ধুনটে চার শিশুকে ধর্ষনের স্বীকারোক্তি: ধর্ষক জয়নাল কারাগারে

আমিনুল ইসলাম শ্রাবণ
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২:৪৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬৭ বার।

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় চার শিশুকে ধর্ষনের ঘটনা স্বীকার করেছে ধর্ষক ভ্যান চালক জয়নাল আবেদীন। সে বুধবার বিকেলে বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় ঘটনার স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। পরে ধর্ষক জয়নাল আবেদীনকে কারাগারে পাঠানের নির্দেশ দেন ম্যাজিষ্ট্রেট শহিদুল ইসলাম। 

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের গোপালপুর খাদুলী গ্রামের মৃত ফজর আলীর ছেলে জয়নাল আবেদীন (৫২) পেশায় একজন ভ্যান চালক। তার দুই ছেলে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় থাকে, ১ মেয়ে বিবাহ হওয়ায় স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করে। গ্রামের বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে জয়নাল বসবাস করে আসছিল। দু’সপ্তাহ আগে জয়নালের স্ত্রী ঢাকায় ছেলেদের কাছে যাওয়া বাড়িতে একা থাকে জয়নাল আবেদীন। 

ওসি ইসমাইল হোসেন মামলার বরাত দিয়ে বলেন, ভ্যান চালক জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে একটি জলপাই গাছ রয়েছে। প্রতিবেশি শিশুরা জলপাই খুটতে ওই বাড়ির আঙ্গিনায় যাওয়া আসা করে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর ৮বছর বয়সি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ২জন শিক্ষার্থী জলপাই এর জন্য ওই বাড়ির আঙ্গিনায় যায়। এসময় বাড়িতে জয়নাল একা ছিল। জলপাই দেবার কথা বলে সে ওই দুই শিশুকে ঘরে নিয়ে যায়। ঘরের বিছানায় তাদের বসতে দিয়ে জয়নাল তাদের জলপাই দেয়। এসময় সে একটি খেলা দেখানোর নামে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে ওই দুই শিশুকে ‘স্বামী-বউ’ খেলতে বলে সে। তার প্রলোভনে খেলতে রাজি হয় দুই শিশু। খেলার ছলে তাদের স্ত্রী বানিয়ে বাসর সাজাই জয়নাল। এক পর্যায়ে ওই দুই শিশুদের বাসর খেলার নামে ধর্ষন করে সে। 

ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, আরো দু’জন শিশুর সাতে গত রোববার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটনায় ধর্ষক জয়নাল। ওই দিন ৬ বছর বয়সি আরো দুই শিশুকে ফাঁদে ফেলে জয়নাল। ওই দুই শিক্ষার্থী স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। একই পদ্ধতিতে ওই দুই শিশুকেও ধর্ষন করেছে জয়নাল। ধর্ষনের সময় যন্ত্রনায় চিৎকার করার চেষ্টা করলে সে শিশুদের মুখ চেপে ধরে। ধর্ষনের পর ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য শিশুদের নানা প্রকার ভয়ভীতি দেখায়।

মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনর-রশিদ সেলিম বলেন, রবিবারের ধর্ষনের ঘটনায় দুই শিশু অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাদের স্বজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে যায়। পরে তারা শিশুদের সাথে কথা বলে ধর্ষনের ঘটনাটি জানতে পারে। বিষয়টি প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হলে শুক্রবারে ধর্ষনের ঘটনাটিও প্রকাশ পায়। পরে বিষয়টি নিয়ে শিশুদের অভিভাবকরা আমাকে অবগত করেন। আমি বিষয়টি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে ধর্ষক জয়নালকে অবগত করে। পরে রবিবার ও শুক্রবার পৃথক দু’টি ঘটনায় দু’জন অভিভাবক বাদি হয়ে ধুনট থানায় ধর্ষক জয়নালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। 

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, বুধবার বিকেলে ধর্ষক জয়নাল আবেদীনকে বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে বিচারকের নিকট সে ধর্ষনের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে বিচারক ধর্ষক জয়নালকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ম্যাজিষ্ট্রেট শহিদুল ইসলাম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বুধবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চার শিশুর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরে ওই শিশুরা নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট ঘটনার প্রেক্ষিতে জবানবন্দি দিয়েছে।