নওগাঁয় উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৪৩ ।
প্রতিবেশী জেলা
পঠিত হয়েছে বার।

নওগাঁ উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। লাঠি আর ঢোলের তালে শুরু হয় যুদ্ধ, অন্য দিকে প্রতিপক্ষের হাত থেকে আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বনের প্রচেষ্টার টান টান উত্তেজনা মুখর এ খেলার নাম-ই লাঠি খেলা। লাঠি নিয়ে অদ্ভুত সব কসরত দেখিয়ে উপস্থিত সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন লাঠিয়ালদের সদস্যরা। 

 

শুক্রবার  বিকেল ৫ টার দিকে শহরের মুক্তির মোড়ে বাউল আখড়া বাড়ির ৪র্থ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এ খেলার আয়োজন করা হয়। ঐতিহ্যবাহী এই খেলাটি উপভোগ করে হাজরা মানুষ। 

 

লাঠি খেলা দেখতে আসা ভীমপুর এলাকার বাসিন্দা মুমিন সরদার ( ৩৫)  বলেন,গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া এ খেলাটি এখন আর দেখতেই পাওয়া যায় না।  বিভিন্ন সংগঠন প্রতি বছর এ খেলার আয়োজন করে বলে আমরা যুব সমাজ দেখতে পারি।  গ্রামীন খেলাগুলো টিকিয়ে রাখতে আমাদের সবাইকে চেষ্টা করা উচিৎ। 

 

শহরের পোস্ট অফিস পাড়ার মীম বলেন, আমরা সবাই এখন ভিডিও গেইমের প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছি দিন-দিন তাই,গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো দেখলে অন্যরকম ভালো লাগে। বেড়াতে এসেছিলাম ঢোলের শব্দ শুনে এসে দেখি লাঠি খেলা হচ্ছে। খুব ভালো লাগছে অনেক পুরোনো লাঠি খেলা দেখে।  

 

লাঠি খেলার সদস্য আব্দুস সামাদ,( ৫৫) বলেন, আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন আমার বাবার কাছ থেকে লাঠিখেলা শিখেছি। এক সময় প্রচুর খেলা দেখানোর জন্য দাওয়াত পেতাম এখন আর পাইনা তবে এটা ভেবে ভালো লাগে যে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এখনো লাঠিখেলাকে টিকিয়ে রেখেছেন। 

 

দরিয়াপুর গ্রামের সাহাজ আলী সরদার ( ৬০) বলেন, আমার বয়স অনেক হয়েছে তবুও আকি সুস্থ আছি নিয়মিত লাঠিখেলার কারনে। আমার যারা ওস্তাদ ছিল সবাই মারা গেছে, তাদের শেখানো লাঠিখেলা দেখিয়ে গ্রামের মানুষকে আনন্দ দিয়ে থাকি। একটা সময় ছিল প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে দাওয়াত পেতাম তবে এখন আর আগের সময় নেই সবাই বিভিন্ন ধরনের অন-লাইন গেইম নিয়ে ব্যস্ত। গ্রামীণ খেলাগুলোর মাধ্যমে যুব সমাজ বিভিন্ন ধরনের নেশা থেকে বিরত থাকবে বলে আমি মনে করি। 

 

বাউল আখড়া বাড়ির সভাপতি  সারোয়ার হোসেন  বলেন লাঠিখেলা হলো গ্রামীন ঐতিহ্য, এটি যেন বিলিন না হয়ে যায় সেজন্য আমরা আয়োজন করেছি যাতে মানুষেরা গ্রামীণ সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারে। 

 

তিনি আরো বলেন, মূলত এখানে বাউল গানের আয়োজন করা হয়েছে কিন্তু আমরা গ্রামীণ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে বাদ দিয়ে কিছু করতে পারিনা কারন লাঠিখেলাও আমাদের ঐতিহ্য। আমরা প্রতি বছর লাঠিখেলা  ধরে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।