বিদ্রোহ ঠেকাতে পারছে না আওয়ামী লীগ

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:৫৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬৭ বার।

আগামী ১৪ অক্টোবর সাতটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হবে। এসব নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। অথচ সাতটি উপজেলার মধ্যে ছয়টিতেই দলের নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। দুই পৌরসভার একটিতে বিদ্রোহ রয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি ২২টি ইউনিয়নেও। কোনোভাবেই এটা ঠেকাতে পারছে না সরকারি দল।

কয়েক দিন আগেও উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়ী চেয়ারম্যানদের শোকজ করা হয়েছে। বিদ্রোহের উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে তাদের বহিষ্কার কিংবা পদ-পদবি কেড়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের কয়েকটি উপজেলার সম্মেলনের কার্যক্রমে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়ী চেয়ারম্যান এবং পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থীদের যুক্ত করা হয়নি। এত কিছুর পরও বিদ্রোহ থামছে না।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের শোকজ করা হয়েছে। যথোপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু এখনও সাংগঠনিক শাস্তি নির্ধারণ হয়নি বলে হয়তো বিদ্রোহী প্রার্থীরা বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছেন। তবে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে দলের প্রতি আনুগত্য দেখাবেন বলে আশা করছেন মাহবুবউল আলম হানিফ।

এদিকে, আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান তোতা। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ময়জদ্দীন হামীদকে চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থী হয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মীর সুলতানুজ্জামান লিটন।

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুনসুর আহমেদ। তার বিরুদ্ধে লড়ছেন কাজীরহাট থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান পলাশ, আন্ধারমানিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি এ কে এম মাহফুজুল আলম লিটন সরকার এবং কে এম রফিকুল ইসলাম। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে শরিফুন্নেছা মিকি দলের একক প্রার্থী। তবে মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শাহজাহান আলী। খবর সমকাল অনলাইন 

শেরপুর সদর উপজেলায় দলীয় প্রার্থী রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিনহাজ উদ্দিন মিনাল ও সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বায়েজিদ হাসান। নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় খায়রুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন বিদ্রোহী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুজ্জামান খান লিটন ও বিদ্রোহী হুমায়ুন কবির লিটন। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় অবশ্য বিদ্রোহ নেই। সেখানে আবদুল মোতালেব দলের একক প্রার্থী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিব শংকর দাস। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন নবীনগর পৌরসভা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বশির আহমেদ সরকার পলাশ, নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক পারভেজ হোসেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জায়েদ প্যারিন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী মনির হোসেন। ভোলার লালমোহন পৌরসভায় মেয়র পদে এমদাদুল ইসলাম (তুহিন) দলের একক প্রার্থী।

২২ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা হচ্ছেন- রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নে রবিউল ইসলাম, বাজুবাঘায় ফজলুর রহমান, পাকুড়িয়ায় মেরাজুল ইসলাম, মনিগ্রামে সাইফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোরজানায় জাহিদুল ইসলাম মুকুল, হাবিবুল্লাহনগরে মিজানুর রহমান বাচ্চু, নাটোরের সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খালাবাড়িয়ায় আলতাব হোসেন, নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ইসবপুরে ইমরুল কায়েশ, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়ায় জাহিদুর রহমান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ছালাউদ্দিন ভূঞা, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লিতে মোহাম্মদ মুরছালিন, জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দিতে জুবাইদুর রহমান, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুরে আবদুল কাদির, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়ায় শেখ মোজাহিদ বিন ইসলাম, নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়ায় আবদুল মোহিত চৌধুরী, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীলে শফিউল আজম, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পাঁচগাঁওয়ে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রামনগরে এ কে এম কামাল উদ্দিন, দাগনভূঞা সদর ইউনিয়নে বেলায়েত উল্যাহ, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে তসলিম ইকবাল চৌধুরী, ঘুমধুমে এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ এবং সোনাইছড়িতে এ্যানিং মারমা। তবে বেশিরভাগ ইউনিয়নেই বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচন করছেন।