বগুড়ায় রোহান হত্যার বিচারের দাবিতে সড়কে লাশ নিয়ে এলাকাবাসীর মিছিল
স্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ায় রোহান হত্যার বিচার দাবিতে নিহতের লাশ নিয়ে সড়কে মিছিল করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার মানিকচক এলাকায় ২য় বাইপাস সড়কে দুই দফা এ মিছিল করেন তারা। মিছিলে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেয়।
এসময় মিছিলে অংশ নেয়া এলাকাবাসী রোহান হত্যায় জড়িত সাবেক ইউপি সদস্য গিয়াস ও তার লোকজনের ফাঁসির দাবি জানান৷
এর আগে, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জয়বাংলা হাট থেকে রোহানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রোহান বগুড়া সদরের মানিকচক গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে।
ব্যবসায়িক লেনদেনকে কেন্দ্র করে শাওন ও তার বাহিনীর লোকজন গত ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে জয়বাংলা হাটবন্দর কমিটির সভাপতি ও বগুড়া সদরের কুটুরবাড়ি দক্ষিণপাড়ার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মুরগি ব্যবসায়ী সেলিম মিয়াকে কুটুরবাড়ি মধ্যপাড়ায় পথরোধ করেন। এর পর হত্যার উদ্দেশ্যে চাইনিজ কুড়াল ও চাকু দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়।
রক্তাক্ত সেলিমকে অচেতন অবস্থায় প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। এ ঘটনায় তার বাবা গিয়াস উদ্দিন গত ২৩ সেপ্টেম্বর সদর থানায় বিভিন্ন ধারায় মামলা করেন।
বগুড়া র্যাব-১২ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ভোরে শাওনকে গ্রেপ্তার করে। ওই মামলায় সকাল ১০টার দিকে রোহান ও আহত সেলিম বগুড়া চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যান।
নিহত রোহানের চাচা ফারুক চৌধুরী বলেন, শাওনকে গ্রেপ্তারের পর রোহান ও সেলিম আদালতে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। বুধবার সকালে ইজিবাইক থেকে আদালতের সামনে নামার পরই গিয়াস উদ্দিন ও তার বড় ছেলে মিঠুনসহ দুইজন দুর্বৃত্ত তাদের ঘিরে ফেলেন। তারা জোরপূর্বক তাদের একটি সিএনজিতে উঠিয়ে অপহরণ করে রাজাপুর ইউনিয়নে নিয়ে যান। সেখানে মন্ডলধরন গ্রামের পূর্বপাড়া কাজলের বাগানে নিয়ে দড়ি দিয়ে রোহান ও সেলিমকে হাত বেঁধে ফেলা হয়। এরপর গিয়াসসহ তার দুই ছেলে মিঠুন ও সাগর হাতুড়ি দিয়ে আমাদের এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন। তাদের সঙ্গে থাকা ৫ থেকে ৭ জন দুর্বৃত্ত লাঠিসোটা, রড ও এসএস পাইপ দিয়ে প্রায় একঘণ্টা তাদের বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে রোহান জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাদের আবারও সিএনজিতে উঠিয়ে জয়বাংলা হাটে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে রোহানকে মৃত ও সেলিমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
এদিকে, বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) শাহীনুজ্জামান জানান, নিহত রোহানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।