নাফ নদী দিয়ে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২:৪৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮৩ বার।

কক্সবাজারের টেকনাফের জলসীমানা দিয়ে আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শনিবার ভোর রাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া জলসীমানা দিয়ে ৬ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়। এর আগেও ২২ জন রোহিঙ্গাকে অনুপ্রবেশের সময় প্রতিহত করে বিজিবি তাদের মিয়ানমার ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

টেকনাফ-২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার জানিয়েছেন, ভোররাতের দিকে নয়াপাড়া নাফ নদের কুতুবদিয়া ঘাট এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে মিয়ানমারের ছয় রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। হ্নীলা নয়াপাড়া বিশেষ ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মোহাম্মদ শাহ আলমের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টহল দল তাদের আটক করে। তাদের মধ্যে তিনজন নারী এবং তিন শিশু ছিল। পরে গভীর রাতে আটক রোহিঙ্গাদের একই সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, ‘নতুন করে কোনও রোহিঙ্গা ঢুকতে দেওয়া হবে না। অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্তে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি। সম্প্রতি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশকালে ২২ রোহিঙ্গাকে প্রতিহত করা হয়েছে। পাশাপাশি মাদক পাচার ঠেকাতে মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’

এ ব্যাপারে টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম জানান, ‘মিয়ানমারে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গারা কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছে। এ কারণেই তারা এখনো বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আগের মতো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারছে না।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, ‘মাঝে মধ্যে সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে থাকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। পুরোনোসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। জাতিগত নিধন ও গণহত্যার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনও রোহিঙ্গা শর্তবিহীন মিয়ানমার ফেরত যেতে রাজি হয়নি।