মুমূর্ষুর আপনজন ‘বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠন’

অরূপ রতন শীল, মুজাহিদুল ইসলাম জাহিদ ও অসীম কুমার কৌশিকঃ
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:২৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪৭০ বার।

শুরুটা ছিল ফেসবুকে পরিচিত পাঁচ বন্ধুর আড্ডার মধ্য দিয়ে। তবে এখন স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা একশ’ ছাড়িয়ে গেছে। দিন দিন এ সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ‘বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠন’ নামে প্রায় দুই বছর আগে গড়ে ওঠা এই সংগঠনের কার্যক্রম এখন এ জেলার গণ্ডি পেরিয়ে আশ-পাশের কয়েকটি জেলা-উপজেলায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। সংকটময় মুহুর্তে চাইলেই রক্ত মিলে যায়- তাই নবীন এই সংগঠনটি এরই মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রশাসনের লোকজনও এখন এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতা নিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা সংগঠনটির কার্যক্রমের প্রসারে নানাভাবে সহায়তাও দিয়ে যাচ্ছেন। স্বীকৃতি হিসেবে বগুড়ায় জেলা প্রশাসনের উন্নয়ন মেলায় স্টল বরাদ্দ পেয়েছে ‘বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠন’।
ওই সংগঠনের উদ্যোক্তাদের একজন সোহেল মিয়া। বগুড়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) রেস্ট হাউজের তত্ত্বাবধায়ক পঁচিশ বছর বয়সী সোহেলের বাড়ি একই জেলা সদরের নিশিন্দারা ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে। বাড়ন্ত বয়সেই জীবনযুদ্ধে নামার কারণে পড়ালেখা বেশিদূর করতে পারেন নি। ৮ম শ্রেণির পর বিদ্যালয় ছাড়তে হয় তাকে। সংগ্রামী সেই যুবক ক’দিন আগে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন অনলাইন দৈনিক পুণ্ড্রকথা কার্যালয়ে।

‘বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠন’-এর জন্মকাহিনী পুণ্ড্রকথা জানতে চায়- এমনটা শোনার পর তার বিস্ময় যেন কাটে না। আলাপচারিতায় উঠে আসে ওই সংগঠনের বেড়ে ওঠার কাহিনী। নিজেদের ইচ্ছা আর আকাক্সক্ষার কথা ফেসবুকে শেয়ারের মাধ্যমে কিভাবে একটি উদ্যোগ সফলতার দিকে এগিয়ে যায় তার আদ্যোপান্ত বলেন সোহেল মিয়া। তার সঙ্গে কথা বলেছেন পুণ্ড্রকথার চীফ রিপোর্টার অরূপ রতন শীল। সঙ্গে ছিলেন রিপোর্টার মুজাহিদুল ইসলাম জাহিদ ও অসীম কুমার কৌশিক।
দু’ বছর আগের কথা। সোহেল মিয়ার স্ত্রী ছবিয়া বেগমের সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ‘এ পজিটিভ’ রক্তের প্রয়োজন। তিনি স্বজন এবং বন্ধুদের কাছে খোঁজ করলেন। এমনকি গ্রামের বাড়িতেও ছুটলেন। সবাই শুধু শুনলেন কিন্তু কেউ রক্ত দিতে আগ্রহী হলেন না। এমন পরিস্থিতিতে একরাশ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে তিনি যখন হাসপাতালে ফিরছিলেন তখনই পরিচিত এক ছোট ভাই ফোন করে তার স্ত্রীকে এক ব্যাগ রক্ত দিতে রাজি হয়েছিল। দিনটি ছিল ২০১৬ সালের ২৬ মে। পরে সেদিনই অপারেশন হয় এবং সোহেলের ঘর আলোকিত করে আসে এক পুত্র সন্তান।
রক্তের প্রয়োজন হয়-এটা সোহেল মিয়া আগে শুনেছেন। কিন্তু রক্তের জন্য কারো জীবন এতটা বিপন্ন হতে পারে সেটা নিজের স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পূর্বে কখনোই উপলব্ধি করেননি তিনি। আর সে কারণেই রক্ত সংগ্রহ এবং তা সংকটাপন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন সোহেল মিয়া। এরপর বন্ধু সাদ্দামের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করেন এবং এজন্য দু’জনে একটি সংগঠন দাঁড় করানোর কথা চিন্তাও করেন।

সোহেল মিয়া জানান, সেই সময়ে তাদের ভাবনা ছিল সংগঠন তো হবে। কিন্তু তার নাম কি হবে? এ নিয়ে তারা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আরও কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করেন। এভাবে একে একে পাঁচটি নাম উঠে আসে। পরে সবার সম্মতিতে বর্তমান নামটিই চুড়ান্ত করা হয়। তার মতে যেহেতু ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় এবং সেখানেই সংগঠন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা হয় তাই তারা সংগঠনের নামের আগে ‘অনলাইন’ শব্দটি যুক্ত করেছেন। আর ২০১৬ সালের ২৬ মে অন্যের দেওয়া রক্তে সংকটাপন্ন সোহেলের স্ত্রীর জীবন রক্ষা এবং সুস্থ-সবল সন্তান প্রাপ্তির ঘটনাটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ওই দিনটিকেই ‘বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠন’-এর জন্মদিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।স্বপ্নের ওই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালে সোহেল মিয়ার সঙ্গে আরও যারা যুক্ত ছিলেন তারা হলেন- ধুনটের যুবক ইয়াছিন আলী, গোবিন্দগঞ্জের  মুনিরুল ইসলাম, রাজশাহীর সাদ্দাম ও বগুড়া শহরের কলোনী এলাকার হায়দার আলী। তারা বর্তমানে সংগঠনের পাশাপাশি নিজ নিজ কর্মস্থলেও কাজ করে যাচ্ছেন। সোহেল মিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী, শুরুর দিনগুলো ছিল অনেক কঠিন এবং কষ্টসাধ্য। কারণ মাত্র পাঁচজন সদস্য নিয়ে সবকিছু সামলানো পক্ষে সহজ ছিল না। কিন্তু আজ সোহেল ও বন্ধুরা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছেন। কারণ হাঁটি হাঁটি পা পা করে বর্তমানে তার সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী তথা সদস্য সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। যাদের বেশির ভাগেরই বয়স ১৮ থেকে ত্রিরিশের মধ্যে। মধ্যে। তারা প্রতিদিন ১০ থেকে বারো ব্যাগ রক্ত জোগাড় করে দিচ্ছেন।
তাদের স্বপ্নের সেই সংগঠন বগুড়ার গণ্ডি পেরিয়ে এখন নাটোর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ জেলায় সমানতালে রক্ত জোগাড় এবং ক্যাম্পেইনের কাজ করে যাচ্ছে। রক্তের প্রয়োজনে এসব জেলা থেকে সোহেল এবং তার বন্ধুদের কাছে প্রতিদিন ঘন্টায় গড়ে একটি করে ফোন কল আসে। সোহেল মিয়া’র সঙ্গে পুণ্ড্রকথার আলাপচারিতার সময় তার মোবাইলে মালয়েশিয়া থেকে এক ব্যক্তির ফোন এল। মেহেদী হাসান নামে এক ব্যক্তি তার মামির সিজারিয়ান অপারেশনের কথা জানিয়ে এক ব্যাগ ‘এ পজিটিভ’ রক্ত চাইলেন। সোহেল তাকে আশ্বাস্ত করে বললেন, ‘আপনার মামীর নাম এবং তিনি কোন ক্লিনিক বা হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং কখন তার রক্ত লাগবে আমাদের বলুন- আমাদের স্বেচ্ছাসেবী পৌঁছে যাবে।’ সোহেল মিয়া জানান, প্রতি সপ্তাহে প্রবাস থেকেও তারা এ ধরনের একাধিক কল পেয়ে থাকেন।

বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠনের অফিসিয়ালি কোন কমিটি নেই। না থাকার ব্যাখ্যাটাও সোহেল মিয়া দিলেন খুব সুন্দর করে। তার মতে সংগঠনে যেন সবাই সমান মর্যাদায় কাজ করতে পারে সেজন্য কমিটি করা হয়নি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাজের স্বার্থে সাংগঠনিক পরিচয় দিতে হিয়। আর তখন সবার সম্মতিতেই সোহেল মিয়া সভাপতি তার বন্ধু এম হাসান আদমকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়।বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠন প্রতি মাসে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠার পর গেল দুই বছরে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছেন তারা। রক্তদানের ক্ষেত্রে তারা থ্যালাসেমিয়া, সড়ক দূর্ঘটনায় আহত কিংবা কিডনী ডায়ালেসিস-এর মত জরুরী ক্ষেত্রে তাদের স্বেচ্ছাসেবীরা দ্রুত রোগীর কাছে পৌঁছে প্রয়োজনীয় রক্ত দিয়ে আসেন। তবে সিজারিয়ান অপারেশনের ক্ষেত্রে নিজেরা এক ব্যাগ রক্ত দিলে রোগীর স্বজনদের একজনের কাছ থেকে এক ব্যাগ রক্ত তারা অন্য কোন রোগীর জন্য নিয়ে রাখেন। তবে এটা বাধ্যতামূলক নয় বলে জানান সোহেল মিয়া। তিনি বলেন, ‘সিজারিয়ান কোন রোগীর স্বজনরা যদি রক্ত দিতে না চান তাহলে আমরা জোর করি না।’
সংগঠন তো এখন অনেক বড় হচ্ছে, খরচ কি ভাবে বহন করা হয়-এমন প্রশ্নের উত্তরে সোহেল মিয়া জানান, তারা প্রতি মাসে একটা করে মাসিক মিটিং করেন। সেখানে সদস্যর ৫০ টাকা করে সংগঠনের তহবিলে জমা দেন। এছাড়াও বগুড়ার কিছু প্রবাসী রয়েছে যারা প্রতি মাসে তাদের সাধ্যমত আমাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকেন। আর যারা রক্ত দিতে দূরবর্তী স্থানে যান তাদের জন্য শুধু যাতায়াত ভাড়ার নেওয়ার বিধান রাখা রয়েছে তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে।
‘ভালো লাগা’ এবং ‘কষ্ট পাওয়া’-এ রকম কোন মুহুর্ত আছে কি’না জানতে চাইলে সোহেল মিয়া জানান, রক্ত দান করতে গিয়ে তাদের অনেক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ‘ভালো লাগা’র একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তখন রমযান মাস। রোযা রাখা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত দেওয়ার ব্যাপারে প্রায় সবারই আপত্তি রয়েছে। তো একদিন এক ব্যক্তি ফোন করে খুব কান্নাকাটি করে বলছিলেন সদ্য জন্ম নেওয়া তার ছেলেকে বাঁচানোর জন্য রক্ত প্রয়োজন। ‘ও পজেটিভ’ গ্রুপের মাত্র ৮০ মিলিমিটার রক্ত হলেই হবে। তার এমন আকুতির পর আমি রক্তের খোঁজ শুরু করি। কিন্তু রমজান মাস হওয়ায় কেউ রক্ত দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। আমাদের স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে যারা অন্য ধর্মের অনুসারী তারাও সেদিন বগুড়ার বাইরে ছিলেন। ফলে কোনভাবেই রক্ত পাচ্ছিলাম না। তাহলে কি রক্তের অভাবে শিশুটি মারা যাবে-এমনটা মনে হওয়ার পর রোযা থাকা সত্ত্বেও আমি নিজেই গিয়ে রক্ত দিতে যাই। শিশুটির কাছে যাওয়ার পর সে আমার দিকে এমনভাবে তাকিয়ে ছিল যেন আমি কত দিনের চেনা! তার চাহনি দেখে মনে হচ্ছিল সে আমার জন্যই অপেক্ষা করছিল। ওই শিশুটির সেই চাহনি আমি আজও ভুলতে পারিনি। আর সেটাই এখন পর্যন্ত আমার সবচেয়ে ভালো লাগার একটি মুহুর্ত।’
কষ্টের কথা বলতে গিয়ে সোহেল মিয়া জানান, যখন কারো রক্তের প্রয়োজন পড়ে তখন তার স্বজনরা ঘন ঘন ফোন করে। এমনকি আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা রোগীর কাছে না পৌঁছানো পর্যন্ত ফোন কল আসতে থাকে। কিন্তু রক্ত দেওয়া হয়ে গেলে আর কোন যোগাযোগ রক্ষা করা হয় না। সোহেল মিয়া বলেন, ‘আমরা ধন্যবাদ চাই না। বরং আমরা স্বেচ্ছাসেবীদের সংখ্যা বাড়াতে চাই। তো রক্ত পাওয়ার পর যদি সংশ্লিষ্ট রোগীর স্বজনরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তাহলে আমরা হয়তো তাদের স্বেচ্ছাসেবী হওয়ার অনুরোধ জানাতে পারতাম। কারণ যাঁর রক্তের প্রয়োজন হয়েছে তিনি এবং তার স্বজনরাই এর গুরুত্ব যতটা বুঝবেন তার তুলনায় জীবনে কখনও রক্ত দেননি অথবা এখনও প্রয়োজন পড়েনি এমন ব্যক্তিদের উপলব্ধি তেমন হবে না। কিন্তু রক্ত পাওয়ার তারা কোন যোগাযোগ রাখেন না বলে তাদের কাছে সংগঠনের সেই ইচ্ছার কথা জানানো সম্ভব হয় না। যদি তারা যোগাযোগ রাখতেন তাহলে তাদের মাধ্যমে অন্য কাউকে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করার কাজটি আরও সহজ হয়ে যেত। কিন্তু এটা হয় না আর সেটাই আমাদের কষ্ট দেয়।’
