এক যুগ ধরে বন্ধ আত্রাইয়ের শাহাগোলা রেলওয়ে ষ্টেশনের কার্যক্রম

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০১৮ ১২:০১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২০৪ বার।

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা রেলওয়ে ষ্টেশনের কার্যক্রম প্রায় এক যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে। স্টেশনটি এখন সুধুই স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে। ষ্টেশনের কার্যক্রম প্রায় এক যুগ যাবত বন্ধ থাকায় একদিকে যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে, অপর দিকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রেলের মূল্যবান সম্পদ। এ স্টেশনে দুইটি মেইল ট্রেন উত্তরা এক্সপ্রেস ও রকেট মেইলের স্টপেজ বহাল থাকলেও কখন ট্রেন আসে আর কখন যায় তা অনেকে জানতেই পারেনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সেই বৃটিশ শাসনামলে রেল স্থাপিত হবার পর আত্রাই ও রাণীনগরের মাঝে শাহাগোলাতে একটি স্টেশন স্থাপন করা হয়। সে সময় থেকেই এখানে লোকাল ট্রেনগুলোর স্টপেজ কার্যকর ছিল। পরবর্তীতে মেইল ট্রেনগুলোও এখানে স্টপেজ দেয়া শুরু করে। সেই সাথে ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য এখানে প্রতিস্থাপন করা হয় ডবল লাইন। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবল নিয়োগ দেয়া হয়। এদিকে ট্রেনগুলোর যাত্রা বিরতীতে এলাকার হাজার হাজার জনগণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা পেতে থাকে। সেই সাথে রাজস্ব আয়ও অনেক বাড়তে থাকে।
শাহাগোলা ওই অঞ্চলের একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হওয়ায় সেখান থেকে প্রতিদিন ট্রেন যোগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মালামাল পরিবহন করে রেলের আয় হত অনেক। কিন্তু গত প্রায় ১০ বছর যাবত এ ষ্টেশন থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয় ট্রেন ক্রসিং ব্যবস্থা, প্রত্যাহার করে নেয়া হয় সেখান থেকে জনবল। ফলে দিনের পর দিন অকেজো হতে থাকে ষ্টেশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনা। বতর্মানে ষ্টেশনটিতে দু’টি ট্রেনের স্টপেজ থাকলেও কখন আসে কখন যায় তা কেউ জানতে পারেনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে প্লাটফরমের ইট উঠে গিয়ে গোটা প্লাটফরম ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। প্লাটফরমের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। সামান্ন বৃষ্টি হলে এসব গর্তে পানি জমে যায়। ফলে যাত্রীদের ট্রেনে উঠা নামার জন্য প্লাটফরম ব্যবহারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়াও সেখানকার টিকিটঘরের বারান্দার টিন উধাও হয়ে গেছে। মূল ঘরের টিনগুলো একে একে খসে পড়ছে। সেইসাথে যাত্রীদের বসার স্থান, শৌচাগারসহ সব স্থাপনাগুলোই প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে শাহাগোলা গ্রামের আজাদ সরদার বলেন, এখানে কখন ট্রেন আসে, আবার কখন যায় তা কেই যানতে পারে না। ঘন্টা দেয়ারও কোন লোক নেই, টিকিট বিক্রিরও কোন লোক নেই। এখান থেকে যত যাত্রী চলাচল করে তাদেরকে বিনা টিকিটেই চলাচল করতে হয়।
এ ব্যাপারে শাহাগোলা গ্রামের সাবেক মেম্বার মো: ডালিম বলেন, এক সময় উপজেলা সদরে যাওয়ার ক্ষেত্রে ট্রেন যোগে খুব সহজেই যেতে পারতাম কিন্তু এখন তা আর সম্ভব হয়না। তিনি আরো বলেন ষ্টেশনটি সচল না থাকায় রেলের অনেক মূল্যবান আসবাবপত্রও বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ গুলো দেখারও কেউ নেই।
আলহাজ শামসুল হক বলেন, শাহাগোলা এই এলাকার একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এক সময় এখান থেকে ট্রেন যোগে আমরা ধান চাল উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পরিবহন করতাম। তখন এ ষ্টেশন ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। বর্তমানে রেলের কোন লোক এখানে নেই এ জন্য মালামালও পরিবহন করা যায় না। আর রেলও রাজস্ব পায় না।
এব্যাপারে সান্তাহার রেল জংশন ষ্টেশনের ষ্টেশন মাষ্টার রেজাউল করিম ডালিম বলেন 'জনবল সংকটের কারনে ষ্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।'