গণপিটুনির সঙ্গে জড়িতদের বিচার হবে প্রচলিত আইনে: আইনমন্ত্রী

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০১৯ ১৪:৩০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬৭ বার।

গণপিটুনির সঙ্গে জড়িতদের প্রচলিত আইনে বিচার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। 

তিনি বলেন, গণপিটুনি একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। গত বছর এ সময় কোন গণপিটুনির ঘটনা ঘটে নাই, কিন্তু সাতদিনের মধ্যে ১১টা ঘটনা কেন, কীভাবে ঘটলো তা অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতিসংঘ নির্যাতন বিরোধী কনভেনশন (ইউএনসিএটি) বিষয়ে সিভিল সোসাইটির সঙ্গে মতবিনিয় সভা শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা সিরিজ হওয়ার বিষয়টি তদন্ত করা হবে। আমরা দেখেছি, সাম্প্রতিক সময়ে যখন আগুন লাগে এরপর থেকে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও আগুণ লাগে, যখন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে সিরিজভাবে তা ঘটতে থাকে। কারা কেন গণতন্ত্র প্রতিহত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করতে চায়, এসব ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হবে। হঠাৎ গত ছয়মাসে কোনা ঘটনা নাই। একটা ঘটনা ঘটলো তারপরেই ছয়টা, দশটা ও পনেরটা ঘটে যায় এটা অস্বাভাবিক। এসব কারণ খতিয়ে দেখা হবে এবং এটাও একটা কারণ।

আনিসুল হক বলেন, দেশে বিচারবর্হিভূত হত্যার পরিমাণ অনেক কমে এসেছে। একটাও যাতে বিচার বহির্ভূত হত্যা না হয়, আমরা সে দিকেই অগ্রসর হচ্ছি। নির্যাতন বন্ধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতন কমেছে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম জাতিসংঘে নির্যাতন বিরোধী প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহিদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক বক্তৃতা করেন। সিভিল সোসাইটির সদস্যরা জাতিসংঘ নির্যাতন বিরোধী কনভেনশন এবং বাংলাদেশে এর প্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা করেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, পদ্মা সেতু তৈরিতে মাথা লাগবে। এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর বাড্ডা এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে এক মহিলাকে পিটিয়ে মেরা ফেলা হয়েছে। এসব সামাজিক অবক্ষয় পরিবর্তনে সময় লাগবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হবে। জনবান্ধব সরকারকে এ দায়িত্ব নিতে হবে।

তিনি বলেন, ফেনীর নুসরাতের ঘটনা অত্যন্ত দু:খজনক ও নিন্দনীয়। অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া অপরিহার্য। অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হলে এটাই প্রমাণ হবে-কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়।

মন্ত্রী আরও বলেন, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্টায় বাংলাদেশ কাজ করে চলেছে। দেশের যেখানেই অপরাধ হচ্ছে সেখানেই তা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধর্ষণ বা অন্যান্য নির্যাতন বন্ধ করার জন্য সরকার অনেক চেষ্টা করছে। মাদক নির্মূলের জন্যও চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের মানুষ সবাই একত্রিত হয়ে এসব অপরাধ দমনে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। 

তিনি বলেন, বৈষম্য দূর করার জন্য সরকার বৈষম্য বিরোধ আইন প্রণয়ন করছে। এ আইনের খসড়া ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। আগামী মাসে এটি মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে এবং সেখানে অনুমোদিত হলে সংসদের আগামী অধিবেশনে এটি পাশের জন্য পাঠানো হবে। আমরা বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড সমর্থন করি না, ভবিষ্যতে আর একটাও যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেদিকে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। 

তিনি বলেন, আইন করা বড় লক্ষ্য নয়, তবে সঠিকভাবে তা প্রয়োগ করতে হবে। সব কিছুই আইন দিয়ে হবে না, সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে।