চট্টগ্রামে অজ্ঞান পার্টির ৪ সদস্য গ্রেফতার

১০ বছরে ৮শ মানুষকে অজ্ঞান করেছে তারা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০১৯ ১২:০৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৯৩ বার।

চট্টগ্রামে ‘অজ্ঞান পার্টি’র চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত নগরের কোতোয়ালী থানার টাইগারপাস ও পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ বলছে, গ্রেফতার চারজন অজ্ঞান পার্টির পেশাদার সদস্য। দশ বছর ধরে এ পেশায় জড়িত তারা। প্রায় ৮০০ লোককে অজ্ঞান করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়েছে তারা। দশ বছরে দুইবার গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে এসে পুরনো অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে তারা।

গ্রেফতার চারজন হলেন-ভোলা জেলার লালমোহন থানার চর সখিনা গ্রামের মান্নান মালকারের ছেলে চুন্নু, হাফিজ মাঝির ছেলে মো. জসিম, ছিডু মাঝির ছেলে নুর ইসলাম ও সবদের আলীর ছেলে মো. আকবর। তাদের কাছ থেকে লোকজনকে অজ্ঞান করার বিভিন্ন ওষুধ ও জুস উদ্ধার করা হয়। অপরাধে দক্ষ হওয়ায় অপরাধ জগতে ‘ভোলাইয়া গ্রুপ’ হিসেবে খ্যাতি রয়েছে তাদের।

সাম্প্রতিক সময়ে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে ১৯ ব্যক্তি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে তথ্য পায় পুলিশ।

কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান জানান, গত শুক্রবার রাতে টাইগার পাস পুলিশ বক্স এলাকা থেকে চুন্নু ও আকবরকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জসিম ও নুর ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আন্তঃজেলা অজ্ঞান পার্টির সদস্য বলে স্বীকার করেছে। গত ১০ বছরে ঢাকা, রংপুর, নরসিংদী, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটে এ ধরনের কাজ করেছে তারা। চট্টগ্রাম মহানগরীতে গত কয়েক বছরে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র তারা ছিনিয়ে নিয়েছে। এছাড়া দশবছরে অন্তত ৮০০ লোককে অজ্ঞান করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়েছে তারা। দশ বছরে মাত্র দু’বার গ্রেফতার হয়েছিল গ্রুপটির সদস্য। এরমধ্যে একবার মুন্সিগঞ্জ জেলার মাওয়া ফেরিঘাটে এবং আরেকবার নোয়াখালীতে।

অজ্ঞান করার কৌশল সম্পর্কে পুলিশ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, সাধারণত দূরপাল্লার বা নগরের যে কোনো বাসে উঠে সহজ সরল যাত্রীকে টার্গেট করে তারা। এরপর চারজনের এই দলটি কৌশলে ওই যাত্রীর সঙ্গে ভাব জমিয়ে তাকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খেতে দেয়। যাত্রীর বিশ্বাস অর্জনের জন্য ওষুধ মেশানোর আগে জুসের একাংশ তারা নিজেরাও পান করে। জুস খেয়ে ওই যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় তারা। ফিরতি পথে একই কায়দায় অন্য যাত্রীকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নেয় তারা।