ডেঙ্গু আতঙ্ক: ঈদের ছবির আমেজ নেই

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ অগাস্ট ২০১৯ ১৩:০৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৯০ বার।

ঈদুল আজহার বাকী মাত্র ৫ দিন। ঈদের আগের এই সময়টাতে ঈদের ছবির প্রচার প্রচারণায় জমজমাট থাকে দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো। কারণ সারা বছর হলগুলো অনেকটা ফাঁকা পড়ে থাকলেও ঈদের আগে চাঙা হয়ে ওঠে।  ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়, নতুন রঙ্গে রাঙ্গানো হয়। এসবই  ঈদের ছবির দর্শক টানতে। কারণ ঈদে সাধারণত সব শ্রেণীর মানুষই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া নতুন ছবি দেখার আগ্রহ দেখান। 

কিন্তু এবার ঈদুল আজহার ছবি নিয়ে বাড়তি কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছেনা এখনও। রাজধানীর বেশ কয়েকটি হলে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো এবারের ঈদে হলে পর্যাপ্ত দর্শক আসবে কীনা চিন্তায় আছেন হল মালিকরাও। কারণ  রাজধানীসহ পুরো দেশই ডেঙ্গু জ্বরের আতঙ্কে রয়েছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ দিনে ১১ হাজার ৪৫১ জন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৩ জনের মৃত্যু  হয়েছে। 

সরকারী বেসরকারী হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীতে যেন তিল ধরারও ঠাই নেই। দেশের ঠিক এই অবস্থায় ঈদের ছবির আমেজ থাকা তো দূরের কথা মানুষ তাদের জীবন নিয়েই সঙ্কায় আছেন বলে জানালেন বলাকা সিনেমা হলের ম্যানেজার শাহীন।তবে এরপরও আশাবাদের কথা জানালেন তিনি। জানালেন, এর মধ্যেও সিনেমার দর্শকরা ঠিকই হলে ছবি দেখতে আসবেন।

ডেঙ্গু আতঙ্ক ছাড়াও বন্যায় বাংলাদেশের ২০-২২ শতাংশ এলাকা  প্লাবিত হওয়ার খবর রয়েছে। বন্যা পরবর্তী সময়ে ওই জেলাগুলোর  হলগুলোতেও ঈদের ছবির কোন আমেজ চোখে পড়েনি। বন্যা পরবর্তী অবস্থায় দর্শকশূন্য থাকতে পারে হলগুলো। তার উপর দেশের প্রায় সব হলের পরিবেশই খুব একটা সুবিধার নয়। নোংরা পরিবেশ। সেই সঙ্গে মশার উপদ্রপ তো রয়েছেই।  এই পরিস্থিতে হলে দর্শক না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

এবারের ঈদে মুক্তি পাচ্ছে চারটি ছবি। তার মধ্যে রয়েছে —মনের মতো মানুষ পাইলাম না, বেপরোয়া, ভালোবাসার জ্বালা ও রাজকন্যা। এর মধ্যে রাজকন্যা ছবিটি হলে নয় ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার করা হবে চ্যানেল আইতে।

ঈদের ছবিতে দর্শক কতটা পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন জানতে চাওয়া হয় রাজধানীর  মধুমিতা সিনেমা হলের কর্ণধার ও বাংলাদেশ সিনেমা হল মালিক সমিতির সভাপতি ইফতেখার-উদ্দিন নওশাদের কাছে। তিনি বলেন, সব দিকেই ডেঙ্গু আতঙ্কে ভোগছে মানুষ। অনেক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। দেশের এই পরিস্থিতে ঈদের ছবি কতটা দর্শক পাবে সেটা বলা মুশকীল। তবে সাম্প্রতি এই পরিস্থিতির প্রভাব তো সিনেমা হলে অবশ্যই পড়বে। এ নিয়ে সিনেমা হল মালিকদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক রয়েছে।’

বার বার মুক্তির তারিখ পরিবর্তন করে অবশেষে ঈদে আসছে বেপরোয়া ছবিটি। ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার সিইও নিজেও জানালেন ডেঙ্গু আতঙ্কে হলে প্রভাব পড়ার কথা। তিনি বলেন,  বেপরোয়া প্রথম সপ্তাহে ৮০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরিকল্পনা আছে। দ্বিতীয় সপ্তাহে ছবিটির প্রেক্ষাগৃহ দ্বিগুণ হবে। দেশের এই পরিস্থিতিতে হলে প্রত্যাশিত দর্শকদের হলে আসা নিয়ে সবাই সঙ্কায় আছেন। তবে আশা করি অবস্থা পরিবর্তিত হবে। সব ঠিক হয়ে যাবে দ্রুত।

ঈদে মুক্তি প্রতিক্ষিত মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ ছবিটি পরিচালনা করেছেন জাকির হোসেন রাজু। দেশ বাংলা মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ছবিটিতে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিব খান ও বুবলী। জজ প্রযোজিত বেপরোয় জুটি হয়েছেন রোশান ও ববি। এটি পরিচালনা করেছেন কলকাতার রাজা চন্দ্র। আর ভালোবাসার জ্বালা ছবির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবাগত শাকিল খান ও অর্পা। ছবিটির গল্প, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা বশির আহমদের।