বগুড়ায় শিল্পীর তুলির টানে ফুটে উঠছে দেবী দুর্গার রূপ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৫৬ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ৫২ বার।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজা। প্রকৃতিতে শরৎ আসার সঙ্গে সঙ্গেই বাঙালির জীবনে বেজে উঠে উৎসবের ডাক। রোববার ( ২৫ সেপ্টেম্বর) মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দেবীপক্ষ। যার মাধ্যমে বাঙালির আবহমানকালের উৎসবের আমেজ রুপ নিতে শুরু করবে। সারা দেশের মতো বগুড়াতেও চলছে দেবী দূর্গার আগমনী প্রস্তুতি। ঢাক-ঢোল, শংখ ধ্বনি আর উলুধ্বনি দিয়ে দেবী দুর্গাকে বরণ করে নেয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভক্তরা। আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ দূর্গোৎসব । পূজা মণ্ডপে ভক্ত এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় থাকছে পুলিশের কঠোর নজরদারি।

 

এ দিকে দূর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ রুপ দিতে প্রতিমা সাজিয়ে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার মৃৎশিল্পীরা। শেষ সময়ে রং-তুলি দিয়ে প্রতিমা সাজাতে ভীষণ ব্যস্ত তারা। দম ফেলারও ফুসরৎ নেই। কাদা মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলোতে মনের মাধুরী মিশিয়ে নিপুণ হাতে এঁকে দিচ্ছেন রঙের ছোঁয়া। মৃৎশিল্পীদের হাতের  জাদুতে রঙ-তুলিতে ফুটে উঠছে প্রতিমার সৌন্দর্য। বগুড়ার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। মৃৎশিল্পীদের পাশাপাশি ডেকোরেটর মিস্ত্রিরাও পূজা মণ্ডপের গেইট, প্যাণ্ডেল ও লাইটিংয়ের কাজে ভীষণ ব্যস্ত। 

 

বগুড়া দত্তবাড়ি মন্দিরে কাজ করছেন ফরিদপুরের প্রতিমা শিল্পী জগা পাল। তিনি জানান, তার বাবার কাছেই প্রতিমা তৈরীর কাজ শেখা। সেই থেকে গত ৩৫ বছর ধরে এই মন্দিরে প্রতিমা বানানোর কাজ করছেন তিনি। 

তিনি বলেন,   'মায়ের কাজ করতে খুব ভালো লাগে। এখানে টাকা- পয়সার হিসেব মূখ্য না। মায়ের রুপ অন্তরে ধারণ করে কাজ করি। পূজার এ সময়টাতে হাজার পরিশ্রমেও ক্লান্তি নেই।' 

 

এ বছর বগুড়ায় ১২টি উপজেলায়  ৬৭৯ মণ্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৫০টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ২৪০টি গুরুত্বপূর্ণ ও ২৮৯টি সাধারণ।  শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে পুলিশের পক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আগামি পহেলা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সে হিসেবে ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এবাবের দুর্গোৎসব। এবছর দেবী দুর্গা আসছেন গজে (হাতি) চড়ে যাবেন নৌকায় চড়ে। 

 

বগুড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তরুন কুমার চক্রবর্তী জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে তার ওয়ার্ডে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে নিরাপত্তা জোরদার করতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবীরাও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। 

 

বগুড়া পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, 'পৌর এলাকায় এবার ৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা সুষ্ঠু ও নিরাপদে পালন করতে পৌর কমিটির পক্ষ থেকে মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।'

 

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, 'দূর্গাপূজায় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে বগুড়ায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ মন্দিরের তালিকা করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পূজা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে পালন করতে মাঠে সবাই মিলে একত্রে কাজ করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।