ক্যাসিনো বিষে নীল ক্লাবপাড়া

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২:৪২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১১২ বার।

টাকা গোনার মেশিন আছে, সারি সারি সাজানো রয়েছে রোলেট মেশিন- অথচ সেখানে থাকার কথা ছিল কোনো বোলিং মেশিন! ঝা চকচকে ফ্লোরগুলোতে হতে পারত খেলোয়াড়দের জন্য কোনো জিম- অথচ সেখানে বসানো প্লেয়িং কার্ড টেবিল! খবর সমকাল অনলাইন 

ক্যাসিনোর নীল বিষে বুঁদ হয়ে এভাবেই যেন খেলাধুলা ভুলে গেছে মতিঝিলপাড়ার ক্লাবগুলো। এই অঞ্চলের ১১টি ক্লাবের ছয়টিতেই বসে জুয়ার আসর। এমনকি ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ক্লাবও এই জুয়ার নেশায় ডুবতে বসেছে। ১৭ বছর ধরে ফুটবলে তাদের কোনো লীগ শিরোপা নেই, ক্রিকেটে ট্রফি নেই দশ বছর হয়ে গেল। খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতাও থেকে যাচ্ছে বকেয়া! যেখানে একসময় খেলোয়াড় আর সমর্থকের ভিড় জমজমাট করে রাখত, সেখানে সন্ধ্যা নামলেই জুয়ার নেশায় ভিড় করেন কলেজছাত্র থেকে অফিসফেরত কর্মী। ক্যাসিনোর এই সর্বনাশা পথে পা দিয়ে ক্লাবগুলোর অধঃপতনের ছায়া পড়েছে দেশের ফুটবলে। যার দায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন স্বীকার না করলেও ক্রীড়াঙ্গনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) পুরো ব্যাপারটি নিয়ে বিব্রত। 'মূলত আমরা অ্যাসোসিয়েশন এবং ফেডারেশনের অনুমোদন দিয়ে থাকি। এসব ক্লাবের ক্রীড়া পরিষদের কোনো নিয়ন্ত্রণ বা কোনো কার্যক্রম আমাদের হাতে নেই। এটা যেহেতু ক্রীড়ার সঙ্গে সংশ্নিষ্ট, ভাবমূর্তির বিষয় আছে। সুতরাং আমাদের এখন থেকে চিন্তা করতে হবে যে, এসব ক্লাব তাদের কার্যক্রম এবং ব্যবস্থাপনা কীভাবে করে। এটার তদারকি করা বা সময় সময় মনিটরিং করা, এটা করব'- বলেন এনএসসি সচিব মাসুদ করিম।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর একে একে উঠে আসে ক্লাবগুলোর রমরমা জুয়ার আসরের কথা। কয়েকটি ক্লাবে অভিযান চালানোর পর এখন মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় চলছে আতঙ্ক। লজ্জিত সাবেক ফুটবলাররা। 'ক্লাব হচ্ছে একটা পবিত্র স্থান। এখানে শুধুই খেলাধুলা হবে। কিন্তু আমি অবাক হয়েছি, বঙ্গবন্ধু যেই ক্লাবে খেলেছিলেন, সেই ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো আছে। মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে জুয়ার আসর বসে প্রতি রাতে, তা আমরা ভাবতে কষ্ট হয়। ক্লাবগুলো যদি এমন করে তাহলে তো খেলাধুলার প্রতি মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এভাবে চলতে পারে না। অবশ্যই একটা সমাধান আসতে হবে'- হতাশার সুরে বলেন সাবেক ফুটবলার শেখ মো. আসলাম। চিন্তিত বর্তমান ফুটবলাররাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খেলোয়াড় বলেন, 'সামনেই ফুটবলের দলবদল। এ অবস্থায় নামকরা কয়েকটি ক্লাব জুয়ার কারণে সিলগালা হয়ে গেছে। দলবদল করতে গিয়ে আমরা তো দোটানায় পড়ে গিয়েছি। কাদের ওপর ভরসা করব এখন আমরা।'

