রাকাবকে বিকেবি’র সঙ্গে একীভূকরণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪ ১২:২২ ।
দেশের খবর
পঠিত হয়েছে ১৭ বার।

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) কে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে শনিবার সকালে বগুড়ায় মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় সকাল ১০টা থেকে প্রায় আধা ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে রাকাব কর্মচারী সংসদ, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, স্থানীয় হালকা প্রকৌশল খাতের ব্যবসায়ী এবং ব্যাংকের বিপুল সংখ্যক গ্রাহকসহ সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেন।

 


দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল করার অংশ হিসেবে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। এ জন্য গত ৪ মার্চ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবির একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার একটি বৈঠকও করেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের মধ্যে ৭ থেকে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মার্চ বেসরকারি এক্সিম ব্যাংক সংকটে থাকা পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হয়।
এরপর ৩ এপ্রিল সরকারি খাতের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংককে (রাকাব) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে (বিডিবিএল) সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ৮ এপ্রিল সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সমস্যাগ্রস্ত বেসিক ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। সর্বশেষ ঈদের ছুটির আগে ৯ এপ্রিল বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবির সঙ্গে সংকটে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। এরই মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক ইউসিবি’র সঙ্গে একভূত না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 


শনিবার বগুড়ায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, সরকারের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণ নীতির আওতায় ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের তৎকালীন রাজশাহী বিভাগের শাখাগুলো নিয়ে ‘রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)’ গঠন করা হয়। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদে ‘রাকাব আইন’ পাশের মাধ্যমে বিশেষায়িত এই ব্যাংকটির সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা হয়।

 


বক্তারা উত্তরাঞ্চলের কৃষি এবং হালকা প্রকৌশলসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট সেক্টরে রাকাবের ব্যাপক অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কারণে এই অঞ্চলের কৃষক এবং হালকা প্রকৌশলসহ কৃষি খাতের উদ্যোক্তারা দ্রুত ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেন। এতে কৃষক, কৃষি খাতের উদ্যোক্তাসহ সকলেই উপকৃত হচ্ছেন। পাশাপাশি রাকাবও বেশ ভাল মুনাফা করছে।

 


বক্তারা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংককে (বিকেবি) লোকসানী প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে বলেছেন, বিকেবির বিপুল অংকের লোকসান রয়েছে। পাশাপাশি তাদের ব্যাংকিংব ব্যবস্থায়ও আধুনিক নয়। পক্ষান্তরে রাকাব প্রতি বছর মুনাফা করছে এবং এই ব্যাংকের গ্রাহকরা অনলাইন ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিকেবির সঙ্গে একীভূত করা হয় রাকাব দুর্বল হয়ে পড়বে। তাতে এই অঞ্চলের কৃষক এবং কৃষি খাতের উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।মাববন্ধন চলাকালে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক, ভূমিহীন ও বর্গাচাষী আকতার হোসেন, শ্রমিক লীগনেতা রেজাউল করিম ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের স্থানীয় নেতা গোলাম কুদ্দুস।