বগুড়ার প্রাথমিক শিক্ষকদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে যুক্ত করলেন ইলিয়াস কাঞ্চন

মুজাহিদুল ইসলাম জাহিদ
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:০৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৫৮২ বার।

নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এবার বগুড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্পৃক্ত করলেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের (নিসচা) চেয়ারম্যান জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। বুধবার বগুড়া প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে (পিটিআই) তাদের জন্য দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করেন তিনি। নিসচা আয়োজিত ওই কর্মশালায় প্রধান বক্তাও ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। এতে জেলার প্রায় ২৫০জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশ নেন।

এর আগে সকাল ১০টায় সেখানে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। নিসচা বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চল হাইওয়ে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, টিএমএসএস’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা হোসনে আরা বেগম, পিটিআই’র সুপারিনটেনডেন্ট মুজাহিদুল ইসলাম, বিআরটিএ বগুড়ার সহকারি পরিচালক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন, নিরাপদ সড়ক চাই কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব সৈয়দ এহসান-উল-হক কামাল, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব লিটন এরশাদ, বেলায়েত হোসেন খান নান্টু, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আজাদ হোসেন এবং  অগ্রণী ব্যাংক বগুড়ার সুলতানগঞ্জ শাখার সিনিয়র অফিসার নূর আলম বক্তৃতা করেন।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় ইলিয়াস কাঞ্চন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে তাঁর যুক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘অনেকে ভেবে থাকবেন, আমার স্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বলে আমি নিরাপদ সড়কের জন্য দীর্ঘদিন থেকে রাজপথে লড়ে যাচ্ছি-আসলে তা নয়। আমার ভিতর একটা বোধ কাজ করেছে, সেটা হলো এদেশে আমার লাখ লাখ ভক্ত আছেন। যারা আমাকে অনেক ভালোবাসেন। তাদের এই ভালোবাসায় আমার বোধকে নাড়া দিয়েছে যে তাদের জন্য কিছু করতে হবে।’

দেশের সকল সড়ক নিরাপদ করার ক্ষেত্রে দেশের প্রত্যেক মানুষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানিয়ে নিসচা প্রধান বলেন, 'মানুষের ঘরে জন্ম নিলেই মানুষ হওয়া যায় না। তার ভিতর জ্ঞান ও মানবিক বোধ থাকতে হয়। আর এই বোধই মানুষকে মানুষ হতে শেখায়। কেউ যেন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা না যান, সেই বোধ থেকেই এই আন্দোলনে নিজেকে যুক্ত করেছি। দিন দিন এই আন্দোলনে মানুষের সম্পৃক্তা বাড়ছে।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, একজন শিক্ষক হাজারো শিক্ষার্থীকে সচেতন করতে পারেন। সে কারণেই আমরা শিক্ষকদের বেছে নিয়েছি। তবে প্রতিটি স্কুলে স্কুলে গিয়ে সচেতনতামূলক এই প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। তাই পিটিআইগুলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তারা যেন স্কুলের এ্যাসেম্বলীতে শিক্ষার্থীদের যদি মাসে দুইদিনও সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সচেতনতামূলক কথা বলেন সেটাই অনেক কাজে আসবে।‘

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ পর্ব পরিচালনা  করেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এর কেন্দ্রীয় মহাপরিচালক এহসানুল হক কামাল ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আজাদ।

কর্মশালার শেষভাগে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন বগুড়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দকে নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়। সেখানে পরবর্তী কাজের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। সব শেষে কর্মশালায়  অংশ নেয়া  শিক্ষকদের মাঝে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।