রোহিঙ্গা শিবিরে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ অগাস্ট ২০১৯ ১৩:৩৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৫ বার।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের’ গুলিতে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে কয়েকটি শিবিরে নিরাপত্তা ভয়ে এনজিওদের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তারই সূত্র ধরে অপরাধ দমন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণে পাচঁটি রোহিঙ্গা শিবিরে তিনটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। খবর সমকাল অনলাইন 

বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল ওইসব রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি ও টেকনাফের জাদিমুরা শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ খালেদ হোসেন, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কক্সবাজার সিনিয়র লিয়াজো অফিসার মোহাম্মদ বায়েজিদ, টেকনাফ মডেল থানা ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহাসহ অনেকে। 

শিবির পরিদর্শনকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, 'রোহিঙ্গাদের জানমালের নিরাপত্তা ও বিভিন্ন অপরাধ দমনসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই পাচঁটি রোহিঙ্গা শিবিরে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টেকনাফের জাদিমুরা, শালবাগান, নয়াপাড়া, আলীখালী ও লেদা রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখা হয়েছে। এসব শিবিরে তিনটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের জায়গা নির্ধারণ করা হচ্ছে।' 

এত দ্রুত রোহিঙ্গা শিবিরে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হবে উল্লেখ করে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, 'এত অল্প সময়ে বিশ্বের কোন দেশ এত মানুষকে আশ্রয় দেয়নি। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদেরকে আমরা খাবার, আশ্রয় ও চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। যে কোন বিনিময়ে রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে এবং যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যাকারিদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের মুখোমুখি করা হবে।'   

এদিকে স্থানীয়রা দাবি করেছে, পুলিশ ক্যাম্প করার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে দ্রুত তাদের জন্য সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে। টেকনাফের জাদিমুরা, শালবাগান, লেদা, নয়াপাড়া ও আলীখালী রোহিঙ্গা শিবিরগুলো দিন দিন ভয়ানক হয়ে উঠছে। এসব শিবিরের আশপাশের স্থানীয় লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।   

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে আন্তজার্তিক সহযোগিতায় রোহিঙ্গাদের দ্রুত রাখাইনে ফেরত পাঠানো দরকার। এর ব্যত্যয় ঘটলে শুধু উপজেলা নই, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা দুঃসহ হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, যতদিন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না ততদিন তাদেরকে এক জায়গায় রাখতে হবে। এজন্য রোহিঙ্গা শিবিরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ জরুরি। নতুবা তারা যেকোনো স্থান দিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যাবে অতীতের মত।

শরণার্থী ত্রাণ, প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি ও টেকনাফের জাদিমুরা শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ খালেদ হোসেন জানান, তার রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে, সেজন্য জায়গাও নির্ধারণ করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, গত ২২ আগস্ট রাতে টেকনাফের জাদিমুরা রোহিঙ্গা শিবিরে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুককে গুলি করে হত্যা করা হয়।