বগুড়ার অভিজাত জলেশ্বরীতলার পরিবেশ উন্নয়নের দাবিতে ব্যবসায়ী সমিতির মানববন্ধন

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ১১:২৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬৩০ বার।

বগুড়া শহরের অভিজাত জলেশ্বরীতলা এলাকার সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে শহরের ইয়াকুবিয়া মোড় থেকে জজ কোর্ট মোড় পর্যন্ত সকল দোকান বন্ধ রেখে এক ঘন্টা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে সমিতিভুক্ত বিপুল সংখ্যক দোকান মালিক-কর্মচারী অংশ নেন।
বগুড়া শহরের জিরো পয়েন্ট ‘সাতমাথা’ থেকে প্রায় ৫০০ গজ দক্ষিণে ইয়াকুবিয়া মোড় থেকে কালিবাড়ি হয়ে জজকোর্ট পর্যন্ত এক সময় আবাসিক এলাকা হিসেবেই পরিচিত ছিল। প্রায় দুই দশক আগে সেখানে  সুপার শপ, ফাস্ট ফুড, তৈরি পোশাক, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এবং শপিং মলসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এছাড়া ওই এলাকায় শিশুদের জন্য একাধিক স্কুল এবং কোচিং সেন্টারও গড়ে উঠেছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোচিং করতে আসা স্কুল-কলেজের কতিপয় শিক্ষার্থী ও শহরের বিভিন্ন এলাকার বখাটেরা দল বেঁধে জলেশ্বরীতলা এলাকায় দ্রুত গতিতে মোটর সাইকেল চালিয়ে স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘœ করছে। এছাড়া সড়কের মোড়ে মোড়ে, দোকানের সামনে-সিঁড়িতে, বিভিন্ন গলির মুখে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে আড্ডা ও জটলা করে সার্বিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্থ করছে।
সর্বশেষ বগুড়া জিলা স্কুলের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহনেচ্ছু একদল ‘র‌্যাগ ডে’র নামে (শিক্ষার্থী বিদায় অনুষ্ঠান) চলতি বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর জলেশ্বরীতলা এলাকার পরিবেশ নানাভাবে নোংরা করে। ওইদিন শিক্ষার্থীরা সকাল ৭টার দিকে জলেশ্বরীতলা এলাকার বন্ধ থাকা প্রায় দুই শত দোকানের সার্টার, সাইনবোর্ড, দোকানের দেওয়াল, সিঁড়ি এবং গ্লাসে স্প্রে রঙ ব্যবহার করে অশালীন লেখনি এবং ছবি আঁকে। ওই ঘটনায় বগুড়া জিলা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার মানববন্ধন চলাকালে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সকলের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি, নৈতিকতা সৃষ্টি এবং দৃষ্টিভঙ্গির উন্নয়নে শিক্ষকদের এগিয়ে আসার আহবান জানান। তারা বলেন, ‘যদি শিক্ষকরা এগিয়ে না আসেন তাহলে হয়তো বখাটেদের মোকাবেলায় আমাদেরই লাঠি হাতে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু সেটা আমরা কখনোই চাই না। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। বখাটেপনার কোন ছাপ যেন তাদের মধ্যে দেখা না যায়।’
বক্তারা বখাটেপনা রুখতে পুলিশ প্রশাসনের আরও কঠোর নজরদারির অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘অতীতে আমরা দেখেছি যে, যখনই আমরা সমিতির পক্ষ থেকে সোচ্চার হয় তখন দু’একদিনের জন্য পুলিশ সোচ্চার হয়। এরপর আবার সব কিছু আগের অবস্থায় ফিরে যায়। যদি পুিলশের পক্ষ থেকে স্থায়ীভাবে কোন পদক্ষেপ নেওয়া না হয় তাহলে বখাটেপনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তখন হয়তো আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া ছাড়া কোন পথ থাকবে না।’
মানববন্ধন কর্মসূচী চলাকালে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রেজাউল বারী ঈসা, সাধারণ সম্পাদক এডোনিস তালুকদার বাবু, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জি. এম পারভেজ ড্যারিন, জাকিয়া সুলতানা, হাসান মাসুদ, আব্দুর রশিদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও তারেক হাসান শেখ পাপ্পু।