মিন্নি আদালতে আসলেন বাবার মোটরসাইকেলে করে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৮:৪৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭৭ বার।

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় হাইকোর্টের আদেশে জামিনে মুক্ত তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আদালতে হাজির হয়েছেন। আজ এ মামলার শুনানির দিন ধার্য থাকায় সকাল ৯টার আগেই বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আদালতে হাজির হন তিনি।

মিন্নি আদালতে আসেন বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের মোটরসাইকেলে করে। মোটরসাইকেল চালান মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। আর পেছনে বসা ছিলেন মিন্নি। সাদা পোশাক পড়া মিন্নিকে এ সময় বেশ বিষণ্ণ দেখাচ্ছিল।

এরপর আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত বাবার সঙ্গেই আদালতের একটি কক্ষে অবস্থান করেন তিনি।

আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে বরগুনা জেলা কারাগারে থাকা এ মামলার অপর ৭ অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

এ মামলার অভিযোগপত্রের শুনানির জন্য আদালত দুপুর ২টা সময় নির্ধারণ করলে বাবার মোটরসাইকেলে চড়ে আবার বাসায় চলে যান মিন্নি।

আজ মিন্নি আদালতে হাজির হওয়ার দিন থাকায় আদালত প্রাঙ্গণে তাকে দেখার জন্য ভিড় জমায় উৎসুক মানুষ। আদালত প্রাঙ্গণের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।

এ বিষয়ে নিম্ন আদালতে মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, দুপুর ২টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার মূল নথি এসে পৌঁছাবে। তাই দুপুর ২টায় এ মামলার অভিযোগপত্রের শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

গ্রেফতারের ৪৮ দিন পর ৩ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট মিন্নিকে কেন জামিন দেয়া হবে না, মর্মে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দুই শর্ত দিয়ে মিন্নির অন্তর্বর্তী স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন।

শর্ত দুটি হলো- ১. জামিনে থাকাবস্থায় মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের জিম্মায় থাকবেন; ২. জামিনে থাকাবস্থায় তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। এই দুই শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে মিন্নির জামিন বাতিল হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ আগস্ট মিন্নির জামিনের বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ বলে ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। তবে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মিন্নিকে মিডিয়ার সঙ্গে কথা না বলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ২৬ জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পর দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে। পরে মিন্নির শ্বশুর তার ছেলেকে হত্যায় পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়।

গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

পর দিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষে মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হলে সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ জানায়।

বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর গত ৫ আগস্ট হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।