নওগাঁয় ধানের সাথে এ কেমন শত্রুতা, কাঁদছেন কৃষক সাইদুর
নওগাঁ প্রতিনিধি
ধান ক্ষেতের আইলে বসে কাঁদছেন কৃষক সাইদুর রহমান। তিনি এবার বর্গা নিয়ে প্রায় তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। আর কয়েকদিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলতো ওই কৃষক। কিন্তু বিধিবাম কে, কারা রাতের অন্ধকারে উঠতি ফসলের জমিতে অতিরিক্ত বিষ প্রয়োগ করে আড়াই বিঘা জমির ধান নিধন করার অভিযোগ উঠেছে।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের চন্ডিপুর দীঘিরপাড়ের গরিব কৃষক সাইদুর রহমান এর জমিতে এই ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার সকালে জমিতে গিয়ে দেখেন ধানের শীষ গুলো পুড়ে হলুদ বর্ণ হয়ে গেছে। সর্বশেষ গত তিন দিন আগে তিনি ধানের জমিতে গিয়ে দেখেন ধানে ভরা শীষগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে। দুই-একদিনের মধ্যেই ধানগুলো কাটার প্রস্তুতি নেন তিনি। কিন্তু তার আগেই তিনি এখন সর্বশান্ত। গত বৃহস্পতিবার রাতে কেবা কারা ওই জমিতে অতিমাত্রার কীটনাশকের বিষ প্রয়োগ করলে ধানের জমিগুলো ধীরে ধীরে পুড়ে গেছে।গত তিন দিনে ওই জমির ৮০ থেকে ৯০ ভাগ জমির ধান নিধন করা হয়েছে। অতিমাত্র কীটনাশক প্রয়োগ করে জমির ধান নিধন করায় পরিবার নিয়ে আগামী দিনগুলো কিভাবে চলবে তা নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন সাইদুর।
কৃষক সাইদুর রহমান বিচার চেয়ে ধরনাও দিচ্ছেন বিভিন্ন জনের কাছে। কিন্তু কোথাও বিচার না পেয়ে অবশেষে থানায় মৌখিকভাবে জানিয়েছে। কারও বিরুদ্ধে লিখিত কোন অভিযোগ করতে পারছেন না, কারণ কীটনাশক জাতীয় অতিমাত্রার বিষ প্রয়োগে কাউকে সে দেখিনি।
ভুক্তভোগী সাইদুর রহমান বলেন, আমরা খুব গরীব। কিছু নিজের ও বর্গা হিসাবে মোট ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি পেটের ভাতের আশায়। আর কয়েকদিন পর ধান ঘরে তুলতে পারতাম। কিন্তু আমাদের সেই আশায় পানি ঢেলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কারো সাথে তেমন কোন শত্রুতা নেই। দুএক প্রতিবেশীর সাথে সামান্য মনোমালিন্য রয়েছে। হয়তো তারাই রাতের অন্ধকারে এ জঘন্য কাজ করতে পারে।
তিনি কান্না বিজড়িত কন্ঠে আরো বলেন, গত আমন মৌসুমেও কাটা ধান বাড়ীর গোলাই তুলতে পারিনি। তার আগেই রাতের আধারে দুর্বৃত্তরা ধানের পালাতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, চুরি করলেও তো কারো না কারো কাজে লাগতো ধানগুলো , কিন্তু পুড়িয়ে ফেললে কি কাজে লাগে। এটাতো দেশের সম্পদ নষ্ট করার মত জঘন্যতম একটি কাজ। একই সাথে আমাকে সর্বশান্ত করতে বার বার ধান পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই বলে তিনি দাবী করেন। এই ঘটনায় তিনি থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মাইদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক থানায় এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করেন নাই। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।