যে কারণে রাজশাহীতে তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায়

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০১৯ ১৪:১৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৮ বার।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছির দিঘলকান্দি ঢালানের কাছে তেলবাহী ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক খন্দকার শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, লাইন সংস্কার কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলীর গাফলতির কারণেই তেলবাহী ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ে।

তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। খবর দেশ রুপান্তর।

রাজশাহীর চারঘাটে তেলবাহী ট্রেনের নয়টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় বন্ধ থাকে সারাদেশের সঙ্গে রাজশাহীর ট্রেন যোগাযোগ। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ৫টি বগি উদ্ধার সম্ভব হয়।

শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, এখানে লাইন সংস্কার চলছিল। পুরাতন স্লিপার পরিবর্তন করে পাথর দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু যারা সংস্কার কাজ করছে তারা স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানো কয়েকটি পিন (ডগস্পাইক) খুলে রেখেছিল। পাথর ফেলার পর সেটা ঢেকে যায়, ফলে কারও চোখে পারেনি। তাতেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

রেলের কর্মকর্তারা জানান, মোট ৩১টি তেলের ক্যারিজ নিয়ে যাচ্ছিল ট্রেনটি। প্রতিটি ক্যারিজে রয়েছে ৫০ হাজার লিটার তেল। প্রতিটি ক্যারিজের ওজন ৫০ টন। পিন খোলা থাকায় অতিরিক্ত চাপে লাইন সরে যায়। ফলে নয়টি বগি লাইন ছেড়ে বেরিয়ে যায়।

জানা গেছে, বুধবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে উদ্ধার কাজ। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত লাইনচ্যুত হওয়া ৫টি বগি উদ্ধার সম্ভব হয়।

উদ্ধার কাজ শেষ করে রাত নাগাদ রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সুপারিন্টেনডেন্ট আবদুল করিম বলেন, লাইনচ্যুত বগিগুলোর উদ্ধার কাজ শেষ না হওয়ায় বুধবার রাত থেকে রাজশাহীর সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বুধবার রাতের ধুমকেতু ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়। এছাড়া সকালের আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা, সাগরদাঁড়ি, সিল্কসিটি, কপোতাক্ষ ও বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনেরও যাত্রা বাতিল হয়েছে। টিকিট ফেরত নিয়ে যাত্রীদের টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহী অভিমুখে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি নাটোরের আবদুলপুরে এবং বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন রাজশাহীর আড়ানিতে আটকা পড়ে। এতে যাত্রীরা চরম বিড়ম্বনায় পড়ে। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে নেমে বিকল্প পথে চরম হয়রানীর মধ্য দিয়ে গন্তব্যের দিকে যাত্রা করেন তারা।

তেলবাহী ওই ট্রেনটি খুলনা থেকে রাজশাহীর হরিয়ান হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে যাবার কথা ছিলো। ট্রেনটি ঈশ্বরদী হয়ে রাজশাহী অভিমুখে আসছিলো। ট্রেনটির মাঝখান থেকে বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়।

এদিকে, ঘটনার পর পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে বিভাগীয় ট্রান্সপোর্ট অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। এই কমিটিকে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।