিলিস্তিনের মতোই নিরাপত্তা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত বড় সংকটের জন্ম দিতে পারে। খবর সমকাল অনলাইন
সোমবার ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ আয়োজিত ডিকাব টক-এ অংশ নিয়ে রবার্ট ডিকসন এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন ডিকাব সভাপতি রাহীদ এজাজ। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব।
হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে আগ্রহী। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানেও যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে আছে এবং নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্তের জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। কিন্তু এ সংকটটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংকট। এ কারণে এর সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেই এগিয়ে আসতে হবে।
রবার্ট ডিকসন বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সদ্য চীন সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমরা আরও কিছু জানতে চাইব। এখন পর্যন্ত চীনের অবস্থান উৎসাহব্যঞ্জক। এখন নিরাপত্তা পরিষদে চীনের ভূমিকা ইতিবাচক হলে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সহজ হবে। তিনি বলেন, এ সংকটের সমাধান তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। প্রথমত, কফি আনান কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে নিরাপদ ও বসবাসযোগ্য পরিবেশের সৃষ্টি করতে হবে। দ্বিতীয়ত তাদের রাখাইনে নাগরিকত্ব দিতে হবে এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে রবার্ট ডিকসন বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বেশ কিছু চমৎকার বিতর্ক দেখা যায়, ভালো কিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদনও প্রকাশ হতে দেখা যায়। এটা ইতিবাচক। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণমূলক আইন এবং সাংবাদিকদের 'সেলফ সেন্সরশিপ' নীতি গ্রহণ করতে বাধ্য হওয়া নিয়েও কিছু কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগ আছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন কি-না সেটা তার নিজের এবং যুক্তরাজ্যের আদালতের ওপর নির্ভর করে।
বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য বৃদ্ধি-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের 'এজ অব ডুয়িং বিজনেস' সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬। সূচকের এ অবস্থান বিবেচনায় নিয়েই যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী। সম্পর্ক বৃদ্ধির এ বিষয়টিতে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেই ব্রেপিটের পরও যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা বহাল রেখেছে। অদূর ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য নীতি গ্রহণের বিষয়টিও বিবেচনায় আছে বলে জানান তিনি।