রংপুরে একা একা রিটা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:২১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬২ বার।

রংপুর সদর-৩ আসনের উপনির্বাচনে সোমবার একাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়ছেন রিটা রহমান। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা শুরু থেকেই রিটা রহমানের বিরোধিতা করে আসছেন। যদিও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে রিটা রহমানকে তারা সমর্থন দিয়েছিলেন। 

সে সময় রিটা রহমান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তার দল পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটে দাঁড়ান।

তবে রোববার বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে রংপুর-৩ আসনে মনোনয়ন দিলে তিনি দল বিলুপ্ত ঘোষণা করে বিএনপিতে একীভূত হয়ে যান। 

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাকালীন সদস্য জিয়াউর রহমানের সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে রিটা রহমানের নেতৃত্বে  ২০১৮ সালের নভেম্বরে পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ গঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রিটাকে বিএনপি নেত্রী বলে সম্বোধন করেন। বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রিটাকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন বলে জানানো হয়। 

যদিও সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় পরিবারের কয়েখজন সদস্য ছাড়া দলের কেউ রিটার সঙ্গে ছিলেন না। একই সময়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু রংপুরে ছিলেন। রংপুর শহরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপি কার্যালয়ে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রিটা রহমানের সঙ্গে তার দেখা হয়নি। 

মনোনয়নপত্র দাখিল করে এসে রিটা রহমান অবশ্য বলেন, দলীয় কোন্দল ঠিক হয়ে যাবে। আচরণবিধি মেনেই আমি মনোনয়ন দিয়েছি। বিজয় আমাদের হবেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, স্থানীয় কাউকে মনোনয়ন দিলে এ আসনে বিএনপির জয় নিশ্চিত ছিল। 'উড়ে এসে জুড়ে বসা' রিটা রহমানকে মানতে পারছেন না স্থানীয় নেতাকর্মীরা। 

এর আগে রোববার রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রিটা রহমান কখনো বিএনপি করেননি। অথচ মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মোজাফফর হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া হোসেনকে মনোনয়ন দিলেও ভালো হতো। তা ছাড়া আমরা এত দিন বিএনপির রাজনীতি করে আসছি। সরকারের জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছি। আমাদের মূল্যায়ন না করে দল রিটা রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছে এটা খুবই দুঃখজনক’।

সোমবার ছিল রংপুর-৩ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। 

এদিন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও দলটির চেয়ারম্যান এরশাদের ভাতিজাসহ নয় প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন।

তারা হলেন, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, জাতীয় পার্টির রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ, বিএনপির রিটা রহমান, খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল, গণফ্রন্টের কাজী শহিদুল্লাাহ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এরশাদের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ার ও বিএনপির মহানগর কমিটির সহসভাপতি কাওসার জামান বাবলা।

রংপুর আঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন জানান, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন তা জমা দেননি।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের মহানগর কমিটির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শ্রমিক নেতা এম এ মজিদ ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক শিল্পপতি এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেননি।

এদিকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে রংপুর-৩ আসনটি শূন্য হয়। এ আসনে বিএনপি থেকেও চারজন মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে আগামী ৫ অক্টোবর ভোট গ্রহণের দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।