খালেদা জিয়ার ব্যাপারে ‘নো কম্প্রোমাইজ’

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ১১:৪৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬৭ বার।

বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির ইস্যুতে অনমনীয় সরকার। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে সরকারের তরফ থেকে তিনি কোনো ধরনের ছাড় পাবেন না। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোভাব অনেকটাই অনমনীয়। বুধবার আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে গেলে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে।

বৈঠকের একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে ‘নো কম্প্রোমাইজ’ বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এ নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে বেশি কথাবার্তা না বলার নির্দেশনা দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো উল্টাপাল্টা কথাবার্তা বলবা না। তার (খালেদা জিয়া) বিষয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ নয়।’

প্রসঙ্গত দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়া গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি। গত ১ এপ্রিল তিনি অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি হন। মঙ্গলবার তার সঙ্গে দেখা করতে যান দলের সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদসহ তিন এমপি। পরে বেরিয়ে এসে হারুন বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তিনি নিজের হাতটাও নাড়াতে পারেন না। এমতাবস্থায় তার জামিন হলে তিনি বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন। বুধবার হারুন অর রশিদ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে ওবায়দুল কাদেরকে অনুরোধ করেন। পরে রাতে ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বিষয়টি তুলে ধরেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অনমনীয় মনোভাব বুঝতে পেরে ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে আর কিছুই বলেননি।

বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির এমপিদের অনুরোধের বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি। তিনি খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। খবর যুগান্তর অনলাইন 

বুধবারের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলমান অভিযান নিয়েও কথা বলেন। এ সময় তিনি অভিযুক্তদের বিভিন্ন সময় আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার জন্য দলের কিছু নেতাকে ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, ‘বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজদের জন্য কেউ কোনো তদবির নিয়ে আসবেন? কাউকে বাঁচাতে চাইবেন?- আমি কিছু করতে পারব না।’

দলীয় নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, কে কী করেছেন আমি সব জানি। অপরাধীদের কেউ শেল্টার দেয়ার চেষ্টা করবেন না। এ সময় তিনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘ক্যাসিনো খেলেন? ক্যাসিনো ব্যবসা করেন? আমি ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের জন্য ভাসানচরে থাকার ব্যবস্থা করব।’

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে ওবায়দুল কাদের বলেন, নেত্রী সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন নিয়ে সাংবাদিকরা আমার কাছে জানতে চান, আমি কী বলব?

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগেই সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হবে। সেভাবে প্রস্তুতি নাও।

জানা গেছে, গণভবনে দুদফা বৈঠক হয়। বৈঠকে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, হারুন অর রশীদ, মৃণাল কান্তি দাশ, আফজাল হোসেন, প্রকৌশলী আবদুস সবুর, সুজিত রায় নন্দী, আবদুস সোবহান গোলাপ, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আনোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম কবির রাব্বানী চিনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা বৈঠক শেষে গণভবনের গেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কথা বলেন। চলমান অভিযানের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কারও নাম উল্লেখ করে আলোচনা হয়নি, তবে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।’

ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, দলের জাতীয় সম্মেলনের আগেই দলের মেয়াদোত্তীর্ণ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, ডিসেম্বরের আগেই যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন হবে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলে যেন অনুপ্রবেশকারীরা না ঢুকতে পারে সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।