বগুড়ায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক

অরুপ রতন শীল
প্রকাশ: ২৬ অগাস্ট ২০২২ ১৮:৩০ ।
বিশেষ
পঠিত হয়েছে ২৫ বার।

উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত বগুড়ার কৃষকেরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে তুলতে পারলেই অধিক টাকা পাওয়া যাবে-এমন ধারণা থেকে কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে কৃষকরা জমিতে হাল চাষ, চারা রোপণ, ক্ষেতে পানি ও ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শিম গাছ, শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, করলা, পটল, পালং ও লালশাকসহ হরেক রকমের শীতকালীন সবজির চারা।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন জেলায় এবারো ভালো সবজির উৎপাদন হবে। আগাম সবজির চাষ হচ্ছে ২ হাজার ৮ ’শ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে ফলন হবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। 

 


সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বগুড়া জেলার শাজাহানপুর, সারিয়াকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জসহ অন্যান্য উপজেলার কৃষকরা আগাম বিভিন্ন জাতের শীতকালীন সবজি চাষে জমি তৈরি, চারা রোপন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা বিভিন্ন পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করছেন। কৃষকরা বলছেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শীতকালীন সবজির উৎপাদন বাড়বে।

 
শাজাহানপুর উপজেলার শাহনগর গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, তিনি এ বছর ৪ বিঘা জমিতে আগাম সবজি চাষ করেছেন। সবজি তুলনামূলকভাবে মূলধনও কম লাগে। সবজি চাষে একটু বেশি পরিচর্যা করতে হয়। রোগবালাই দমনে সবজিতে কীটনাশক বেশি প্রয়োগ করতে হয়। খুব কম সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রায় দিনই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়। পরিবারের চাহিদাও মেটানো সম্ভব হয়। জমিতে সবজি থাকা পর্যন্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে কম-বেশি টাকা থাকে। যা অন্য ফসলের বেলায় সম্ভব নয়। এছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালো। সব মিলিয়ে সবজি চাষকেই এসব কৃষক লাভজনক মনে করছেন।


একই এলাকার সবজি চাষী আলমগী হোসেন জানান, আমি প্রতি বছর বিভিন্ন জাতের আগাম সবজি চাষ করে থাকি। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবছর ৩বিঘা জমিতে সবজি চাষ করছি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর জ্বালানী তেলসহ অন্যান্য জিনিসের দাম অনেক বেশি। যে কারণে সবজি চাষে খরচও আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। তবে আশা করছি এবার ভালো ফলন পাবো। দামও ভালো পাবো।


বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন জানান, এ বছর বগুড়ায় আগামজাতের শীতকালিন সবজি চাষ হয়েছে ২ হাজার ৮’শ হেক্টর জমিতে। যা থেকে আগাম শীতকালীন প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন ফলন পাওয়া যাবে। আগাম শীতকালীন সবজির চাষ আরো বাড়বে। গত বছর ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ করেছিলেন চাষিরা। তা থেকে গত বছর প্রায় ৫৪ হাজার মেট্রিক টন ফলন পাওয়া যায়। বগুড়ায় চাষকৃত সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়ে থাকে।