চলন্ত বাসে নার্সকে গণধর্ষণ-হত্যা মামলায় ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ অগাস্ট ২০১৯ ১৩:৪১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২২ বার।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় পিরিজপুরে চলন্ত বাসে নার্স তানিয়াকে গণধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।

চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক এ ঘটনার তিন মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার এ চার্জশিট দেয়া হয়।

এ ঘটনায় বাসচালক নুরুজ্জামান, হেলপার লালন, বোরহান, সুপারভাইজার রফিক, আল আমিন, লাইনম্যান খোকন, ল্যাংড়া বকুল, বাস মালিক আল মামুন এবং পরিবহন সার্ভিসটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারভেজ সরকার পাভেলকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

তবে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থেকে বাসে ওঠা এবং বর্বরোচিত ও লোমহর্ষক এ গণধর্ষণ এবং হত্যা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ধর্ষক ও হত্যাকারী বোরহানসহ এখনও তিন আসামি অধরা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকার কল্যাণপুরের ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়া বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে প্রথম রোজা রাখার উদ্দেশ্যে গত ৬ মে সোমবার কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুড়ি ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে ফিরছিলেন। তিনি বিমানবন্দর এলাকায় সন্ধ্যার পর মহাখালী থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের পিরিজপুর হয়ে কটিয়াদী উপজেলার ওপর দিয়ে চলাচলকারী স্বর্ণলতা পরিবহন সার্ভিসের একটি বাসে উঠেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে বাজিতপুরের পিরিজপুরের গজারিয়া জামতলী কলাবাগান এলাকায় তানিয়া চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন।

এ ঘটনায় তানিয়ার বাবা গিয়াসউদ্দিন বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় মামলা রুজু করলে পুলিশ বাসচালক নুরুজ্জামান, হেলপার লালন এবং লাইনম্যান রফিকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।

পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, বাসের অপর হেলপার বোরহানই প্রথম তানিয়াকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে নূরুজ্জামান এবং লালনও অংশ নেয়। তারপর তারা একযোযোগে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়।

আর এ ঘটনা পথচারীরা দেখে ফেললে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে দায়মুক্ত হওয়ার অপপ্রয়াস চালায়। এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচার দাবিতে কটিয়াদী উপজেলা উত্তাল হয়ে ওঠে। মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে কিশোরগঞ্জ, ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

পরে পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে ওই বাসের মালিক আল মামুনকেও গ্রেফতার করে। ওই পরিবহন সার্ভিসটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারভেজ সরকার পাভেলকেও আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেয়।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারওয়ার জাহান জানান, তানিয়া হত্যা ও গণধর্ষণের ঘটনায় বাসচালক নুরুজ্জামান, হেলপার লালন, বোরহান প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অন্যরা এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।