ক্লাবগুলোর নিজের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে; কিন্তু তাই বলে ক্যাসিনোর মতো খারাপ জিনিস থাকবে, তা হতে দেবে না ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও। 'এখন যে রকম বিষয়গুলো আসছে, তাতে ফৌজদারি অপরাধ হয়েছে। সেটার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মামলা করেছে। সেটা আইনানুগভাবে চলবে। তবে আমরা এরকম বিষয় অবহিত হলাম, যেটা ক্রীড়াঙ্গনের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। সুতরাং আমরা এখন মন্ত্রণালয়ে যাবো। মাননীয় মন্ত্রীকে সামগ্রিক বিষয় অবহিত করব। পরবর্তীতে ক্লাবগুলোকে কী কী দিকনির্দেশনা দেওয়া যায় বা আমরা কী পদক্ষেপ নেব, এসব বিষয় নিয়ে আমরা অবশ্যই কিছু সিদ্ধান্ত নেব। তারা কীভাবে ক্লাব চালায়, জাতীয় ক্রীড়ার অভিভাবক সংস্থা হিসেবে আমাদের এসব বিষয়ে অবহিত হওয়া দরকার'- বলেন মাসুদ করিম।

ক্লাবপাড়া যেভাবে ক্যাসিনোপাড়া

একসময় ফুটবল তৈরির কারখানা হিসেবে বেশ সুনাম ছিল ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাবের। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই ক্লাবটির সেই সুনাম ধুলোয় মিশে গিয়ে তা এখন জুয়ার আসরের জন্য বিখ্যাত। অথচ দুই বছর আগে ফকিরাপুলের এ ক্লাবটি প্রিমিয়ার লীগে উঠেছিল; কিন্তু টাকার অভাবে লীগে অংশ নেয়নি। অথচ এই ক্লাব যে প্রচুর পরিমাণ টাকা আয় করত তা জানা গেল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযান এবং ক্লাবটির সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেফতারের পর। ইয়ংমেনসের সঙ্গে ওইদিনই মতিঝিলের আরেকটি ক্লাব ঢাকা ওয়ান্ডারার্সে অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান। সেখানেও দেখা যায় জুয়ার রমরমা অবস্থা। শুধু ইয়ংমেনস ক্লাবে নয়, মতিঝিলের আরও চারটি ক্লাব মোহামেডান স্পোর্টিং, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব এবং ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবে চলত অবৈধ ক্যাসিনো। গত রোববার এই চারটি ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনো খেলার বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

সুষ্ঠু ক্রীড়া চর্চার জন্য মতিঝিলপাড়ায় কোনো কোনো ক্লাব ৯৯ বছরের জন্য জায়গা লিজ নিয়ে স্থাপনা গড়ে তুলেছে। হতে পারত, ওই জায়গাতেই বহুতল কোনো ভবন বা কমপ্লেক্স নির্মাণ করে সেখান থেকে পাওয়া ভাড়ার টাকায় সচ্ছলভাবে চলছে ক্লাবগুলো। কিন্তু এই ভাবনায় না গিয়ে বেশিরভাগ ক্লাবই আশ্রয় নেয় হাউজির মতো জুয়া খেলায়। ক্লাবপাড়ায় হাউজি এবং কার্ডরুমের জুয়ার প্রচলন সেই আশির দশক থেকেই। ১৯৯৬ সালে ক্লাবগুলোতে এই হাউজি বন্ধ করে দেয় সরকার। তখন ওই এলাকার বেশ কিছু ক্লাব কর্মকর্তা স্থানীয় সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরীর কাছে গিয়ে হাউজি চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তাদের যুক্তি ছিল, হাউজির টাকাতেই ক্লাবগুলো তাদের খেলোয়াড়দের টাকা-পয়সা মিটিয়ে দল গড়ে থাকে। কিন্তু সাবের হোসেন চৌধুরীর জানিয়ে দিয়েছিলেন, জুয়ার পথ ছেড়ে বিকল্প কোনো প্রস্তাব তার সামনে আনতে। জুয়ার পয়সায় যে খেলাধুলা চলতে পারে না, তার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন সাবের হোসেন। কিন্তু এরপর তার কাছে বিকল্প কোনো প্রস্তাব নিয়ে যাননি মতিঝিলপাড়ার ক্লাব কর্মকর্তারা। এভাবেই কয়েক দশক চলার পর বছর চারেক আগে আরামবাগের ক্লাবপাড়ায় কিছু ক্লাবে সন্ধ্যার পর শুরু হয় 'ক্যাসিনো'।

