ভাতার কার্ড দেওয়ার কথা বলে বিধবার সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ মেম্বারের বিরুদ্ধে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ অগাস্ট ২০১৯ ১২:১৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৪ বার।

ভাতার কার্ড দেওয়ার কথা বলে প্রতিবন্ধী বিধবার সব সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক মেম্বার ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। 

কুষ্টিয়ার খোকসার গোপগ্রাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুস সামাদ সান্টু ও তার নিকট আত্মীয় ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন শুধু বিধবা হালিমার সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে নিয়েই খান্ত হননি, হালিমার সদ্য বিধবা পুত্রবধূ সালমার তিনিটি দোকান ঘর দখল করে নিয়েছেন। ফলে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে পরিবারটির। খবর সমকাল অনলাইন 

জানা গেছে, গোপগ্রাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ৫ সন্তানের জনক মৃত মো. মন্টু বিশ্বাসের গোপগ্রাম বাজারে তিনটি দোকান ঘরের ওপর নজর পরে স্থানীয় মেম্বার আব্দুস সামাদ সান্টু ও ঘরের ভারাটিয়া আলতাফ হোসেনের। দোকান ঘরের মালিক হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন তারা। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মৃত মন্টুর মা হালিমা খাতুনকে বিধাব ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসেন। সেখানে বৃদ্ধার কাছ থেকে কাগজ পত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি রাজি না হয়ে গ্রামে আসেন। এরপরও চক্রটি কৌশলে মৃত ছেলের (মন্টু) আজবা হিসেবে পাওয়া বৃদ্ধার নামের ২.৫৩ শতাংশ জমির দলিল তৈরি করে নেন। পরে সদ্য বিধবা সালমার পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস্য গোপগ্রাম বাজারের দোকান ঘরগুলো দখলে নিয়ে ভাড়া বন্ধ করে দেন। 

শুক্রবার সকালে সালমার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, গত এক বছরে ছেলে, স্বামী ও শ্বশুরসহ পরিবারের তিনজনকে হারিয়েছেন তারা। ১১ মাস আগে হঠাৎ করে দোকানের ভারাটিয়া আলতাফ ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সালিশ করেন। সালিশে ভাড়া পরিশোধের রায় দেওয়া হয়। কিন্তু ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ সান্টু ও ভারাটিয়া আলতাফ তার শ্বাশুরি বৃদ্ধা হালিমাকে ভাতার কার্ড দেওয়া কথা বলে উপজেলায় নিয়ে যান। সেখানে তার কাছ থেকে কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি কাগজে স্বাক্ষর করেননি বলে বাড়ি ফিরে জানান।

হালিমা খাতুন জানান, সান্টু মেম্বর বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে তার এক মেয়ে জামাইয়ের মাধ্যমে উপজেলায় নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেখানে কোন কাগজে টিপ দেননি। এরপর তারা চক্রান্ত করে এতিম শিশুদের ঠকানোর চেষ্টা করছে। 

দখলদার আলতাফ অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ছেলের মৃত্যুর পর মা যে আজবা সম্পত্তি পান তারা সেই অংশ নিয়েছেন। দখলে রাখা ঘর ছেড়ে দেবেন। 

মেম্বার আব্দুস সামাদ সান্টু বলেন, বৃদ্ধা হালিমাকে তার মেয়ে জামাই রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে জমি লিখে দিয়েছেন। তারা হালিমাকে কার্ড দেওয়ার কথা বলেননি।  

গোপগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হেসেন বলেন, মেম্বার যে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তা খুবই ন্যক্কারজনক। তার কাছ থেকে মিথ্যা বলে নমিনি সাটিফিকেট নিয়েছেন। মৃত মন্টুর নামে যে জমি আছে তার সবই পদ্মা নদীর চরে। আসলে গোপগ্রাম বাজারের দোকানগুলো দখল করাই এ চক্রের উদ্দেশ্য। এদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।