অধিনায়ক তামিম কেমন?

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০১৯ ০৫:২৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪৫ বার।

তামিম ইকবালকে দেশের হয়ে টস করতে দেখেছেন কখনো? এই প্রশ্নের উত্তরে আপনি দ্বিধায় পড়তেই পারেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক যুগ পার করে দেওয়া ৩০ বছর বয়সী তামিম যে অধিনায়ক হিসেবে আলোচনায় আসেননি কখনোই। তবে আসছে শ্রীলঙ্কা সফরে এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের কাঁধে থাকছে বাংলাদেশের নেতৃত্ব। খবর দেশ রুপান্তর 

নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা চোটের কারণে ছিটকে গেছেন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ থেকে। তামিমকে অধিনায়ক করেই তাই দলকে শ্রীলঙ্কা পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তো অধিনায়ক হিসেবে কেমন তামিম?

বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে পরিসংখ্যানে তামিমের নাম উঠেছে আগেই। ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে দেশকে নেতৃত্ব দেন তামিম। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি; শীতের সেই ভোরে তামিমকে হয়তো টস করতে দেখা হয়নি অনেকেরই। ঘুমো ঘুমে চোখে দেখা দৃশ্য মনে নেই। সাদা পোশাকে সেই একটি ম্যাচের পর আর অধিনায়কও হওয়া হয়নি তামিমের। শ্রীলঙ্কাতেই প্রথম রঙিন পোশাকে অধিনায়ক হিসেবে দেখা যাবে দেশের অন্যতম গ্ল্যামারাস এই ক্রিকেটারকে।

হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তামিমের। এরপর মোহাম্মদ আশরাফুল, মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমকে অধিনায়ক হতে দেখেছেন চট্টগ্রামের ছেলে তামিম। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তো সাম্প্রতিক সময়ে ‘অস্থায়ী’ অধিনায়কই হয়ে গিয়েছিলেন। সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিতই এই দায়িত্বভার সামলাতে দেখা গেছে তাকে। বিশ্বকাপের পর সাকিব ছুটিতে যাওয়ায় শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছেন না। তবে এবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নয়, নেতৃত্ব থাকছে তামিমের কাঁধে।

ভারপ্রাপ্ত হলেও বেশ কঠিন সময়েই অধিনায়কের দায়িত্বে এলেন তামিম। নিজে ভালো ফর্মে নেই। বিশ্বকাপে মোটেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। ওদিকে শ্রীলঙ্কার সফরে দলও যে খুব ভালো অবস্থায় থেকে যাচ্ছে তাও নয়। বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন থাকলেও সেটি পূরণ হয়নি টাইগারদের। দশ দলের মধ্যে হয়েছে অষ্টম।

এদিকে শ্রীলঙ্কার সফরের জন্য ছুটি নিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। আর সফরের জন্য দেশ ছাড়ার ঠিক আগের দিন ইনজুরিতে পড়েন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সব মিলে তামিম পাচ্ছেন ভাঙাচোরা একটা দলকে। একদিকে নিজেকে ছন্দে ফেরানোর তাড়না থাকছে, অন্যদিকে বিশ্বকাপের পর দলকে নতুন শুরু এনে দেওয়া। তামিম কি চাপ অনুভব করছেন না!

আড়াই বছর আগেও এমনই চাপের মধ্যে অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন তামিম। নিউজিল্যান্ড সফর বরাবরই টাইগারদের কঠিন পরীক্ষা নিয়ে থাকে। ২০১৭ সালেও তেমনই নিয়েছে। ওয়েলিংটনে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে ৭ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও ইমরুল কায়েস। পরে ইনজুরিতে পড়েন মুমিনুল হকও। এই তিনজনের ছিটকে যাওয়া ম্যাচে ক্রাইস্টচার্চে দলকে নেতৃত্ব দেন তামিম।

না, কিউইদের বিপক্ষে খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি তামিমের নেতৃত্বাধীন দল। হেরেছিল ৯ উইকেটে। ব্যাট হাতে অধিনায়ক তামিমের ইনিংস দুটি ছিল- ৫ ও ৮। এরপর আর কোনো ফরম্যাটেই নেতৃত্বে আসেননি তামিম। যদিও নানা সময়েই সহ-অধিনায়ক হিসেবে ছিলেন।

২০১৩-২০১৭ তিনবার বিপিএলে নেতৃত্ব দিয়েছেন তামিম। দুরন্ত রাজশাহী, চিটাগং ভাইকিংস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এই তিন দলের নেতৃত্ব ছিলেন। পরিসংখ্যা বলছে, বিপিএল ৩৪ ম্যাচে ১৪ জয় অধিনায়ক তামিমের। হার ২০টিতে। অধিনায়ক হিসেবে যেখানে শিরোপা জেতা হয়নি তার। তবে ২০১৬ সালে তামিমের নেতৃত্বেই প্রিমিয়ার লিগে শিরোপা জেতে আবাহনী।

দেশের হয়ে ৫৮টি টেস্ট, ২০১টি ওয়ানডে ও ৭৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তামিম। তিন ফরম্যাটেই টাইগারদের পক্ষে সর্বাধিক রানের মালিক এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। এবারের শ্রীলঙ্কা সফরটা যার জন্য হয়ে উঠতে পারে অনেক বড় কিছু।

এ দেশের ইতিহাস বলে ব্যর্থ হওয়া মানেই সব গেল। নিজের ও দলের যে পরিস্থিতিতে দলের নেতৃত্ব পেলেন তামিম, সামলাতে পারবেন তো তিনি?