সম্রাট-শাওনের ব্যাংক হিসাব তলব

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৬:৩৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৬ বার।

টেন্ডারবাজির অভিযোগে আটক যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত জি কে শামীম ও অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার দায়ে গ্রেফতার খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ বা ফ্রিজের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট। তাদের স্বার্থসংশ্নিষ্ট অন্য কোনো নামে অ্যাকাউন্ট পরিচালিত হলে আগামী ৩০ দিনের জন্য অর্থ উত্তোলন বন্ধ রাখতে সব ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে যুবলীগের সাবেক নেতা নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য তলব করেছে এনবিআর। সোমবার এ-সংক্রান্ত চিঠি বিভিন্ন ব্যাংকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২৩(১)(গ) ধারার ক্ষমতাবলে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ-সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চিঠিতে বলা হয়েছে, এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম, পিতা মো. আফসার উদ্দীন মাস্টার, মাতা আয়েশা আক্তার, স্ত্রী শামীমা সুলতানা ও তার স্বার্থসংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠান মেসার্স জি কে বিল্ডার্সের নামে বা তাদের স্বার্থসংশ্নিষ্ট অন্য কোনো নামে অতীতে বা বর্তমানে অ্যাকাউন্ট পরিচালিত হয়ে থাকলে অবরুদ্ধ করে জরুরি ভিত্তিতে জানাতে হবে।

অন্য এক চিঠির মাধ্যমে দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, পিতা মো. আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, মাতা খালেদা বেগম ও তার স্বার্থসংশ্নিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বর্তমানে বা এর আগে কোনো অ্যাকাউন্ট পরিচালিত হয়ে থাকলে তা ফ্রিজ করে জরুরি ভিত্তিতে জানাতে হবে।

চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে শুক্রবার রাজধানীর নিকেতনে যুবলীগ নেতা এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের অফিসে অভিযান চালিয়ে সাত দেহরক্ষীসহ তাকে আটক করে র‌্যাব। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্সের মালিক তিনি। নিজেকে পরিচয় দিতেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে। যদিও যুবলীগে তার কোনো পদ নেই বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তার কার্যালয় থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) নথি, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার, একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি-বিদেশি মদের বোতল জব্দ করে।

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে গুলশান-২ এর নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটক করে র‌্যাব। পাশাপাশি তার মালিকানাধীন রাজধানীর ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ১৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে ২০ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, মদ ও বিয়ার জব্দ করা হয়।

শাওন ও সম্রাটের ব্যাংক হিসাব তলব: এদিকে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের এমপি নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন, তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের অ্যাকাউন্ট তলব করেছে এনবিআর। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল থেকে চিঠি দিয়ে তাদের যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। এসব ব্যক্তির নামে অতীতে বা বর্তমানে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে শুরু থেকে হালনাগাদ লেনদেনসহ যাবতীয় তথ্য, অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম, কেওয়াইসিসহ যাবতীয় তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা উপায়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে যুবলীগের এ দুই নেতার বিরুদ্ধে। যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের মধ্যে এসব ব্যক্তির তথ্য চাইল এনবিআর।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। খেলার ক্লাবের আড়ালে ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে এরই মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের অনেককে আটক করা হয়েছে। ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো চালানোর সঙ্গে যুবলীগ নেতাদের সংশ্নিষ্টতার বিষয়টি জানতে পেরেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।