ইতিহাস গড়ে ফিরলেন রহমত

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১১:২৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২০৬ বার।

দলীয় ১৯ রানে ক্রিজে এসেছিলেন রহমত শাহ। এসেই দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যান তিনি। গড়েন একটার পর একটা জুটি। সেই সঙ্গে তুলে নেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরিও। শেষ পর্যন্ত তার এই প্রতিরোধ ভাঙেন বাংলাদেশের তরুণ স্পিনার নাঈম হাসান। আগের বলে দারুণ এক বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রহমত। পরের বলেই তাকে ঘূর্ণি ফাঁদে ফেলেন নাইম।

এর আগে দেশের হয়ে একাধিক রেকর্ড গড়েন রহমত। টেস্টে প্রথম আফগান সেঞ্চুরিয়ান তিনি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীও। ফিফটি হাঁকানোতেও উপরের দিকে তিনি।

এখন পর্যন্ত ৩ টেস্টের ক্যারিয়ারে ১ সেঞ্চুরি ও ২ ফিফটি করেছেন রহমত। এ নজির আর কোনো আফগানের নেই। সর্বসাকুল্যে ৫ ইনিংসে তার রান ২৯৪। গড় প্রায় ৫০ এর কাছাকাছি। এদিক থেকে রহমতের আশেপাশেও কাবুলিওয়ালাদের কোনো ব্যাটসম্যান নেই। শুধু তার সমান ২টি ফিফটি করেছেন আসগর আফগান।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৫ উইকেটে ২১৭ রান তুলেছে আফগানিস্তান। আসগর ৬১ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। নতুন সঙ্গী হিসেবে আছেন আফসার জাজাই। তিনি ৮ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন।

বৃহস্পতিবার বন্দরনগরীর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং নেন আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ খান। টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকেই টস ভাগ্যকে পাশে পান তিনি। এতে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে সবচেয়ে কম বয়সে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার রেকর্ড গড়েন স্পিন জাদুকর।

তবে প্রথম ইনিংসে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা শুভ হয়নি আফগানদের। দলীয় স্কোরবোর্ডে ১৯ রান উঠতেই ফিরে যান ওপেনার ইহসানউল্লাহ। তাকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তাইজুল ইসলাম। এ নিয়ে ক্রিকেটের দীর্ঘ পরিসরে উইকেটের 'সেঞ্চুরি' করেন তিনি।

ওয়ানডাউনে নেমে ইব্রাহিম জাদরানকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন রহমত শাহ। তবে তাতে বাদ সাদেন সেই তাইজুল। ইব্রাহিমকে তুলে নিয়ে জুটি ভাঙেন বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ স্পিনার।

লাঞ্চ বিরতির খানিক আগে হাশমতউল্লাহ শাহীদিকে বিদায় করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ফলে চাপ নিয়ে লাঞ্চে আসেন সফরকারীরা। আর ফুরফুরা মেজাজে মাঠ ছাড়েন স্বাগতিকরা। ফিরে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন রহমত শাহ ও আসগর আফগান। ভালোই খেলছিলেন তারা। তবে সেই পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। এ কারণে ২৫ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে।

বৃষ্টি থামলে ফের খেলা শুরু হয়। এর আগে দলীয় ৭৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল আফগানিস্তান। আসগরকে নিয়ে সেই চাপ কাটিয়ে ওঠেন রহমত। ধীরে ধীরে জমে ওঠে তাদের জুটি। এক পর্যায়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন তারা। ছোটাতে থাকেন স্ট্রোকের ফুলঝুরি। তাতে এগোতে থাকেন সফরকারীরা।

পথিমধ্যে ফিফটি তুলে নেন রহমত। পরে এগোতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। এ পথে তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন আসগর। ফলে কাঙ্ক্ষিত তিন অংকের ইনিংস ছুঁতে বেগ পেতে হয়নি এ টপঅর্ডারকে। নাঈম হাসানকে বাউন্ডারি মেরে ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি।

তবে প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌঁছার পর স্থায়ী হতে পারেননি রহমত। টেস্ট ক্যারিয়ারে তদুপরি আফগানিস্তান হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকানোর পরই আউট হন তিনি। নাঈমের বলেই স্লিপে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত আসেন ইনফর্ম ব্যাটার। দলীয় ১৯৭ রানে ফেরার আগে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০২ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস খেলেন রহমত।

এর রেশ না কাটতেই এ স্পিনারের বলে সোজা বোল্ড হয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী। রানের খাতায় খুলতে পারেননি তিনি। এরই মধ্যে ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফরম্যাটের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন আসগর।