চাঁদাবাজদের নির্মূল করার কথা বললেন সভাপতি মিলন

বগুড়া চেম্বারের উদ্যোগে স্থানীয় ১১ রফতানিকারককে ট্রফি প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১২:০৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৫৩৬ বার।

বগুড়ায় চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জেলার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন। শনিবার চেম্বারের উদ্যোগে স্থানীয় রফতানিকারকদের ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা সততা ও মননশীলতা নিয়ে কাজ করতে চান। যারা ব্যবসায়ীদের অর্জিত সম্পদের উপর অযাচিতভাবে হানা দেয়, চাঁদাবাজি করে, পণ্য আনা-নেওয়ার সময় সড়ক পথে চাঁদাবাজি করে তাদের চিরতরে নির্মূল করতে হবে। এই সমাজে চাঁদাবাজ জিম্মিকারী কিংবা কোন জবরদখলকারীর স্থান হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ লক্ষ্যে কাজ করছেন আমাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’ 
বগুড়া থেকে ২০১৮ সালে ৩ কোটি ৩০ লাখ  মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করায় জেলার মোট ১১ রফতানিকারককে চেম্বারের পক্ষ থেকে সম্মাননা জানানো হয়। ওই বছর এ জেলা থেকে রাইস ব্র্যান ক্রড অয়েল, পাটজাত পণ্য, তৈরি পোষাক, পানির পাম্প এবং বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার রফতানি করা হয়। এসব পণ্যের মধ্যে শুধু তৈরি পোষাকের গন্তব্য ছিল যুক্তরাজ্য আর বাদবাকি সব পণ্য রফতানি হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। ২০১৯ সালে পণ্য রফতানি আরও বেড়েছে। রফতানি পণ্যের তালিকায় ভুট্টা এবং ধানের তুষ যুক্ত হয়েছে। ওই দু’টি পণ্য যুক্ত হওয়ার পর চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেড়ে ৪ কোটি ৮ লাখ মার্কিন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। চেম্বার নেতৃবৃন্দ আশা করছেন বছর শেষে সাড়ে রফতানি পরিমাণ সাড়ে ৪ কোটি মার্কিন ডলারে গিয়ে ঠেকবে।  
বগুড়ার পাঁচ তারকা হোটেল ‘মম ইন’-এ শনিবার দুপুরে চেম্বারের উদ্যোগে প্রথমবার আয়োজিত রফতানিকারক ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে শীর্ষ রফতানিকারক মনোনীত হয়েছেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ছোনকায় অবস্থিত মজুদমার প্রোডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিত্ত মজুমদার। ২০১৮ সালে তিনি ১ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের রাইস ব্র্যান ক্রড অয়েল রফতানি করেছেন। ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার পাটজাত পণ্য রফতানি করে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন বগুড়া শহরের ইসলামপুর হরিগাড়ি এলাকার হাসান জুটস মিলের স্বত্বাধিকারী এটিএম শফিকুল হাসান। তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তামিম এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী শাহজাহান আলী রফতানি করেছেন ৩৮ লাখ মার্কিন ডলারের রাইস ব্র্যান ক্রুড অয়েল।

ট্রফি গ্রহণকারী অন্য ৮ রফতানিকারক হলেন-ওয়েস্টার্ন  এগ্রো প্রোডাক্টস্-এর আব্দুল আজিজ, মিল্টন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আজিজার রহমান মিল্টন, রনি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আব্দুল মতিন সরকার, মাইশা এন্টারপ্রাইজের মাসুদুর রহমান,  আজাদ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শহিদুল ইসলাম, নর্থ বেঙ্গল গোল্ডেন ফাইবার অ্যান্ড ডাইভারসিফাইড জুট মিলের সুভাষ প্রসাদ কানু, মুন ফ্যাশনের মিনহাজুস আজিজ ও ইলেক্ট্রোপ্যাক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নাঈম হাসান। 

রফতানিকারকদের হাতে ট্রফি তুলে দিতে গিয়ে বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন বলেন, ব্যবসায়ীরা অনেক পরিশ্রম করে পণ্য উৎপাদন করে থাকে। তারা তাদের উৎপাাদিত পণ্য রফতানি করে দেশে বৈদশিক মুদ্রা আনছেন। তারা অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। তারা যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যের রফতানি পরিমাণ আরও বাড়াতে পারেন সেজন্য বগুড়া চেম্বারের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রত্যেক ব্যবসায়ী রাতে দরজা খুলে ঘুমাবেন-এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের (ব্যবসায়ী) কষ্টে উপার্জিত একটি টাকাও যাতে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা নিতে না পারে, তারা যাতে জিম্মি করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের পথ চলতে হবে। কোথাও কোন সমস্যা হলে আপনারা আমাদের জানাবেন, পুলিশ এবং প্রশাসনকে জানাবেন। আমরা রাতে দরজা খুলে ঘুমাতে চাই।’

অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত রফতানিকারকরা বগুড়ায় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ দ্রুত শুরু করার দাবি জানান। পাশাপাশি রফতানির ক্ষেত্রে কর রেয়াতের সুযোগও চান। বগুড়া চেম্বারের সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলনের সভাপতিত্বে সম্মানা প্রদান অনুষ্ঠানে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে তৌফিকুর রহমান ভাণ্ডারী বাপ্পি, আবুল কালাম আজাদ, হাসান আলী আলাল ও আব্দুল গফুর বক্তৃতা করেন। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বগুড়া চেম্বারের সহ-সভাপতি মাহফজুল ইসলাম রাজ।