বড়াইগ্রামে ভুল চিকিৎসায় ২ রোগীর মৃত্যু, ২ হাসপাতাল সিলগালা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:২২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯১ বার।

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় ভুল চিকিৎসায় দুই রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় দু'টি হাসপাতাল সিলগালা করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। রোববার দুপুর বনপাড়া বাইপাস মোড়ের কলাহাটা এলাকায় হেলথ কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল এবং সন্ধ্যায় রাজাপুর বাজারের সৌরভ হাসপাতাল সিলগালা করা হয়। 

হেলথ কেয়ার হাসপাতালে সুমাইয়া খাতুন (১৫)নামের এক স্কুলছাত্রী এবং সৌরভ হাসপাতালে ঈশ্বরদী থানার মুলাডুলি গ্রামের নীলা খাতুন (২২) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়। সুমাইয়া উপজেলার তালশো গ্রামের রাহাবুল ইসলামের মেয়ে ও বড়াইগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।

বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) নজমুল হক সুমাইয়ার পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, শনিবার বিকেলে সুমাইয়াকে পেটে ব্যথা নিয়ে হেলথ কেয়ার হাসতপালে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে বেডে দিলে তার বুকে ব্যথা শুরু হয়। রোববার ভোরে এক নার্স এসে তার শরীরে ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করলে সে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৮টার দিকে অস্ত্রোপচারকারী ডা. সামিয়া তাবাচ্ছুম আক্তার সাথী ও নার্স আরিফা খাতুন এসে রোগীর প্রেসার মেপে মৃত্যুর খবর না জানিয়েই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। পরে রোগীর স্বজনেরা সকাল ১০টার দিকে জানতে পারেন সুমাইয়া মারা গেছেন। খবর পেয়ে ইউএনও আনোয়ার পারভেজ, বড়াইগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. খালেদ মাহমুদ সিদ্দিকী এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে কাগজপত্র পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে জানা যায়  ডা. সাথী সার্জন নন, এরপরও তিনি অপারেশন করেছেন। সার্জন ও এনেসথেসিয়া ছাড়া অপারেশন করায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। 

ইউএনও আনোয়ার পারভেজ জানান, অপারেশনের আগে রোগীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়নি। তিনটি ক্যাবিন ও ১৪টি বেডবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাব, যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবল নেই। হাসপাতালটির ২০১৬ সাল পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন ছিল। কিন্তু পরে আর নবায়ন করা হয়নি। সার্বিক বিবেচনায় হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়েছে। 

এদিকে রাজাপুর বাজারে সৌরভ হাসপাতাল নামের অপর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নীলা নামের অ্যাপেনডিসাইটিসের এক রোগী ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনেরা ক্লিনিকে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল, জানালা ও কাঁচ ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ওই হাসপাতালের কাগজপত্র পরীক্ষা করে ত্রুটি থাকায় সিলগালা করে দেওয়া হয়।

বড়াইগ্রাম থানার ওসি দিলিপ কুমার দাস বলেন, নিহত সুমাইয়ার মা মোমেনা বেগম বাদী হয়ে হাসপাতালের পরিচালক সুজন মাহমুদসহ ৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। রাজাপুরের ঘটনায় এখনো কেউ মামলা করতে আসেন নাই। লাশ দু'টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।