কোরবাণী ঈদ আসছে

বগুড়ার দরগাহাটের খামারে ৮ থেকে ১৫ মণ ওজনের দেশি ও শাহীওয়াল গরু

অরূপ রতন শীল
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০১৯ ১৪:৪০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৮৩ বার।

কোরবানীর ঈদ আসছে। ক’দিন বাদেই হাটে-হাটে গরু-ছাগল উঠতে শুরু করবে। হাট থেকে কোরবানীর পশু কেনায় অনেক ঝক্কি আছে ঠিক, তবে তাতে এক ধরনের ভাললাগাও রয়েছে। কিন্তু দালাল আর পকেটমারদের দৌরাত্ম এবং কৃত্রিম উপায়ে মোটা-তাজা করা পশু চিনতে না পারার কারণে সঠিক দামে মনের মতো গরু-ছাগল কেনা সম্ভব হয়ে ওঠে না। 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাটগুলোতে পশু বিশেষত গরুর সাইজ যত বড় হয় তাকে ঘিরে দালালদের দৌরাত্মও তত বাড়ে। তাছাড়া সেই গরুটি আদৌ সুস্থ কি’না বা তাকে স্বাভাবিক খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে কি’না তা নিয়ে সন্দেহ তো থেকেই যায়। মূলত এসব কারণে ইদানিং ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা খামার থেকে বড় গরু কেনার হার বেড়েছে।
বগুড়া ভাণ্ডার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন তেমনিই একটি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন জেলার কাহালু উপজেলার দরগাহাট এলাকায়। বগুড়া-নওগাঁ সড়কের পাশে নিজের জুট মিলের ভেতরের ওই খামারে দেশি-বিদেশী এবং ক্রস মিলিয়ে ২৬টি গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। তবে এর মধ্যে দুই থেকে ছয় দাঁতের ১২টি গরু এবার বিক্রি করা হবে। ওই ১২টি গরুর মধ্যে ১১টি পাকিস্তানী শাহীওয়াল জাতের আর অপরটি দেশি।
খামার মালিক তোফাজ্জল হোসেন জানান, মূলত শখের বসেই তিনি গরু লালন-পালন শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর আমি ১০ থেকে ১২টি কোরবানী দিয়ে থাকি। তো ভাবলাম- একটা খামার গড়ে তুললে কেমন হয়! বলতে পারেন ওই ভাবনা থেকেই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বোয়ালিয়া, শাহজাদপুরের তালগাছি এবং বগুড়ার মহাস্থানগড়সহ বিভিন্ন হাট থেকে বাছাই করা গরু কিনে লালন-পালন শুরু করেছি।’ 
ওই খামারে গরুর স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত পশু চিকিৎসক এস এম গোলাম রাব্বী জানান, প্রায় ৮ মাস আগে গরুগুলো কেনা হয়। এর পর গরু পালনে অভিজ্ঞ কয়েকজন কর্মীর সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে ভূষি, খুদের ভাত, ভুট্টার গুড়া, ঘাস এবং খড় খাইয়ে গরুগুলোকে প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজা করা হচ্ছে। প্রতিটি গরু দিনে গড়ে ৬ কেজি পর্যন্ত খাবার খায়। তিনি বলেন, ‘ক্ষতিকারক হরমোন এবং এন্টিাবায়োটিক প্রয়োগ ছাড়াই গরুগুলোকে বড় করা হয়েছে।’
বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা গরুগুলোর মধ্যে ৬ দাঁতের দু’টি বড় শাহী ওয়াল রয়েছে। তাদের ওজন ৬০০ কেজি বা ১৫ মণেরও বেশি। চার দাঁতের ৩টি শাহীওয়ালের ওজন ৪২৫ কেজি থেকে ৪৫০ কেজির কিছু বেশি। এছাড়া ২ দাঁতের আরও ৬টি শাহীওয়ালের ওজন ৪০০ কেজির কিছু কম। আর একমাত্র দেশি জাতের দুই দাঁতের গরুর ওজন ৩৩৫ কেজি।
দাম কেমন হতে পারে: খামার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশি জাতের ৩৩৫ কেজি বা প্রায় সাড়ে ৮মণ ওজনের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মাঝারী জাতের শাহীওয়াল গরুগুলোর দাম চাওয়া হচ্ছে দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। আর বড় দুই শাহীওয়ালের (৬০০ কেজি বা ১৫মণেরও বেশি ওজন) দাম হাঁকা হচ্ছে ৩ লাখ টাকা করে।প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বাহালুল ইসলাম জানান, শাহীওয়াল জাতের গরুগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার মাংসগুলোও সুস্বাদু।

খামার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, বড় বড় গরুগুলোকে হাটে তুলে বিক্রির কোন ইচ্ছা তাদের নেই। কারণ ঘন ঘন হাটে নেওয়ার কারণে একদিকে যেমন গরুগুলোর স্বাস্থ্য হানি হতে পারে তেমনি শরীরে ক্ষত সৃষ্টি এমনকি দূর্ঘটনায় আহত বা নিহত হওয়ারও আশঙ্কা থেকে যায়।