নোবেলের কাছে স্ত্রী, লাইভে হাউমাউ করে কাঁদলেন স্বামী

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১২:২৮ ।
বিনোদন
পঠিত হয়েছে ১৫ বার।

স্ত্রী আরশিকে নিয়ে ভালোই চলছিল নাদিমের দাম্পত্য জীবন। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন। স্ত্রী আরশিকে গায়ক নোবেলের ফেসবুক ওয়ালে দেখে দিশেহারা খুলনার ফুড ব্লগার নাদিম। প্রথমে ওয়ালে একের পর এক অন্তরঙ্গ ছবি, এর ভেসে আসে ‘গট ম্যারেড’। কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না নাদিম।

বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেন নাদিম। এ সময় তাকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়।

নাদিম বলেন, আমি আমার স্ত্রীর প্রতারণার শিকার হয়েছি। তবুও চেষ্টা করছি তাকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনার। এত বছর সে আমার সঙ্গে, আমি কখনো কল্পনাও করিনি আমার স্ত্রী এমন কিছু করবে। আমি কিছুই জানতাম না। আমার স্ত্রী আমাকে নিয়ে পোস্ট দিচ্ছে, স্টোরি দিচ্ছে, সবকিছুই ভালোই যাচ্ছিল। সুতরাং এমন কিছু ঘটছে সেই সন্দেহ করারও সুযোগ ছিল না। হঠাৎ করেই একদিন দেখলাম গায়ক নোবেল একটা প্রোফাইল পিকচার দিয়েছে। যেখানে তার সঙ্গে আমার স্ত্রী। আমি কোনোভাবেই এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মেনে নিতে পারছিলাম না।

কান্না জর্জরিত কণ্ঠে নাদিম বলেন, এরপর হঠাৎ করেই দেখি নোবেলের আইডিতে আরশিকে বিয়ের দাবি করা একটি পোস্ট। এটা আমার জন্য মেনে নেওয়ার মতো ছিল না। আমি নোবেলের বাড়িতে পুলিশ নিয়ে যাই। এসময় আরশির বাবা-ভাই আমার সাথে উপস্থিত ছিল। সেখানে গিয়ে দেখি তারা দু’জনেই নেশায় আসক্ত হয়ে আছেন। তবুও চেষ্টা করেছি আমার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার। কিন্তু পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে আরশি জানান, সে আমার কাছে ফিরতে চান না।

তিনি আরও বলেন, সবাই জানেন আমি সবসময় আরশিকে উপরে ওঠানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু আজকে আমি হেরে গেছি। যার যায় শুধু সে-ই বোঝে। আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত আনার জন্য শেষ চেষ্টাও করেছি। হয়তো অন্য কোনো ছেলে থাকলে সেটাও করতো না। কিন্তু আমি করেছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন এই সবকিছু দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারি।

এর আগে গত সোমবার একাধিক বিতর্কিত ঘটনায় আলোচিত সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল ফারজান আরশি নামের এক তরুণীকে বিয়ের দাবি করেছেন। যদিও কবে বিয়ে করেছেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।

এদিকে, আরশি ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে নোবেলের বিরুদ্ধে তাকে জোর করে মাদক সেবন করানোর অভিযোগ এনে বলেন, নোবেল জোর করে নেশা করিয়ে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলা তোলে। নোবেলের সঙ্গে তার কোনোপ্রকার বিয়ে হয়নি এবং কোনো সম্পর্কও নেই। এ বিষয়ে ডেমরা থানায় জিডিও করেছেন তিনি।

স্ট্যাটাসে তিনি আরও বলেন, আমি এখন এমন একটা পরিস্থিতিতে আছি যে আমার সবকিছু স্বাভাবিক নেই। আমি মানসিকভাবে অনেক ভেঙে পড়েছি তারপরও আপনাদের সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করছি সবকিছু ক্লিয়ার করার জন্য। আমি খুলনায় বিভিন্ন ব্লগ করে থাকি, সেজন্য একটি ভিডিও কন্টেন্ট বানানোর উদ্দেশ্যে নোবেলের বাড়ি গোপালগঞ্জ যাই। আমার সঙ্গে আমার এক বান্ধবী ও ছিলো। ওখানে যাওয়ার পর পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যায়। নোবেল তার মায়ের সামনেই আমার গলায় ছুরি ধরে এবং আমার ফোনটি কেড়ে নেয় এবং জোর করে আমাকে ঢাকায় তার বাসায় নিয়ে যায়। আমাকে বিভিন্ন ড্রাগ জোড় ধরে সেবন করায় এবং মারধর করে। আমি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে ডেমরা থানায় আমাকে দিয়ে ভয় দেখিয়ে একটা জিডি করায়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে আমার বাবা এবং কাজিন উদ্ধার করতে গেলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি নোবেলের কথা মত ভয়ে পুলিশকেও মিথ্যে বলি তখন আমার শরীরে ড্রাগ পুশ করাছিলো। পরে গোপালগঞ্জ থেকে আমার পরিবার আমাকে উদ্ধার করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি প্রসঙ্গে ফারজান বলেন, নোবেল জোর করে নেশা করিয়ে আমাকে দিয়ে উক্ত ছবিগুলা তুলেছে। নোবেলের সাথে আমার কোনপ্রকার বিয়ে হয়নি এবং কোন সম্পর্ক ও নেই। আমি পরিবেশ এবং পরিস্থিতির স্বীকার।

সব শেষে তিনি বলেন, আমি এবং আমার পরিবার খুব ভয়ভীতির মধ্যে আছি। আমি কর্তৃপক্ষের সাথে সহযোগিতা চাচ্ছি। আমি একটি মেয়ে আমি আমার পরিবার নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চাই।

জিডির বিষয়ে ঢাকা মহানগর ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাশ গণমাধ্যমে বলেন, বেশ ক’দিন আগে ফারজান আরশি থানায় এসে মৌখিভাবে জানান তার মেয়েকে গায়ক নোবেল জোর করে তুলে এনেছেন। তবে তিনি লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। পরে ফারজান আরশি এসে জানান, তার বয়স ২২ বছর তাকে নোবেল জোর করে তুলে আনেনি। তিনি স্বেচ্ছায় নোবেলের সঙ্গে এসেছে। কিন্তু উভয় পক্ষের কেউ আমাদের কাছে লিখিত কিছু জানাননি।

পরে ফারজান আরশির আজকের স্ট্যাটাসে নোবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের সূত্র ধরে কোনো ব্যবস্থা পুলিশ নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে অবশ্যই আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।