কবিরাজি, বান মারা, প্রতারণা, যৌনতা ও হত্যার চাঞ্চল্যকর কাহিনি

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০১৯ ১১:২৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬৪ বার।

ভাটারা এলাকায় এক গৃহপরিচারিকা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ কবিরাজি, বান মারা, স্বামীকে ফিরিয়ে আনার নামে প্রতারণা ও যৌনতার চাঞ্চল্যকর ঘটনা উন্মোচন করেছে।

নিহত ওই গৃহপরিচারিকার নাম আয়েশা। বয়স আনুমানিক ২৮ বছর। নিহত আয়েশার ১২ বছরের একটি ছেলে ও ৮ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। আয়েশাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে নাজমুল নামে একজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। খবর দেশ রুপান্তর 

রবিবার পুলিশের গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।

এতে বলা হয়, পুলিশ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে অভিযুক্ত নাজমুলকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত চেতনানাশক, মোবাইল সিম কার্ড, জি আই তার উদ্ধার করা হয়।  

পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে আয়েশার স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ভাটারা এলাকায় দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন এবং গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। স্বামী ট্রাকচালক, দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন টাঙ্গাইলে।

স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য অস্থির আয়েশার সঙ্গে প্রতিবেশী নাজমুল একটি আস্থার সম্পর্ক তৈরি করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে। পুলিশের ভাষ্য, নাজমুল আগে প্রাইভেটকার চালালেও বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত।

প্রতারক নাজমুল বোঝাতে সক্ষম হয় যে, এক কবিরাজের বান মারার কারণেই আয়েশার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এ জন্য এমনকি নিজের ছেলে মেয়েদের উপরেও নেই কোনো টান।

আয়েশা জানতে চায়, এ রকম অবস্থা থেকে কীভাবে বাঁচা যায়, কীভাবে ফেরত পাওয়া যাবে স্বামীকে, ছেলেমেয়েরা কীভাবে পাবে তাদের বাবার আদর-ভালোবাসা?

নাজমুল এ পর্যায়ে স্বামীকে বশে আনতে কবিরাজের খরচের কথা বলে আয়েশার কাছ থেকে ২৪০০ টাকাও নেয়। পাশাপাশি কবিরাজের নির্দেশের কথা বলে আয়েশার সঙ্গে একাধিকবার যৌন সম্পর্কও স্থাপন করে প্রতারক নাজমুল।

পুলিশ জানায়, এর মধ্যে আয়েশার স্বামী টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় তার বোনের বাসায় আসলে প্রতারক নাজমুল দাবি করে কবিরাজের মাধ্যমেই আয়েশার স্বামীকে টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু গত ৪ জুলাই ফের যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলে নাজমুলকে বাধা দেয় আয়েশা এবং তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আয়েশা তার টাকাও ফেরত চান।

পরে নাজমুল ফের কবিরাজের বানের কথা বলে আয়েশাকে কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায় এবং তাকে ধর্ষণ করে। ঘুমের ওষুধের প্রভাবে আয়েশা ঘুমিয়ে পড়লে গলায় জি আই তার পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে নাজমুল।

এই হত্যার রহস্য উন্মোচনের কাজ শুরু করে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ। এদিকে নিহতের পরিবার আয়েশার স্বামী ও সতীনসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা রুজু করে ভাটারা থানায়। কিন্তু গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতায় গ্রেপ্তার হয় প্রকৃত হত্যাকারী নাজমুল।