গত দশ বছর তো বিএনপি ক্ষমতায় ছিল না: ড. কামাল

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ ১১:২৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৬ বার।

‘ক্যাসিনো বিএনপির সময়ে হয়েছিল’ আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আমি তো বিএনপির সমর্থক ছিলাম না। আমিও তাদের সমালোচনা করেছি। গত দশ বছর তো বিএনপি ক্ষমতায় ছিল না। এই দশ বছরে তারা কী করেছে সেই ক্রেডিটও তারা বিএনপিকে দিতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি অনেক কিছু করতে পারে, কিন্তু দশ বছর ক্ষমতায় নাই তারা, এই সময়ে যা হয়েছে সেটা তারা করেছে এই অভিযোগটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিততে জাতীয় সরকারের অপরিহার্যতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন।

ড. কামাল বলেন, ‘আজকের সভায় কেউ কোনো দ্বিমত পোষণ করেননি। সবাই একই কথা বলেছেন। দেশের অবস্থা নিয়ে সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ধর্ষণের পর হত্যা, আইনের শাসন অনুপস্থিত, প্রমাণ দিতে বেশি কিছু লাগে না। পত্রিকাগুলো খুলে দেখেন ঘটনাগুলো ক্রমাগত ঘটছে। এই সরকারকে তো আমরা ভোট দিইনি। তাদের এই কার্যকলাপের জন্য আমরা তাদের প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য। সেটা নিয়ে কোনো দ্বিমতের প্রয়োজন নেই। এখানে কেউ দ্বিমতও করবে না। ’

তিনি বলেন, ‘যারা দেশের শাসন ব্যবস্থাকে নষ্ট করছেন, ভোট হতে দেননি। ২৯-৩০ ডিসেম্বর কেউ ভোট দিয়েছিলেন? আমি একজনও খুঁজে পাচ্ছি না যে ভোট দিয়েছিল। আপনারা পেলে তার ফোন নম্বর আমাকে দেবেন। অনেকে আমাকে বলেছেন ইলেকশন হয়েছে সেটা জানেও না। এই জিনিসটা থেকে আল্লাহ আমাদের মুক্ত করুক। আল্লাহ বলেছে কিছু চাইলে তোমাদের সংহত হতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজকের জুম্মার দিন, আপনারা যেভাবে কথা শুনছেন এবং শুনে মাথা নাড়াচ্ছেন, আমি বিশ্বাস করি আপনাদের মধ্যে সে ঐকমত্য আছে যে, দেশকে বাঁচাতে হবে। আমাদের কে বাঁচাবে? বাইরে থেকে কেউ বাঁচাবে না, আমাদেরই বাঁচাতে হবে। স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি। স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে ক্ষমতা জনগণের হাতে এনে নিজেদের ভবিষ্যৎ আমরা সবাই মিলে গড়ব ইনশা আল্লাহ।’   

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, উচিত কথা যেগুলো বলা হয়েছে, এটা সবাই প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে দেখছেন। দুর্নীতি কোন জায়গায় চলে গেছে। অর্থনীতি কীভাবে ধ্বংস হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের কী ঊর্ধ্বগতি। বিশেষ করে ব্যাংকিং সিস্টেমকে যেখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এ নিয়ে বেশি বলতে চাই না, এতে আরও ক্ষতি হবে।’

পত্র-পত্রিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পত্রিকায় বের হচ্ছে। এই যে রেকর্ড পরিমাণ টাকা তারা বাইরে পাঠাচ্ছে, কারা পাঠাচ্ছে। যাদের দেশপ্রেম থাকবে, দেশের প্রতি আস্থা থাকবে তারা তো এভাবে বিদেশে টাকা পাঠাবে না। সরকারকে বলতে চাই এগুলো তদন্ত করো, কে করছে কেন করছে। সরকারের যদি অনুমতি না থাকে তাহলে মানুষ ওইভাবে বাইরে টাকা পাঠাতে পারে না। এ লোকগুলো হাতে গোনা।

জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক শাহ আহমেদ বাদল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক  সাইফুল হক প্রমুখ।