বগুড়ায় বিসর্জনের মাধ্যমে দূর্গা পূজার শাস্ত্রীয় সমাপ্তি

অরূপ রতন শীল
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:১৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৫২ বার।

সকালে বিজয়া দশমীতে ‘বিহিত পূজা’ আর ‘দর্পণ বিসর্জনের’ মধ্য দিয়ে শারদীয় দূর্গাপূজার শাস্ত্রীয় সমাপ্তি ঘটে। ভাসানে বিষাদের সুর থাকলেও শেষ বারের মতো বগুড়ার মণ্ডপগুলোতে ঢাক-ঢোল আর কাসরের তালে তালে চলে সিঁদুর উৎসব।

গত ৪ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে পাঁচদিনের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা এবং মহানবমীতে বগুড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার শিশু-যুবা, নারী-পুরুষ চন্ডীপাঠ, মহাপ্রসাদ বিতরণসহ ধর্মীয় নানা আচার অনুষ্ঠান পালন করেন। হিন্দু পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে এ পূজার আয়োজন করায় এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধারে যাত্রার আগে শ্রীরাম চন্দ্র দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবশ্যা তিথিতে। এ জন্যই দেবীর শরৎকালের এ পূজাকে অকাল বোধনও বলা হয়।

বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে মর্তলোকে (পৃথিবী) আসেন। আর দেবী স্বর্গালোকে বিদায়ও নিয়েছেন ঘোটক (ঘোড়ায়) চড়ে। বাঙালি হিন্দু নারীদের জন্য সিঁদুর খেলা অনেকটাই তাৎপর্যপূর্ণ। সিঁদুর তাদের বিবাহিত জীবনের চিহ্ন। তাই বিজয় দশমীর দিন প্রত্যেক হিন্দু নারী সিঁদুর খেলায় লাল রঙ্গে রঙিন হয়ে উঠেন। এই দিনটা তাদের যেমন আনন্দের তেমন দুঃখের। দুর্গা মা তার মায়ের বাড়ি মাত্র পাঁচ দিনের জন্য আসে এবং শেষ দিন সে শ্বশুড় বাড়ি ফিরে যায় তাই মাকে বিদায় জানানো হয় মিষ্টি, সিদুরের মধ্য দিয়ে। এই খেলাটি বিবাহিত নারীদের জন্য একসময়ে সীমাবদ্ধ ছিলো। তবে বর্তমানে এ খেলাটি সবাই মিলে উদযাপন করে থাকে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত উৎসবে মেতে ওঠে।

সিদুুঁর খেলা শেষে বেলা ৩টা থেকেই বগুড়ায় শহরের বিভিন্ন পূজা মন্ডব থেকে দূর্গা প্রতিমাকে ট্রাকে তুলে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভা যাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিকেল ৫টায় করতোয়া নদীর বিভিন্ন ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। প্রতিমা বিসর্জন দেখতে করতোয়া নদীর বিভিন্ন ঘাটে হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুরা ভিড় করে । বগুড়া পৌর উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরিমল প্রসাদ রাজ জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দূর্গা পূজা শেষ হয়েছে। আর এবার পৌর এলাকায় মোট ৭৭টা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।