ইয়ংমেনস ফকিরাপুল, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ ও মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিলেডে ক্যাসিনোর উপস্থিতি প্রমাণ মিলেছে। ওই এলাকার বাকি ক্লাবগুলোর মধ্যে ওয়ারী, আজাদ স্পোর্টিং, সোনালী অতীত ক্লাব ও মেরিনার্সে এখনও ক্যাসিনোর উপস্থিতি মেলেনি। চার বছর আগে যখন ক্যাসিনো শুরু হয় ক্লাবগুলোতে, তখন শুধু ক্লাবের সদস্যরাই সেটি খেলতেন। কেননা তখনও পুলিশি ভয় ছিল কিছুটা। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে ক্লাবগুলোর ক্যাসিনোতে অফিস ফেরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, মেসে থাকা কলেজছাত্র, মফস্বল থেকে ছুটে আসা পেশাদার জুয়াড়িরা ঢুকতে থাকে। তবে তাদের অবশ্যই ক্লাব সংশ্নিষ্ট কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সুপারিশ নিতে হতো। কিংবা ক্যাসিনোতে নিয়মিত যাতায়াত করা কারও রেফারেন্সও নিতে হতো। কোনো রেফারেন্স ছাড়া ওই ক্যাসিনোগুলোতে কেউ যেতে পারত না।

রাজনৈতিক চাপ

১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। ঐতিহ্যবাহী এ ক্লাবটিতে গত রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে জুয়ার বিপুল পরিমাণ সামগ্রী উদ্ধার করে পুলিশ। মোহামেডান ক্লাবটির প্রধান গেটে ঢুকতে হাতের বাঁ পাশে বোর্ড হলরুম। এখানে একসময় বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হতো। আর ক্লাবটি কোনো সাফল্য পেলে বড় করে অনুষ্ঠানও হতো এই হলরুমে। কিন্তু সরেজমিন দেখা যায়, সেই হলরুমটি আগের মতো নেই। ক্লাবের ভেতর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এই রুমটি। যেখানে এক বছর আগে ক্যাসিনো সরঞ্জাম বসানো হয়। আর এই রুমে ঢোকার প্রধান গেট বাইরে দিয়ে। গেটের মূল ফটকে দাঁড়ালে ভেতরে কী হচ্ছে, আপনি তা বুঝতে পারবেন। একটা ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের ভেতরে ক্যাসিনো আছে, তা শুনে অবাক মোহামেডানের অনেক সমর্থক। তাদের কথা, এখানে শুধুই খেলাধুলা থাকবে, কেন জুয়ার আসর বসবে। মোহামেডানের কি টাকার অভাব আছে?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোহামেডানের এক কর্মকর্তা এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সামনে তুলে আনলেন রাজনৈতিক চাপের কথা, 'মোহামেডান কখনোই চায়নি এখানে ক্যাসিনো হোক। এক বছর আগেও যখন প্রস্তাব নিয়ে আসছিল, তখন তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ক্লাবটির ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। এ নিয়ে দুই মাস আমরা তাদের (যারা প্রস্তাব দিয়েছেন) ঘুরিয়েছি। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক চাপের কারণে দিতে বাধ্য হয়েছে। আপনি দেখেন, তাদের অংশটা ক্লাব থেকে পুরোপুরি আলাদা। এই হলরুম ভাড়া দিয়ে যে খুব বেশি আয় করছে ক্লাব, তা কিন্তু নয়। মাসে অল্প কিছু টাকা পেয়েছে ক্লাব।' দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবের এক অফিসিয়ালও রাজনৈতিক চাপের কথা বলেছেন, 'রাজনৈতিক চাপ আসলে তো করার কিছু নেই।'

