বগুড়ার শেরপুরের বিশ্বসেরা শিক্ষক শাহনাজ পারভীন প্রশিক্ষণ নিতে ফিলিপাইনে

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০১৯ ১২:৩১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২৭৬ বার।

‘আধুনিক স্কুল ব্যবস্থাপনা কৌশল’ বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে ফিলিপাইনে পৌঁছেছেন ‘বিশ্বসেরা শিক্ষক’ পুরস্কারপ্রাপ্ত বগুড়ার শেরপুরের শাহনাজ পারভীন। সাতদিনের সরকারি সফরে উপজেলার সদর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই শিক্ষিকা সোমবার সকালে ফিলিপাইনে গিয়েছেন।    

প্রশিক্ষণ শেষে আগামী ০৪ আগস্ট দেশের উদ্দেশ্যে ফিলিপাইন ত্যাগ করবেন এবং ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারি সচিব নাজমা সেখের স্বাক্ষরিত পত্রে এই তথ্য জানা যায়।

শিক্ষক শাহনাজ পারভীন নিজের পেশায় অনবদ্য ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা অর্জনে অবদান রাখায় বিগত ২০১৭সালে ‘বিশ্বসেরা শিক্ষক’ (গ্লোবাল টিচার প্রাইজ) পুরস্কার পান। লন্ডন ভিত্তিক ভারকি ফাউন্ডেশন বিশ্বের ১৭৯টি দেশ থেকে ২০ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে থেকে ৫০ জনের তালিকা করেন। এরমধ্যে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ‘বিশ্বসেরা শিক্ষক’ (গ্লোবাল টিচার) পুরস্কার পান শিক্ষক শাহনাজ পারভীন। এর আগেও ২০১০ সালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সেরা শিক্ষকের পুরস্কারেও ভূষিত হন তিনি। তার তিন বছর পর দেশের সেরা শিক্ষকের মর্যাদা পান তিনি।

শাহনাজ পারভীন ১৯৭৬ সালে বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী দাড়িগাছা গ্রামে এক শিক্ষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম মানিক উল্লাহ ও মা নুরজাহান বেগম পেশায় শিক্ষক। মায়ের কর্মস্থল পৌরশহরের উলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৫ সালে পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তিলাভ করেন তিনি। পরে ১৯৯০ সালে পাশের উলিপুর মহিলা মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও ১৯৯২ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে আলিম পাস করে। এরপর বগুড়া সরকারি আযিযুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। ছাত্র জীবনে বিভিন্ন সাময়িকীতে লেখা ছাপা হতো তাঁর।

বিশ্বসেরা ৫০শিক্ষকের তালিকায় থাকা বাংলাদেশের শাহনাজ পারভীন বগুড়ার শেরপুর উপজেলা সদর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০৩ সালে সহকারি শিক্ষিক হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষকতা পেশায় যোগদানের পর তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখে চলেছেন। তিনি ২০১০ সালে ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থ’ এ বিষয়ের উপর গবেষণাপত্র ‘অনুসন্ধান’ রচনা করেন। ২০১৪সালে ‘পাখির মুখে ফুলের হাসি’ নামে একটি ছড়ার বই প্রকাশ করেন। তিনি ২০১০ সালে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ এবং ২০১৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে তিনি উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কাব লিডার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এছাড়া ২০১৭সালে একুশে পদক পাওয়ার জন্য রাজশাহী বিভাগ থেকে মনোনয়নও পান তিনি।