মারা গেলেন ভারতীয় সংগীত কিংবদন্তি খৈয়াম

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ অগাস্ট ২০১৯ ১৪:৩৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬৪ বার।

কাভি কাভি, উমরাও জানের মতো বিখ্যাত হিন্দি ছবির সংগীত পরিচালক খৈয়াম আর নেই। সোমবার রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনাবসান হয় তার। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। 

খৈয়াম ট্রাস্টের মুখপাত্র প্রীতম শর্মা এক বিবৃতিতে বলেন, “বর্ষীয়ান সংগীত পরিচালক খৈয়াম সাহেব আর আমাদের মধ্যে নেই। জুহুর সুজয় হাসপাতালে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ প্রয়াত হলেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিগত কিছুদিন হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন তিনি।”

জুলাইয়ের শেষ দিকে ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে মুম্বাইয়ের হাসপাতালে ভর্তি হন খৈয়াম। ওই সময় থেকেই আইসিইউ-তে ছিলেন তিনি। তার দেখাশোনা করছিলেন স্ত্রী জগজিৎ কউর ও গজল গায়ক তালাত আজিজ।

এই গজল গায়ক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে রাতে জানান, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে সাড়ে ৯টা নাগাদ মারা যান খৈয়াম। ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে প্রায় ২১ দিন সাহসের সঙ্গে লড়াই করলেন তিনি। এখন আমি হাসপাতালেই রয়েছি।

বিখ্যাত এই শিল্পীর প্রয়াণের খবর পাওয়া মাত্রই শোকের ছায়া নেমে আসে ভারতীয় সংগীত মহলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকবার্তা জানাচ্ছেন অনেকে। শোক প্রকাশ করেছেন লতা মঙ্গেশকর।

এই সংগীত ব্যক্তিত্বের পুরো নাম মোহাম্মদ জাহুর খৈয়াম হাসমি। ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবে ১৯২৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জন্ম তার। ছোটবেলা থেকেই হিন্দি ফিল্মের গানের প্রতি টান ছিল। গান শিখতে একবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান দিল্লিতে, চাচার বাড়িতে। সুপ্ত ইচ্ছে, অভিনেতা হবেন। তবে শেষমেশ সে সব ছেড়ে ফিরে যান বাড়িতে। তখন থেকেই জোরকদমে উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম শুরু। প্রথমে পণ্ডিত অমর নাথ এবং পরে বাবা চিশতির কাছে সংগীতের হাতেখড়ি। বাবা চিশতির সহকারী হিসেবে ফিল্মে সংগীত পরিচালনা শুরু করেন।

পাঁচ থেকে শুরু করে নয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত— প্রায় চার দশক ধরে হিন্দি ফিল্মের পর্দায় গজলকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন খৈয়াম। তার সঙ্গে ছিল কাইফি আজমি বা জান নিসার আখতারের মতো কবির লেখনী। তবে শুধু গজল নয়, সুরের সৃষ্টিতে খৈয়াম অমর করেছেন বহু সাধারণ মানের লেখনীও।

সুরের জাদুতে তিনি চিরস্মরণীয় করেছেন ‘বাজার’ ছবির ‘দিখায়ি দিয়ে ইয়্যু’, ‘নূরী’ ছবির ‘আজা রে’, ‘কাভি কাভি’র ‘তেরে চেহেরে সে’ এবং ‘উমরাও জানে’র ‘ইন আঁখো কি মাস্তি’-র মতো গানগুলোকে।

১৯৬১ সালে ‘শোলা অউর শবনম’ ছবি দিয়ে সংগীত পরিচালনা শুরু করেন তিনি। ‘উমরাও জান’ ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পান। ‘কাভি কাভি’ ও ‘উমরাও জান’ তার ঝুলিতে এনে দেয় ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। সংগীত-নাটক একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন ২০০৭ সালে। ২০১১ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে।