রাণীনগরে নাজমুলের ফলের বাগানে সফলতার সুভাস ছড়াচ্ছে!

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) 
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:২৭ ।
প্রতিবেশী জেলা
পঠিত হয়েছে ১৪ বার।

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার রঞ্জরিয়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হক নাইস (২৯) গত সাত বছর আগে ডিগ্রিতে পড়ালেখা চলাকালে মাত্র ১৬ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান গড়ে তুলেছিলেন। শুরুতেই পরিবারের বাধা ও চরম অবহেলা উপেক্ষা করে ফলবাগান শুরু করা সাত বছরের ব্যবধানে এখন পেীঁছেছে ৩০ বিঘায়। বাগানে ডালে ডালে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা ড্রাগন,মালটা, কমলা, চায়না কমলা ও কদবেল যেন সফলতার সুভাস ছড়াচ্ছে। তার সফলতা দেখে এগিয়ে এসেছে পরিবার ও আত্নীয়-স্বজনরা।


 নাজমুল হক রাইস জানান, এইচএসসি পাশ করার পর তিনি ঢাকায় গিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনে ভর্তি হয়েছিলেন। সেসময় মাত্র তিন মাস পড়ালেখার পর স্থির করেন কোন চাকরি করবেন না। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে নওগাঁ ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন। পড়ালেখা চলাকালেই সৎ পথে দীর্ঘ মেয়াদী আয়ের জন্য ফলের বাগান গড়ে তোলার চিন্তা মাথায় আসে তার । পরে দেশের বিভিন্ন এলাকার ফলের বাগান ঘুরে দেখে কিছুটা অভিক্ষতা অর্জন করেন। এরপর বাড়িত এসে মাত্র ১৬ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান শুরু করেন। সেমময় পরিবার তথা আত্নীয়-স্বজনরা বাঁধা দিলেও পিছপা না হয়ে বাগানের পিছনে শ্রম দিতে থাকেন। একদিকে, কলেজে পড়ালেখা আরেক দিকে বাগানে পরিচর্যা করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত বাগান থেকে ভাল ফলন আসা শুরু করলে সহযোগিতা করতে ঘুরে দাঁড়ায় পানবারের লোকজন।ফলে ওই বছরই আরো চার বিঘা জমিতে গড়ে তোলেন পেয়ারার বাগান, কিন্তু বন্যার পানি এসে গাছের গোড়া ডুবে যাওয়ায় ভাল ফল হয়নি। ফলে পেয়ারার গাছ কেটে সেখানে কমলা, এবং ড্রাগন ফল চাষের পরিধি বিস্তার করেন। 


নাজমুল হক বলছেন, ডিগ্রি পাশ করার পর পুরোপুরি বাগানের প্রতি ঝুকে পরেন। ধীরে ধীরে গড়ে তোলা ফল বাগান গত সাত বছরের ব্যবধানে এখন ৩০ বিঘা অতিক্রম করেছে।এর মধ্যে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফল আরো ১৫ বিঘা জমিতে মাল্টা,কমলা, চায়না কমলা ও কদবেল রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ জমি নিজ নিয়ে বাগান গড়ে তুলেছেন। ইতিমধ্যে বাগানে প্রতিটি গাছের ডালে ডালে থোকায় থোকায় ফলগুলো ঝুলছে। রাণীনগর- আবাদপুকুর সড়কের সংলগ্ন রঞ্জুনিয়ার মোড় এলাকা স্থানে গড়ে তোলা বাগান দেখতে লোকজন প্রতিনিয়ত ছুটে আসে। অনেকেই নাইসের নিকট থেকে বাগান করার অভিক্ষতা নিচ্ছেন। আবার কেই মনের প্রশান্তির জন্য বাগান ঘুরে দেখছেন। তিনি বলেন, জায়গা নির্বাচন, ভাল জাতের গাছ এবং সুষ্ঠু পরিচর্যা করলে সফল হওয়া সম্ভব।


 নাজমুল জানান, পড়ালেখা করে চাকরির পিছনে না ছুটে নিজে উদ্যোক্তা হতে হবে। এতে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, অন্যদিকে সৎ পথে রোজগার আসবে। তাই শিক্ষা অর্জন করে বেকার না থেকে উদ্যোক্তা হবার আহবান জানিয়েছেন তিনি।তার মতে বাগান করার শুরুতেই যে পরিমান খরচ হয়, এরপর আর তেমন খরচ হয় না। শুধু পরিচর্যা করলেই দীর্ঘ মেয়াদী সময় ধরে সুফল ভোগ করা যাবে। স্থানীয় কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শ নিয়ে গড়ে তোলা বাগান এখন চাকরির চাইতে অধিক লাভজনক হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।


রানীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, নাজমুলের ফলের বাগান তৈরিতে আমরা সার্বিকভাবে তাকে সহযোগিতা করেছি। গাছের ভাল চারা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সহযোগিতার কোন কমতি নেই।

 

নাজমুল এলাকার একজন সফল উদ্যোক্তা শিক্ষিত যুবক জানিয়ে তিনি বলেন, একজন শিক্ষিত যুবকরা বাগান গড়ে তুললে একদিকে যেমন বেকারত্ব ঘুচবে অন্যদিকে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।