নতুন কমিটি গঠন করা হবে

বগুড়ায় বিএনপির উপজেলা থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ের সব কমিটি বিলুপ্ত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১৬ অগাস্ট ২০১৯ ১৩:৪৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৬০ বার।

বগুড়ায় বিএনপি’র উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের মেয়াদ উত্তীর্ণ সব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার বগুড়ায় দলের আহবায়ক কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাবেক সাংসদ হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর বাসভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। 
সভা শেষে শুক্রবার বিকেলে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপিকে তৃণমুল পর্যায়ে গতিশীল করার লক্ষ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিগুলো বিলুপ্ত করার কথা বলা হলেও দলীয় সূত্রগুলো বলছে, নতুন করে কমিটি গঠনের জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৩২ সদস্যের আহবায়ক কমিটির ওই সভায় ২২জন উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলা এবং পৌরসভা পর্যায়ের নতুন করে আহবায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ মাসের শেষ নাগাদ কমিটিগুলো গঠন করা হবে। এজন্য ২৫ আগস্টের মধ্যে প্রতিটি উপজেলা এবং পৌরসভার নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে প্রস্তাবিত কমিটির সদস্যদের নাম জমা দিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, নামগুলো পাওয়ার পর পরই যাচাই-বাছাই শেষে কমিটিগুলো গঠন করা হবে। এরপর উপজেলা এবং পৌরসভা কমিটিগুলো স্ব স্ব ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করবে।
এর আগে চলতি বছরের ১৫ মে মেয়াদ উত্তীর্ণ বগুড়া জেলা বিএনপি’র কমিটি বিলুপ্ত করে ৩১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর শাহে আলমকে ওই কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। অবশ্য বগুড়ায় বিএনপির ওই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামের অনুসারীরা। এক পর্যায়ে তারা আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন। 
দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার অপরাধে তখন কেন্দ্র থেকে বগুড়ায় যুবদলের ৬ নেতাকে বহিস্কার এবং বগুড়া জেলা বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও ৮ নেতার পদবী স্থগিত করা হয়। ওই ঘটনায় বিদ্রোহীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের আন্দোলন আরও জোরদার করেন। এমনকি ৩০ মে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীও আলাদাভাবে পালন করা হয়। তবে প্রায় ২০দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া বিদ্রোহীরা হঠাৎ করেই রণে ভঙ্গ দেন এবং গত ৬ জুন দলীয় কার্যালয়ের তালা খুলে দেন। 
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, লন্ডনে নির্বাসিত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই বিদ্রোহীরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান। তবে বিদ্রোহীরা সে সময় দাবি করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হবে এমন আশ^াসে তারা সমঝোতায় পৌঁছেছিলেন।
তৃণমুলের কমিটি বিলুপ্তির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির বিদায়ী সভাপতি মাফতুন আহমেদ খান রুবে। তিনি বলেন, ‘এটি এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এর মাধ্যমে আগামীতে প্রতিটি ইউনিটে দলের সাংগঠনিক শক্তি আরও বাড়বে বলেই আমরা মনে করি।’
বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ জানান, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিগুলো অনেক আগেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এজন্য সেগুলো পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আহবায়ক কমিটির সকল সদস্যের সম্মতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে যাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তাদের দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে কি’না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ব্যাপারে আন্তরিক। কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা না পেলে কোন কিছু করা সম্ভব নয়।’