দুধ দেয়ার জন্য ছটফট করছে মাঃ বারান্দায় ওঠায় বাছুরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:২৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪৩৭ বার।

বাড়ির উঠোনে পড়ে আছে টুকটুকে বাছুরের নিথর দেহ। বয়স মাত্র ১২দিন। পাশে দুধ দেয়ার জন্য ছটফট করছে মা। ওলানে জমা হওয়া দুধের যন্ত্রণায় সে অনেকটাই কাতর। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ মিলছে না আদরের ধন বাছুরটির। এতে মমতামীয় মায়ের দু’চোখ বেয়ে ঝরছে তপ্ত অশ্রু।


বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রমজান আলীর বাড়ির উঠোনে গ্রামের সববয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুর জটলা। সকলেই অবাক বিস্ময়ে দেখছে মমতাময়ী মায়ের করুণ এ আর্তনাত। ঝুঝানোর ভাষা না থাকলেও অবুঝ এ প্রাণির আচরনে উপস্থিত সকলেই হতবাক। বিলাপ করছেন অনেকেই।
বাছুরটির অপরাধ ছিল রমজান আলীর প্রতিবেশি ইছব আলীর বারান্দায় ওঠা। এ কারণে ইছব আলীর স্ত্রী জোসনা বেগম (৩৫) বাছুরটিকে কাঠের চৌকাট দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন।  বুধবার বিকেলে নওগাঁর মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে মর্মস্পর্শী এ ঘটনা ঘটে।


প্রত্যক্ষদর্শী আদরী খাতুন জানান, আমি গরুকে পানি খাওয়াচ্ছিলাম। এ সময় পাশের বাড়ির রমজান চাচার বাছুর জোসনা বেগমের বারান্দায় দৌড়ে আসে। এ সময় জোসনা বেগম একটি চৌকাঠ দিয়ে বাছুরের মাথায় সজোরে চার-পাঁচটি আঘাত করে। এতে করে বাছুরটি ওখানেই লুটিয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, তখন আমি আর আমার মা ওই বাছুরকে কোলে করে রমজান চাচার উঠোনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার কোলেই বাছুরটি মারা যায়।


এ ব্যাপারে ইছব আলীর স্ত্রী জামিলা বেগম বলেন, জোসনা বেগম বাছুরের মাথায় আঘাত করার পর বাছুরটি বারান্দার নিচে পড়ে যায়। তারপর আমি আর আমার মেয়ে বাছুরটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। মাথায় পানি ঢালতে ঢালতেই বাছুরটি মারা যায়। 

ঘটনায় বাছুরের মালিক রমজান আলী বাদি হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় মান্দা থানায় অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মান্দা থানার সহকারি উপপরিদর্শক এরশাদ আলী। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত জোসনা বেগম বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।


মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ নিয়েছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানও শোনা হয়েছে। ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।