চড়-থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতে তিন খুন

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:২১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২৪ বার।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ফ্ল্যাট বাসায় দুই শিশু কন্যাসহ মাকে হত্যা করার দায় স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার আব্বাস। শ্যালকের চড়-থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতেই শ্যালিকা নাজনীন ও তার দুই মেয়েকে খুন করে সে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জের পাওয়ার হাউসের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই দিন রাতেই এক সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন আর রশীদ এ কথা জানান।

আব্বাস পটুয়াখালী জেলা সদরের পইক্কা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। সে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকত।

পুলিশ সুপার জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরে একটি কমিউনিটি সেন্টার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ইয়াবায় আসক্ত।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে আব্বাস জানায়, তার স্ত্রী ইয়াসমিন ও মেয়ে সুমাইয়া প্রায় সময় রাগ করে ভায়রার সুমন বা শ্যালক হাসানের বাসায় চলে যেত। এসব বিষয় নিয়ে একবার ভায়রা সুমন তাকে চড়-থাপ্পড় মেরেছিল। শ্যালক হাসানও এসব নিয়ে তাকে শাসিয়ে ছিল। এর জের ধরে শ্যালিকা ও তার সন্তানদের হত্যার পরিকল্পনা করে আব্বাস। গত বুধবার রাতে স্ত্রী ইয়াসমিন মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে বোনের বাসায় চলে যায়। পূর্ব পরিকল্পনা মতে বৃহস্পতিবার সকালে একটি ধারালো অস্ত্র নিয়ে আব্বাস তার ভায়রার বাসায় আসে। এ সময় স্ত্রী ইয়াসমিন ও ভায়রা সুমন বাসায় না থাকার সুযোগে প্রথমে শ্যালিকা নাজনীন পরে তার শিশু কন্যা নূসরাত ও খাদিজাকে গলা কেটে হত্যা করে। এমনকি নিজের মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ে সুমাইয়াকেও গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায় আব্বাস।

ঘটনাটি আব্বাস একাই ঘটিয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার জানান, আরও তথ্য জানার জন্য তাকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। 

আব্বাসের স্ত্রী ইয়াসমিন জানায়, আমি আদমজী ইপিজেডের সুপ্রিম গার্মেন্টসের সুইং মেশিন অপারেটর। সে (আব্বাস) কোন কাম কাজ করে না। বেতন পেলেই নেশা করার জন্য টাকা নিয়ে নিত। এ নিয়ে কিছু বললেই আমাকে ও মেয়েকে মারধর করত। এ কারণে মাঝে মাঝে রাগ করে মেয়েকে নিয়ে ছোট বোনের বাসায় চলে যেতাম। আমি সকাল সাড়ে ৭ টায় বোনের বাসা থেকে কাজে চলে যাই। দশটার পরে খুনের কথা জানতে পারি।  

আব্বাসের মেয়ে সুমাইয়া পুলিশকে জানিয়েছে, বাবাই তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে এবং তার খালা ও খালাতো বোনদের হত্যা করেছে।

নিহত নাজমিনের ছোট ভাই হাসান জানান, “প্রায়ই মাদক সেবন করে বাড়ি ফিরে আব্বাস মিয়া সবাইকে মারধর করত।”

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আব্বাসকে (৩২) আসামি করে নিহত নাজনীনের স্বামী সুমন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার ওসি তদন্ত আজিজুল হক।