ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের দাবিতে ঢাকায় সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:৫৮ ।
দেশের খবর
পঠিত হয়েছে ২০৫ বার।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ৯টি ধারা সংশোধনের দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন করেছে সংবাদপত্রের সম্পাদকের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী এই মানববন্ধন করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদকেরা অংশ নেন। খবর সমকাল অনলাইন।

মানববন্ধনে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম তাদের ৭ দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, আলোচনা বন্ধ হয়নি। এটা ইতিবাচক। কিন্তু আলোচনার নামে যেন প্রহসন না হয়।

মাহফুজ আনাম যে ৭ দফা তুলে ধরেন সেগুলো হচ্ছে—  ১. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারাগুলো অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে; ২. এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনেই আনতে হবে; ৩. পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে, তবে কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেওয়া উচিত সেই বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে; ৪. কোনো সংবাদমাধ্যমের কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেওয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে; ৫. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতা দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে এবং সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেফতার করা যাবে না; ৬. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংগঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কি-না তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথভাবে শক্তিশালী করা যেতে পরে; ৭. এই সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইনে দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এই আইনে নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে সেগুলোর সুরক্ষা অত্যাবশ্যকভাবে করতে হবে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবীর, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহীদুজ্জামান খান ও করতোয়া সম্পাদক মোজাম্মেল হক লালু।

এর আগে গত শনিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে সম্পাদক পরিষদ।

তাদের ভাষ্য, উল্লিখিত ৯টি ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এজন্য ২১ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে ধারাগুলো সংশোধন করে আইনটি পরিবর্তনের দাবি পরিষদের।