এনআরসি আতঙ্কে পশ্চিমবঙ্গে আরও এক ব্যক্তির আত্মহত্যা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩:৫২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২৭ বার।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় নাগরিক তালিকা-এনআরসি আতঙ্কে আরও এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। তিনি উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাটের শোলাদানা গ্রামের বাসিন্দা।

আসামে এনআরসি প্রকাশের পর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের মধ্যেও। নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কায় এ নিয়ে দুজন ব্যক্তি আত্মহত্যা করলেন রাজ্যটিতে।

সংবাদ প্রতিদিন জানায়, পরিবারের সঠিক পরিচয়পত্র না থাকায় কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন কামাল হোসেন মণ্ডল। একপর্যায়ে গলায় দড়ি দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন বলে স্বজনেরা জানান।

শোলাদানা গ্রামের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা কামাল। তবে তার ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং রেশন কার্ডে বেশ কিছু ভুলভ্রান্তি ছিল। কিছুদিন ধরে ওই ভুল সংশোধনের জন্য দৌড়াদৌড়ি করছিলেন। এর মধ্যে বাড়ির দলিলও খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি।

একদিকে পরিচয়পত্রে ভুল আর তার ওপর দলিল খুঁজে না পাওয়ায় নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয় ৩৫ বছর বয়সী কামালের মধ্যে।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে এনআরসি হলে তার নিজের এবং পরিজনদের কী অবস্থা হবে এমন দুশ্চিন্তায় খাওয়াদাওয়াও প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।

নিহতের স্ত্রীর দাবি, দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সস্ত্রীক আত্মঘাতী হতে চেয়েছিলেন কামাল। তবে তাতে রাজি ছিলেন না স্ত্রী। এই নিয়ে দু’জনের বাগ্‌বিতণ্ডাও হয়।

রবিবার ভোরবেলা থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না কামাল হোসেনের। কিছুক্ষণের মধ্যে স্ত্রী খবর পান বাড়ির অদূরেই গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন তার স্বামী। প্রতিবেশীদের সহায়তায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে বসিরহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দেহ উদ্ধার করে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় কামালকে।

এর আগে শুক্রবার সকালে এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে জলপাইগুড়িতে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন। জমির মালিকানার পুরোনো দলিল হারিয়ে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি।

রাজ্যের প্রতিটি জেলার বাসিন্দা মূলত সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষদের তাড়া করছে এনআরসি আতঙ্ক। তালিকায় নাম না উঠলে কী হবে তা নিয়ে মানসিক চাপে আছেন তারা। এই দুশ্চিন্তায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে উত্তর চব্বিশ পরগনার মাটিয়াতে মারা গিয়েছেন একজন। অন্যদিকে নথি সংশোধনের লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু হয়েছে বালুরঘাটের এক বাসিন্দার।