ফোর্বস এশিয়া’য় নাম

ঘরছাড়া এক যুবকের উত্তরণের কাহিনি

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ অগাস্ট ২০১৯ ১৫:০০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৭ বার।

ঘর ছেড়েছিলেন ১১ বছর বয়সে। লক্ষ্য ছিল দিল্লি গিয়ে একটা নতুন জীবন পাবেন। কিন্তু তা হয়নি। ট্রেনে পানি বিক্রি করে ফুটপাথেই দিন কেটেছে তার। সেই জায়গা থেকে ‘ফোর্বস এশিয়া'-র ‘৩০ আন্ডার ৩০' তালিকায় নাম তোলা। রূপকথাকে যেন হার মানায় এই কাহিনি। কাহিনির নায়ক ভিকি রায়। 

ফেসবুক পেজ ‘হিউম্যানস অফ বম্বে'-তে নিজের জীবনের কাহিনি শেয়ার করেছেন ভিকি। 

ছোট্ট ভিকিকে বেঁচে থাকার তাগিদে হোটেলে বাসন ধোয়ার কাজও করতে হয়েছে। জীবনধারণ কতটা কঠিন টের পেয়েছিলেন হাড়ে হাড়ে। 

‘সালাম বালাক' নামের সেই এনজিও-র বদৌলতে দৈনিক তিনবেলার খাওয়া, পোশাক ও মাথার উপর ছাদের বন্দোবস্ত হয় ভিকির। স্কুলেও ভর্তিও করানো হয়। বদলে জেতে থাকে ভিকির জীবনের রূপরেখা। 

এই সময়ই এক ব্রিটিশ ফটোগ্রাফারের সঙ্গে দেখা হয় ভিকির। ভিকি বলেছেন, ‘‘আমি তাঁর কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। রাস্তায় বসবাসের ফলে আমি মানুষের মানবেতর জিবনযাপন দেখেছি। আমি চাইতাম ওঁর মতো করে ছবিতে সেটা ফুটিয়ে তুলতে।''

১৮ বছর বয়সে ভিকিকে ৪৯৯ টাকা দামের একটি ক্যামেরা কিনে দেয় সেই এনজিও। সেই সঙ্গে স্থানীয় এক ফটোগ্রাফারের কাছে প্রশিক্ষণ। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ভিকিকে।

ভিকি জানাচ্ছেন সেই ফটোগ্রাফারের সাহায্যে ‘স্ট্রিট ড্রিমস' নামের একটি চিত্র প্রদর্শনী করেন তিনি। সেই থেকেই তাঁর ছবি খ্যাতি পেতে শুরু করে। মানুষ পয়সা দিয়ে সেই সব ছবি কিনতে শুরু করে। ক্রমে সারা বিশ্ব ঘুরে ফেলেন ভিকি। নিউ ইয়র্ক, লন্ডন, দক্ষিণ আফ্রিকা, সান ফ্রানসিস্কো—একের পর এক জায়গায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছে ছবি তুলে।

ভিকি বলছেন, ‘‘কখনও কল্পনা করিনি আমি নিজের ভাগ্যকে বদলে ফেলতে পারব, এতটা।''

তাঁর ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, তিনি এমআইটি মিডিয়া ফেলোশিপ পেয়েছেন ২০১৪ সালে। আর ২০১৬ সালে ‘ফোর্বস এশিয়া ৩০ আন্ডার ৩০' তালিকায় নাম ঢুকে পড়ে তাঁর।

বুধবার সকালে নিজের জীবনের কথা পোস্ট করেন ভিকি। এখনও পর্যন্ত ফেসবুকে লাইক পড়েছে ২১ হাজার। আড়াই হাজারের বেশি মানুষ শেয়ার করেছেন তাঁর পোস্ট।

বহু নেটিজেন বহু রকম ভাবে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন ভিকিকে। একজন ‌লিখেছেন, ‘‘এই জন্যই বলে বৃষ্টির পরে সব সময় রোদ্দুর ওঠে।''