বগুড়ায় পরকীয়ার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পীরের মাথার চুল কাটলেন আ.লীগ নেতা

শেরপুর(বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২২ ২০:১২ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ১৫৫ বার।

পরকীয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে বগুড়ার শেরপুরে হাফিজুর রহমান (৩৮) নামের এক পীরের মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা রবিউল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে তরিকাপন্থী ওই পীরের নিকটে থাকা নগদ টাকা, একটি অ্যান্ড্রোয়েট মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেইন ও আংটি ছিনিয়ে নেয় তারা। বুধবার (২২জুন) ঘটনাটি ঘটে উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামে।

 

এদিকে ওই ঘটনায় জড়িতরা প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সাহস পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। পাশাপাশি ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়। তাই ঘটনার চব্বিশ ঘন্টা পার হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারেননি তারা।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার বাসিন্দা পীর হাফিজুর রহমান। তার বাবার নাম ডাক্তার আব্দুল হাকিম। বর্তমানে শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের হামছায়াপুর গ্রামের একটি বাড়িতে আস্তানা গড়েন। গত ২১জুন মঙ্গলবার রাতে তার ভাগ্নে হামছায়াপুর গ্রামের বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে নওদাপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার জন্য যান। এরপর সেখানেই রাত্রি যাপন করেন তিনি। কিন্তু পরদিন বুধবার ২২জুন সকালে ওই পীরকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেন শাহবন্দেগী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগী মিস্টার, আনোয়ার হোসেন, আবুল  হোসেন, নয়ন হোসেন ও রায়হান হোসেন। সেইসঙ্গে বাড়ির মালিক সাইফুলের স্ত্রী কোহিনুর বেগমের সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে পীর হাফিজুর রহমানকে মারধর করতে থাকেন তারা। এমনকি সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে রাজী না হওয়ায় পীর হাফিজুর রহমানের মাথার চুল কেটে দেন ওই আ.লীগ নেতা ও তার সহযোগীরা। এসময় তার নিকটে থাকা নগদ ৩৫হাজার টাকা, একটি অ্যান্ড্রোয়েট মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেইন ও আংটি ছিনিয়ে নেয়। পাশাপাশি ওই পীরকে দ্রæত এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে চলে যান তারা।

 

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী পীর হাফিজুর রহমান বলেন, কোহিনুর সম্পর্কে আমার ভাগ্নি। তার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। অথচ ওই গ্রামের কয়েকজন যুবক আমাকে সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন। এমনকি তাদের প্রস্তাবে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে রাজী না হওয়ায় আমার মাথার চুল কেটে দিয়েছে। সেইসঙ্গে আমার নিকটে থাকা নগদ টাকাসহ মালামাল ছিনিয়ে নিয়েছে।

 

এদিকে বক্তব্য জানতে তার ভাগ্নি কোহিনুর বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি তিনি। তবে তাঁর স্বামী স্বামী সাইফুল ইসলাম জানান, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার মামা শশুড়কে মারধর করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তার মাথার চুল কেটে দিয়ে সম্মানহানী করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত বিচার চাই।

 

অভিযুক্ত আ.লীগ নেতা রবিউল ইসলামের বক্তব্য জানতে চাইলে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমরা কোনো ব্যক্তির চুল কেটে দেইনি। পরকীয়ার কারণে কোহিনুর বেগমের স্বামী সাইফুল ইসলাম নিজেই ওই ব্যক্তিকে মারধরসহ তার চুল কেটে দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

 

জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তপূর্বক ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।