তলানিতে মাঠের পারফরম্যান্স

২০০৭ সালে প্রথমবার ক্লাবগুলোকে নিয়ে শুরু হয়েছিল পেশাদার ফুটবল লীগ। এ পর্যন্ত লীগের ১১টি আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। অথচ একবারও ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরের শিরোপা জিততে পারেনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। তাদের সেরা সাফল্য প্রথম তিনবারের রানার্সআপ। গত মৌসুমে কোনোমতে অবনমন এড়িয়েছে মোহামেডান। সব মিলিয়ে গত ১৭ বছর ফুটবলের কোনো ট্রফি যায়নি মোহামেডানের শোকেসে। ক্রিকেটে মতিঝিলপাড়ার ক্লাবটি শেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ২০০৯ সালে। শুধু প্রিমিয়ার হকি লীগের শেষ আসরে চ্যাম্পিয়ন তারা। ক্লাবের এই বাজে ফলের জন্য কারও কোনো জবাবদিহি নেই। কয়েক বছর ধরে ক্রিকেট কিংবা ফুটবলে ভালোমানের দল গড়েনি মোহামেডান। এর পেছনে ক্লাব কর্মকর্তাদের অজুহাত ছিল অর্থের অভাব। অথচ ক্লাবের হলরুমে ক্যাসিনোর জন্য ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করেছে ঐতিহ্যবাহী এ ক্লাবটি।

মোহামেডানের পাশেই ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব। একসময় ফুটবলে অনেক খ্যাতি ছিল এই ক্লাবটির। ভিক্টোরিয়ার জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন শেখ মো. আসলাম। তার অধীনে সাফল্য পেয়েছিল এই ক্লাব। চারবার প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগের চ্যাম্পিয়ন ভিক্টোরিয়া। এরপর দশ বছর আগে প্রিমিয়ার ক্রিকেটেও শিরোপা জিতেছিল ভিক্টোরিয়া; কিন্তু মতিঝিলের এ ক্লাবটি খেলাধুলা থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। খেলাধুলায় মন নেই তাদের, ক্লাবটি এখন বিখ্যাত ক্যাসিনো দিয়ে।

১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব। এই ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু, লেফট উইঙ্গার ওয়াজেদ গাজীসহ অনেক তারকা ফুটবলারের নাম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব। একসময়ের জনপ্রিয় এবং জায়ান্ট ক্লাবটি হারিয়ে গেছে। প্রিমিয়ার লীগ তো দূরের কথা, দ্বিতীয় স্তরের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপেও নেই এই ক্লাবটির নাম। ক্যাসিনোর কারণে হঠাৎ করে এ ক্লাবটি আলোচনায়। খেলায় মন নেই কর্মকর্তাদের। গত ১৮ সেপ্টেম্বর সিলগালা করা হয় ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবটি। ক্লাবের ৬১ বছরের ইতিহাসে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সেরা সাফল্য ২০১৭-১৮ মৌসুমে স্বাধীনতা কাপ জয়। গত মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে পঞ্চম হয়েছিল ক্লাবটি। এক ফুটবল ছাড়া আর অন্য কোনো খেলায় নাম নেই আরামবাগের। এসব ক্লাবের সঙ্গে কলাবাগান, দিলকুশা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের পারফরম্যান্স ভালো নেই।

জুয়ার টাকায় নয়, চাঁদার টাকায় দল গড়ে ক্লাব

ফুটবল, ক্রিকেট কিংবা হকির দল গড়তে অনেক টাকা ব্যয় করতে হয় ক্লাবগুলোকে। খেলোয়াড়দের পেছনে অর্থ ব্যয় করা ছাড়াও ক্লাবের অভ্যন্তরীণ অনেক খরচ আছে। সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর উঠে আসে, ক্লাবগুলোতে বছরের পর বছর ক্যাসিনো বোর্ড ও জুয়ার খেলা চলছিল। এসব থেকে পাওয়া অর্থই নাকি খেলোয়াড়দের পেছনে ব্যয় করেন ক্লাব কর্তারা। এটার সঙ্গে একমত নন বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, 'জুয়ার টাকায় ক্লাব চলতে পারে না। একটা ক্লাবের আয়ের অনেক উৎস থাকে। যারা বলে থাকেন, আমি মনে করি তারা ভুল।' মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টুও মনে করেন, জুয়ার টাকা নয়, ক্লাব চলে চাঁদার টাকায়, 'একটা ক্লাব চালাতে গেলে অনেক টাকা লাগে। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লাব চালাই আমরা। ক্যাসিনো থেকে খুব সামান্য টাকা আসত। এটা দিয়ে একটা ফুটবলারের বেতনও দেওয়া যায় না।'