সংগঠনের দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্তে সম্প্রতি বগুড়া শহরের নওয়াববাড়ি সড়কে ডায়াবেটিক হাসপাতালের উল্টোদিকে ইয়াসিন প্লাজায় একটি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছে। ছোট্ট সেই ঘরেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীসহ যাদের নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন তাদের জন্য ডে-কেয়ার সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা করছেন সোহেল মিয়া ও তার বন্ধুরা। এছাড়াও দরিদ্র রোগীদের আরও কিভাবে সহায়তা দেওয়া যায় সেই পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে। সোহেল মিয়া বলেন, “আমরা আমাদের সংগঠনকে আরও সম্প্রসারিত করতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা দরকার। তবে এখন পর্যন্ত বগুড়ার সর্বস্তরের মানুষ, সাংবাদিক এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমাদের যেভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাতে আমরা অভিভূত। আশা করি সবার সহযোগিতা পেলে ‘বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠন’ আরও বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ পাবে।”
বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু জানান, অনলাইন রক্তদান সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা বেশ সাড়া ফেলেছেন। বিশেষ করে অনলাইনের মাধ্যমে তাদের ব্লাড ডোনেশনের এই উদ্যোগ সত্যিই খুব ব্যতিক্রমী। তিনি বলেন, ‘তাদের কর্মযজ্ঞগুলো আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। জরুরী প্রয়োজনে রক্তদানের ব্যাপারে তারা কমিটেড। আমি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং সব সময় উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি।’
সংকটাপন্ন মানুষকে রক্ত দিয়ে বাঁচানোর ক্ষেত্রে বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা যে সত্যিই আন্তরিক তা পুলিশ কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন। ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মরণাপন্ন এক রিকশা চালককে বাঁচাতে ওই সংগঠনের এক স্বেচ্ছাসেবীর ভূমিকার কথা উঠে এসেছে বগুড়ায় পুলিশের মিডিয়া বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর ‘একটি পুলিশীয় গল্পে’ শিরোনামে লেখায়। চলতি বছরের ১১ আগস্ট নিজের ফেসবুক ওয়ালে সেই লেখায় পীযুষ নামে আহত সেই রিকশা চালকের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ও নেগেটিভ’ রক্তের সন্ধানে রাতভর পুলিশের ছোটাছুটির বর্ণনা উঠে এসেছে। তাতে বিরল গ্রুপের ওই রক্ত দিতে পুলিশ বাহিনীর এক সদস্য এবং বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠনের এক স্বেচ্ছাসেবীর হাসপাতালে ছুটে যাওয়ার কথা বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে।
বগুড়া অনলাইন রক্তদান সংগঠনের কার্যক্রমের প্রশংসা করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী পুণ্ড্রকথাকে বলেন, ‘রক্তের কোন ধর্ম, বর্ণ কিংবা জাত-পাত নেই। মুমূর্ষু মানুষকে বাঁচাতে এই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা খুবই আন্তরিক। যেখানেই প্রয়োজন সেখানেই তারা ছুটে যাচ্ছেন। তাদের এ কাজে আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তা করা উচিত।’

[জরুরী প্রয়োজনে ফোন করুনঃ ০১৭ ৮০ ৭০ ৩০ ৭৫, ০১৭ ১২ ২১ ১১ ২৬]