তাহেরীর বিরুদ্ধে মামলা করা সেই আইনজীবীর ফেসবুক আইডি হ্যাকড
পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
বিতর্কিত বক্তা মুফতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর বিরুদ্ধে মামলার পর এবার ফেসবুক আইডি হ্যাক করার অভিযোগে জিডি করেছেন আলোচিত ওই মামলার বাদী সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইব্রাহীম খলিল।
বোরবার তিনি ঢাকার কোতোয়ালি থানায় গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। খবর সমকাল অনলাইন
জিডিতে মামলার বাদী উল্লেখ করেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার চাইপুর এলাকার নাজিম উদ্দিন মোল্লার ছেলে মো. গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর বিরুদ্ধে রোববার বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে পিটিশন মামলা দাখিল করি।
এরপর বিষয়টি নিয়ে ইলেকট্রিক, প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইনে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এতে বিবাদী ও তার সমর্থকরা সকাল ১০টা থেকে আমার ফেসবুক আইডি Adv Md brahir Khalil আইডি হ্যাক করে আজে-বাজে কমেন্ট করতে থাকে। সোমবার পৌনে ১টা থেকে ফেসবুক আইডিতে আমি লগইন করতে পারছি না। আমার ধারণা বিবাদি এবং বিবাদির হুকুমে তার সমর্থকরা আমার ফেসবুক আইডিটি হ্যাক করেছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য ইব্রাহীম খলিল যুগান্তরকে বলেন, তাহেরীর সমর্থকরাই আমার অ্যাকাউন্টটি রিপোর্ট করে ডিজেবল করে দিয়েছে। আমি আমার ফেসবুক অ্যাকউন্টে ঢুকতে পারছি না।
এর আগে রোববার ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের ওপর আঘাত সৃষ্টির অভিযোগে দাওয়াতে ঈমানী বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ২৬৯/১৯।
বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে এ মামলা করা হয়।
মামলার বাদী বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নিয়েছেন। তবে মামলাটি তদন্ত করতে কোনো সংস্থাকে দেয়া হবে তা নির্ধারণ করতে সোমবার আদেশ দেবেন আদালত। এদিকে মামলার বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা আমি আইনিভাবে মোকাবেলা করব।
মামলার অভিযোগে বাদী বলেন, ইসলাম ধর্মে ওয়াজ মাহফিলের মধ্যে নাচ-গান সমর্থন করে না। কিন্তু গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী তার মাহফিলে এমনটাই করছেন।
তাহেরী ওয়াজ মাহফিলের নামে অশ্লীলতা ছড়াচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন ইব্রাহীম খলিল।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ভাইরাল তার ‘বসেন বসেন বইসা যান’, ‘ঢেলে দেই’ ইত্যাদি বাক্য ওয়াজে ব্যবহার করে তিনি ইসলাম ধর্মকে ব্যঙ্গ করেছেন। জিকিরের সময় এ রকম শব্দ উচ্চারণ ইসলামের কোথাও উল্লেখ নেই।
ইসলামের রীতিনীতি অনুযায়ী তাহেরীর এ সব কর্মকাণ্ড মুনাফেকির শামিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তাহেরী কোরআন ও হাদিস অবমাননা করেছেন বলেও দাবি করেন মামলার বাদী ইব্রাহীম।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এক মাহফিলে কোনো ব্যক্তির উক্তি দিয়ে বিড়ি খাওয়ার একটি দোয়া শ্রোতের শোনান তাহেরি। যা ইসলামের কোথাও নেই। তার এ সব বক্তব্যে ইসলাম ধর্মকে ব্যঙ্গ ও অবমাননা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তাহেরীর এ সব কর্মকাণ্ড ইসলামে বিদ'আত বলে গণ্য। তিনি ইসলাম ধর্মের প্রচারকারী নন, অপপ্রচারকারী।
তাকে এখনই না থামালে মানুষ ধর্ম বিষয়ে ভুল অনুধাবন করবে জানিয়ে ইব্রাহীম বলেন, এ জন্যই তাহেরীর বিরুদ্ধে মামলা করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
মুফতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর দাওয়াতে ইমানী বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জিকিরের সময় নেচে-গেয়ে ‘বসেন বসেন, বইসা যান’ বলায় সমালোচিত হন তাহেরী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে তৈরি হয় নানা ট্রল ও ভিডিও। এরপর কিছুদিন ওয়াজ বন্ধ রেখেছিলেন তিনি। সম্প্রতি ফের আলোচনায় এলেন এই বক্তা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেয়া মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরী সুফিধারার আলেম হিসেবে পরিচিত।