ভিকারুননিসায় ফওজিয়ার নিয়োগ কোন ক্ষমতাবলে: হাইকোর্ট

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৭:৪২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৫৯ বার।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নতুন অধ্যক্ষ ফওজিয়া রেজওয়ানকে কোন ক্ষমতাবলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। তবে তার নিয়োগের ওপর কোনো অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেননি আদালত। ফলে অধ্যক্ষ হিসেবে তার কাজে যোগদানে কোনো বাধা নেই।

মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। রুলে ফওজিয়ার নিয়োগ কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। খবর যুগান্তর অনলাইন 

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে ফওজিয়া রেজওয়ানের নিয়োগ স্থগিত চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। তবে তার কাজে যোগদানের বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি আদালত। তাই অধ্যক্ষ পদে তার দায়িত্ব নিতে কোনো বাধা নেই।

বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে সরকার অধ্যক্ষ হিসেবে সরাসরি নিয়োগ দিতে পারে কিনা সেটি জানতে চেয়েছেন আদালত।

এর আগে হাইকোর্ট সোমবার ফওজিয়া যেন আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত নতুন দায়িত্বে যোগ দিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ ভিকারুননিসায় বিশেষ কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিধান চ্যালেঞ্জ করে এর আগে একটি রিট করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ফওজিয়ার নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সোমবার তিনি সম্পূরক আবেদন করেন।

গত বছর প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার পর উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মুখে ভিকারুননিসার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসসহ তিন শিক্ষককে সরিয়ে দেয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান কলেজ শাখার সহকারী অধ্যাপক হাসিনা বেগম।

প্রতিষ্ঠানের পূর্ণকালীন অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে নিজে প্রার্থী হওয়ার জন্য দায়িত্ব ছেড়ে দেন হাসিনা বেগম। পরে প্রতিষ্ঠানেরই আরও দুজন শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান, তারা হলেন- কেকা রায় চৌধুরী ও ফেরদৌসী বেগম। এখন ফেরদৌসী বেগম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন।

গত এপ্রিলে অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়। এতে আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের ইংরেজির এক শিক্ষক অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। কিন্তু স্কুলের একটি গ্রুপ অনিয়মের অভিযোগ তুলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয় ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে।

রিটকারী ইউনুস আলী বলেন, ১৯৭৯ সালের শিক্ষক সার্ভিস রেগুলেশনস অনুযায়ী, ভিকারুননিসায় অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষমতা গভর্নিং বডির হাতে। এ বিধান অনুসরণ না করে সরকার মাউশির এক কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ফলে তা ‘আইনসম্মত হয়নি’।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন ছাড়া কিছু করা যাবে না। কিন্তু সরকার আইন ছাড়াই প্রেষণে বা ডেপুটেশনে নিয়োগ দিয়েছে। ১৯৭৯ সালের শিক্ষক সার্ভিসেস রেগুলেশনসে প্রেষণে বা ডেপুটেশনে নিয়োগের বিধান নাই।’ ওই নিয়োগের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- সেই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে আবেদনে।

রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় ওই নিয়োগ আদেশের ওপর স্থগিতাদেশও চাওয়া হয়েছে। শিক্ষা সচিব, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ, ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ ১১ জনকে এ আবেদনে বিবাদী করেছেন ইউনুস আলী।