বইমেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
রাজধানীর বাংলা একাডেমি এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান তিনি। ৪টায় তিনি এ মেলোর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাতির পিতার আরেক কন্যা শেখ রেহানা।
বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে এবং রূপা চক্রবর্তী ও শাহাদাত হোসেন নিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নুরুল হুদা।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও ভাষাপ্রেমী-বইপ্রেমীরা উপস্থিত রয়েছেন।
এবার বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি ইউনিট অর্থাৎ মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় থাকবে ৩৮টি প্যাভিলিয়ন।
তবে গতবারের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের স্থানটিকেও এবারের মেলার একটি অংশ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেখানে নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে। খাবারের স্টলগুলোকে এবার এমনভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে, যেন এলোমেলোভাবে খাবারের স্টল বইমেলায় আগত পাঠকের মনোযোগ বিঘ্নিত না করে।
এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্রন্থ উন্মোচন অংশের কাছাকাছি। সেখানে ১৫৩টিসহ ৫টি স্থানে লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শিশুচত্বরটির পরিধি কম হওয়ায় এবার এই চত্বরটি মন্দির-গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে। যেন শিশুরা অবাধে বিচরণ করতে পারে এবং তাদের কাঙ্ক্ষিত বই সহজে সংগ্রহ করতে পারে। প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় বেলা ১১টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকছে।
বইমেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, মাতৃভাষা আঁকড়ে ধরার সংগ্রামের রক্তঝরা স্মৃতির প্রতি সম্মানে, এই অমর একুশের বইমেলা। যেখানে বাঙালির নিজ ভাষায় রচিত বইয়ে উঠে আসে, বাংলার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য।