চাহিদার চেয়ে কোরবানির পশু ১লাখ ১৬ হাজার বেশি !

নওগাঁর ১১টি উপজেলায় ৩২ হাজার খামারে ৩ লাখ কুরবানির পশু প্রস্তুত

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ)
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০১৯ ০৭:৪৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪৫৭ বার।

কোরবানির চাহিদা মেটাতে প্রতিবছরের মতো এবারও নওগাঁ জেলায় ব্যাপকভাবে পশু পালন করেছেন খামারীরা। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে নওগাঁয় সম্পূর্ন প্রাকৃতিক ও ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রক্রিয়া ছাড়াই জেলার ১১টি উপজেলায় এ বছর ৩২ হাজার ২৪২টি খামারে মোট দুই লাখ ৭৬ হাজার ১১৫টি কুরবানির পশু প্রতিপালন করা হয়েছে।

জেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ঈদুল আজহা উপলক্ষে এ জেলায় কুরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার ১১৩টি। অবশিষ্ট পশু দেশের অন্য জেলায় সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। 

জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার দাস বলেন, 'নওগাঁ জেলা একটি কৃষি উৎপাদনের উদ্বৃত্ত জেলা। শস্যে, মাছে যেমন উদ্বৃত্ত তেমন প্রাণীসম্পদের উদ্বৃত্ত। তার দেওয়া তথ্য মোতাবেক এ জেলায় আসন্ন কুরবানিকে সামনে রেখে ৬৫ হাজার ৬০৭টি ষাঁড়, ২২ হাজার ৭৯টি বলদ, ৬৬ হাজার ৩৮টি গাভী, তিন হাজার ৩৫২টি মহিষ, ৯৩ হাজার ৬৮৪টি ছাগল, ২৫ হাজার ২৩টি ভেড়া এবং অন্যান্য ৩৩২টি পশু খামারগুলোতে প্রতিপালন করা হয়েছে।' 

নওগাঁয় খামার ও কোরবানির পশুর পরিমাণ হচ্ছে-

নওগাঁ সদর উপজেলায় মোট ২ হাজার ৫৫৬টি খামারে ৫ হাজার ৯৩২টি ষাঁড়, ১ হাজার ৭৫৯টি বলদ, ১ হাজার ৯৯৯টি গাভী, ৬ হাজার ৬৫০টি ছাগল ও ১ হাজার ৫৭২টি ভেড়া। 

রানীনগর উপজেলায় মোট ১ হাজার ৩৪০টি খামারে ২ হাজার ৪৩১টি ষাঁড়, ৯৬৮টি বলদ, ৩ হাজার ৭৮৯টি গাভী, ৭ হাজার ২৮৯টি ছাগল ও ১ হাজার ৮শটি ভেড়া।

আত্রাই উপজেলায় মোট ৭৬৫টি খামারে ৬ হাজার ১৪৮টি ষাঁড়, ১ হাজার ৩১০টি বলদ, ১ হাজার ৩০৭টি গাভী, ৮ হাজার ৮২৯টি ছাগল ও ১ হাজার ৫২৪টি ভেড়া।

বদলগাছি উপজেলায় মোট ৫ হাজার ৫৫৯টি খামারে ৪ হাজার ২৭১টি ষাঁড়, ২ হাজার ৮৮০টি বলদ, ৭ হাজার ৫২৩টি গাভী, ১৯টি মহিষ, ৮ হাজার ৭৭১টি ছাগল ও ১ হাজার ৮২৭টি ভেড়া।

মহাদেবপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৬৭৩টি খামারে ৪ হাজার ৮৫৪টি ষাঁড়, ১ হাজার ১৮৬টি বলদ, ৮ হাজার ৬৮৯টি গাভী, ৫৩টি মহিষ, ৭ হাজার ৯৫২টি ছাগল, ১ হাজার ৯৪৭টি ভেড়া ও অন্যান্য পশু ৩৪টি।

পত্নীতলা উপজেলায় ৩ হাজার ১৮৪টি খামারে ২ হাজার ৮০১টি ষাঁড়, ৮৪৫টি বলদ, ৪ হাজার ৬০২টি গাভী, ৪১২টি মহিষ, ৭ হাজার ৩৫৭টি ছাগল, ১ হাজার ৯৬৩টি ভেড়া ও অন্যান্য পশু ১৭২টি।

ধামইরহাট উপজেলায় ১ হাজার ৫২টি খামারে ১০ হাজার ২০টি ষাঁড়, ৩ হাজার ৭২১টি বলদ, ৪ হাজার ৪৮৩টি গাভী, ১ হাজার ১৬৬টি মহিষ, ৯ হাজার ২০১টি ছাগল, ৪ হাজার ৭৪০টি ভেড়া।

সাপাহার উপজেলায় ২ হাজার ৮৪৫টি খামারে ৪ হাজার ৭৫১টি ষাঁড়, ১ হাজার ২৯৮টি বলদ, ৭ হাজার ২৪৬টি গাভী, ৩২১টি মহিষ, ১০ হাজার ১০০টি ছাগল, ২ হাজার ৬৯৫টি ভেড়া ও অন্যান্য পশু ২১টি।

পোরশা উপজেলায় ৩ হাজার ২৫১টি খামারে ৫ হাজার ২৪৫টি ষাঁড়, ৩ হাজার ২৬০টি বলদ, ৮ হাজার ৩৯৬টি গাভী, ১ হাজার ১৩৯টি মহিষ, ৮ হাজার ২৩১টি ছাগল, ২ হাজার ৯০৪টি ভেড়া। 

নিয়ামতপুর উপজেলায় ২ হাজার ৬৪৮টি খামারে ৯ হাজার ৬৬৪টি ষাঁড়, ৩ হাজার ১৮০টি বলদ, ৭ হাজার ২৫টি গাভী, ১২২টি মহিষ, ৯ হাজার ৭৬০টি ছাগল, ২ হাজার ৮৮টি ভেড়া ও অন্যান্য পশু ৪ ।


মান্দা উপজেলায় ৫ হাজার ৩৬৯টি খামারে ৯ হাজার ৪৯০টি ষাঁড়, ১ হাজার ৬৭২টি বলদ, ১০ হাজার ৯৭৯টি গাভী, ১২০টি মহিষ, ৯ হাজার ৫৪৪টি ছাগল, ১ হাজার ৯৫০টি ভেড়া ও অন্যান্য পশু ১০১টি।

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নে নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই ) আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের নিজ হাতে গড়ে তোলা “ পল্লীশ্রী কৃষি প্রদর্শনী সম্বলিত খামার। এই খামারটি ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান কৃষি পদক অর্জন করে। খামারের পরিচালনাক উপজেলার বেলবাড়ি গ্রামের রণি জানান, তাদের খামার কোন প্রকার রাসায়নিক প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রাকৃতিক খামারের মাধ্যমে স্থানীয় প্রাণীনম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও চিকিৎসা প্রদান করা হয়।


জেলা প্রাাণীসম্পদ কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, তাদের পরামর্শ অনুযায়ী খামারিরা ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করেছেন। এ বছর খামারিরা তাদের প্রতিপালিত পশুর ভালো দাম পাবেন বলে প্রত্যাশা করেছেন অনেকেই।