আসামি থেকে টাকায় আদায়, উলঙ্গ করে পেটানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:৪৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৭৫ বার।

সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে মামলা থেকে বাদ দিতে ৫০ হাজার টাকা আদায়, উলঙ্গ করে পেটোনোসহ পরিবারের সদস্যদের মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার রাত ৮টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুরের গুমাইল এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আশুলিয়া থানার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আতিকের ভাই মজিদ অভিযোগ করেন, শনিবার রাত ৮টার দিকে তার ভাই আতিককে সাদা পোশাকে ধরতে আসেন এসআই মনিরুজ্জামানের তিন সোর্স। এ সময় দোকানের সামনে আতিককে ধরে ফেলে তারা। পরে তিনি তাদের পরিচয় জানতে চাইলে কোনো উত্তর না দিয়ে হঠাৎ আতিককে মারতে মারতে উলঙ্গ করে ফেলে সোর্সরা। তিনি বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।

মজিদ জানান, আমার মা, চাচি, চাচাসহ স্থানীয় কয়েকজন এগিয়ে আসলে তাদেরও লাঞ্ছিত ও মারধর করে তারা।

মজিদ আরো বলেন, এরপর এসআই মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থলে এসে আমার দোকানে মাদক আছে ও আমি মাদক ব্যবসা করি এমন কথা বলে দোকানে তল্লাশি করে। এ সময় দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে কিস্তির ৬৯ হাজার টাকা ও সেখানে থাকা আমার মোবাইল ফোন জোরপূর্বক নিয়ে যায়।

আতিকের মা মরজিনা বেগম বলেন, দুই ছেলেকে মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে তিনি দেবর হাবু ও তার স্ত্রীসহ বাধা দিতে গেলে তাদেরও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে পুলিশের লোকজন।

তারা অভিযোগ করেন, কিছুদিন আগেও এসআই মনিরুজ্জামান বাড়িতে এসে মামলা থেকে আতিকের নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এরপর আবারো টাকার জন্য চাপ দিলে আমরা অস্বীকৃতি জানাই। পরে সে তার সোর্সদের দিয়ে আমাদের ওপর হামলা ও নির্যাতন করে।

মরজিনা বেগম আরো বলেন, আমার ছেলে যদি মাদক ব্যবসায়ী হয় তাকে প্রয়োজনে ক্রসফায়ার দিয়ে দিক কিন্তু পুলিশ কয়দিন পর পরই টাকার জন্য বাড়িতে এসে হামলা চালায় আমাদেরকে মারধর করে আমরার এর সুষ্ঠ বিচার চাই। 
৬৯ হাজার টাকা ও মোবাইল লুটের বিষয়ে জানতে চাইলে তা অস্বীকার করে এসআই মনিরুজ্জামান বলেন, আতিক একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় চারটি মাদকের মামলা রয়েছে যার মধ্যে একটির ওয়ারেন্ট নিয়ে আমরা তাকে ধরতে যাই। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই মনিরুজ্জামান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুই কনস্টেবল আমির ও রাফি মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আতিককে গ্রেপ্তার করতে যায়। এ সময় তাদের বাধা দেয় আতিকের ভাই মজিদ ও তার স্ত্রী। আতিককে গাড়িতে তোলা হলে তার স্ত্রী আমাদের ড্রাইভারের চুল টেনে ধরে। পরে কনস্টেবল আমাকে ফোন করলে আমি সেখানে যাই এবং আসামিকে থানায় নিয়ে আসি।

তিনি বলেন, আতিককে ধরতে যাওয়ার আগে তার ক্রেতা সেজে তার কাছে মাদক কিনতে যাই। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩০০ পুরিয়া হেরোইন এবং ৫৭ পিস ইয়াবাসহ আতিককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসি।

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাইদুর রহমান জানান, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আসামির পরিবারকে মারধর ও লুটপাটের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।